কলকাতা: নেতাজি ইন্ডোরে পুজো কমিটিগুলির সঙ্গে বৈঠকে এসে কেন্দ্রীয় এজেন্সিকে তীব্র আক্রমণ শানালেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। এদিন তিনি বলেন, 'আমাদের বাড়িতে রোজই অত্যাচার করছে। না জানিয়ে যখন তখন তল্লাশি করা হচ্ছে। একটা ছেলে দুদিন আগে না জানিয়ে এল, তারপরই শুরু করে দিয়েছে। তালা ভেঙে ঢুকে যাচ্ছে', নাম না করে এজেন্সিকে আক্রমণে মমতা।


পাশাপাশি তিনি এই ইস্যুতে গুরুতর অভিযোগ তুলে মমতার প্রশ্ন, 'তুমি যে বাড়িতে বিস্ফোরক রেখে যাচ্ছো না, কে তার গ্যারান্টি দেবে? তুমি যে বন্দুক রেখে যাচ্ছো না, বাক্স ভরে টাকা রেখে যাচ্ছো না, কে দেখবে? আমাদের পরিবারকে বারবার টার্গেট করা হচ্ছে। এখন পিঁপড়ে কামড়ালেও ইডি-সিবিআই পাঠাচ্ছে', কটাক্ষ তৃণমূল সুপ্রিমোর।


প্রসঙ্গত, কয়লাপাচার মামলায় একাধিকবার কেন্দ্রীয় এজেন্সির তলবের মুখে পড়তে হয়েছে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়, তাঁর স্ত্রী রজিরা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং তাঁর শ্যালিকাকেও। প্রথমে দিল্লিতে তলবের ইস্যু নিয়ে কম জলঘোলা হয়নি। পরে আদালতের তরফে প্রশ্ন ওঠে কেন কলকাতার কেন্দ্রীয় এজেন্সির দফতরে ডেকে পাঠানো হচ্ছে না, কেন বারবার দিল্লিতে তলব ? যদিও আদালতের নির্দেশ পরে কলকাতাতেই অভিষেককে তলব করা হয়।


গতবছর দীর্ঘ জিজ্ঞাসাবাদের পর বেরিয়ে এসে সেবার পাল্টা অমিত শাহকেই তোপ দেগেছিলেন অভিষেক। এবং চ্যালেঞ্জ দিয়ে বলেছিলেন তাঁকে দোষী প্রমাণিত করতে পারলে, তিনি নিজেই শাস্তি বেছে নেবেন। যদিও সেখানেই বিষয়টা থেমে থাকেনি। এদিকে এই টানাপোড়েনের মাঝে অভিষেকের বিদেশ ট্যুর নিয়ে চরম কটাক্ষ করে বিরোধীরা। 


তবে আমেরিকায় গিয়ে ইডি-র তদন্তকারী অফিসারদের অযোগ্য বলে কটাক্ষ করেছিলেন তৃণমূল কংগ্রেসের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক। তিনি বলেছিলেন, 'এটা সত্যিই দুর্ভাগ্যের যে ইডি-তে অযোগ্যরা কাজ করছেন'। 'সত্য ক্ষমতাবান এবং জয়ী হবেই। এটা দুর্ভাগ্যের যে, মানুষের করের টাকা খরচ করে এঁরাই বছরের পর বছর তদন্ত চালিয়ে যান, সেইসঙ্গে আদালতে নির্দিষ্ট তথ্যপ্রমাণ পেশ করতেও এঁরা লাগাতার ব্যর্থ। এভাবেই এঁরা দেশের প্রতি কর্তব্য পালনে অবহেলা করে চলেছেন। এটা দেখে আর আশ্চর্য হই না যে, কেন ইডির দোষী সাব্যস্ত করার হার মাত্র দশমিক ৫ শতাংশ। এদের মতো দুর্ভাগাদের জন্য সত্য়িই করুণা হয়।' 


আরও পড়ুন, যাদবপুরকাণ্ডে এবার হস্টেলের রাঁধুনিকে তলব


অপরদিকে, কয়লাপাচারের সঙ্গে দোসর নিয়োগ দুর্নীতিও। ইতিমধ্য়ে নিয়োগ দুর্নীতির মামলায় অভিষেককে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা। ইডি তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ডেকে পাঠালেও হাজিরা দেননি তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক। বরং সেই প্রেক্ষাপটে ইডি-র ইসিআইআর এবং সমন খারিজের জন্য় কলকাতা হাইকোর্টে মামলা করেন তিনি।