কলকাতা: ১৯ এপ্রিল প্রথম দফায় ভোট রয়েছে কোচবিহার, আলিপুরদুয়ার, জলপাইগুড়ি, উত্তরবঙ্গের এই ৩ জেলায়। জলপাইগুড়ি দিয়ে বিজেপি প্রার্থীর সমর্থনে ভোট-প্রচার শুরু করেছেন মিঠুন চক্রবর্তী। আজ নিশীথ প্রামাণিকের সমর্থনে কোচবিহারে তাঁর জোড়া কর্মসূচি রয়েছে। এদিকে, মিঠুনের বিরুদ্ধে 'গদ্দার' এর অভিযোগ আনলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
এদিন, প্রচার সভা থেকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, 'জিজ্ঞাসা করুন বিজেপিবাবুদের, ভোটের সময় এই মিঠুন চক্রবর্তীকে আমি রাজ্যসভার সাংসদ করেছিলাম। কিন্তু আমি জানতাম না, ও বাংলার আরেকজন বড় গদ্দার। RSS অফিসে গিয়ে মাথা নিচু করে দিয়ে এসেছিল। শুধু নিজের ছেলেকে বাঁচানোর জন্য।'
এক সময়ের সহকর্মী, পাঠিয়েছিলেন রাজ্যসভায় এবার নজিরবিহীনভাবে, সেই বিজেপি নেতা মিঠুন চক্রবর্তীকেই 'গদ্দার' বলে নিশানা করলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। পাল্টা জবাব দিয়েছেন মিঠুনও। তিনি বলেন, 'যা ইচ্ছে বলতে বলুন, কিছু ফারাক পড়ে না। এটা জনগণ সিদ্ধান্ত নেবে।'
অথচ এক দশক আগেও, যখন এই অভিনেতাকে রাজ্যসভায় পাঠিয়েছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, তখন প্রায়শই একে-অন্যের প্রশংসায় ভরিয়ে দিতেন দু-জন। তৃণমূলের প্রতিনিধি হিসেবে ২০১৪ থেকে ২০১৬ পর্যন্ত রাজ্যসভার সাংসদ ছিলেন মিঠুন চক্রবর্তী। সারদা কেলেঙ্কারিতে নাম জড়ানোর ফলে রাজ্যসভার পদ ছেড়েছিলেন তিনি। তারপর দীর্ঘদিন সেভাবে রাজনীতির ময়দানে সক্রিয়ভাবে দেখা যায়নি তারকা অভিনেতাকে।
এরই মধ্যে মিঠুন পুত্র মিমোর বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ ওঠে। যে মামলায় ২০১৮-র জুলাই মাসে, তাঁর বিয়ের আসরে পৌঁছে গিয়েছিল পুলিশ। এরপর ২০২১-এ যখন বাংলায় তাঁর ভোটে দাঁড়ানো নিয়ে জল্পনা তুঙ্গে, তখন ওই বছর ১৫ ফেব্রুয়ারি গভীর রাতে মুম্বইয়ের মাড আইল্যান্ডে, মিঠুন চক্রবর্তীর বাংলোয় গিয়েছিলেন সঙ্ঘ প্রধান মোহন ভাগবত। এর এক মাসের মধ্যেই ব্রিগেডে বিজেপিতে যোগ দেন মিঠুন।
এদিন সেই প্রসঙ্গ টেনেই বিজেপির তারকা নেতাকে তীব্র আক্রমণ করলেন তৃণমূল নেত্রী। যদিও এসবে গুরুত্ব দিতে চাননি মিঠুন।
কিন্তু, বৃহস্পতিবার মিঠুন যখন শিলিগুড়িতে বিজেপি প্রার্থীর সমর্থনে রোড শো করছেন, তখন পাশের জেলা উত্তর দিনাজপুরের ইসলামপুরে, তৃণমূল প্রার্থীর সমর্থনে সভামঞ্চ থেকে মিঠুনকে আক্রমণ শানালেন তৃণমূল নেত্রী।
তখন পাশের জেলা উত্তর দিনাজপুরের ইসলামপুরে, তৃণমূল প্রার্থীর সমর্থনে সভামঞ্চ থেকে মিঠুনকে আক্রমণ শানালেন তৃণমূল নেত্রী। এদিন মমতা বলেন, 'আপনাদের মনে পড়ে, আপনাদের মনে পড়ে ওঁর ছেলেকে ধরেছিল। বিয়ের পিড়িতে গিয়ে হানা দিয়েছিল। সেই ভয়ে রাতারাতি গদ্দার চলে গেল, মুম্বইতে RSS-এর অফিসে, আর গিয়ে বলছে আমি BJP-র সেবক আছি। যারা দোআঁশলা, যাদের কোনও আদর্শ নেই, জীবনে যারা, জীবন-যুদ্ধে লড়তে ভয় পায়, তাদের আমি মানুষ বলে মনে করি না। যারা জীবন-যুদ্ধে লড়তে পারে, আমি তাদের মানুষ বলে মনে করি'।