কলকাতা: নেতাজি ইন্ডোর থেকে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহকে তীব্র আক্রমণ মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায়ের। শাহকে 'কালিদাস' কটাক্ষ করলেন মমতা। কেন্দ্রীয় এজেন্সিগুলিকে নিয়ে শাহ কী করছেন প্রশ্ন তুলেছেন তিনি। শাহ দেশের সবচেয়ে ক্ষতি করেছেন বলে দাবি করেছেন। ওয়াকফ বিরোধী বিক্ষোভ নিয়ে মন্তব্য করতে গিয়ে শাহকে নিশানা করেন মমতা। তাঁকে পাল্টা একহাত নিয়েছে বিজেপি। (Mamata Banerjee Attacks Amit Shah)


ওয়াকফ বিরোধী বিক্ষোভের জেরে গত কয়েক দিন ধরে অশান্ত মুর্শিদাবাদ। পরিকল্পনা করে সেখানে অশান্তি ছড়ানো হয়েছে বলে বুধবার নেতাজি ইন্ডোরের সমাবেশে দাবি করেন মমতা। আর সেখান থেকেই সরাসরি শাহকে আক্রমণ করেন মমতা। তিনি বলেন, "আগে কখনও নাম নিইনি। কিন্তু স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী যদি কালিদাসের মতো আচরণ করেন, যে গাছে বসে আছেন, সেই গাছের ডাল যদি ভাঙেন, তাহলে তো বলতে হবেই! কিছু করার নেই। এত তাড়াহুড়ো (ওয়াকফ আইন নিয়ে) কেন আপনার? আপনি তো কখনও প্রধানমন্ত্রী হবেন না! মোদিজি চলে যাওয়ার পর কী করবেন? আপনাকে তো হামাগুড়ি দিতে হবে? সবচেয়ে দেশের ক্ষতি করেছেন আপনি। মোদিজিকে অনুরোধ করব, দয়া করে লোকটাকে কন্ট্রোল করুন। সমস্ত এজেন্সি ওঁর হাতে দিয়ে দিয়েছেন। আর উনি সব পরিকল্পনা করছেন।" (Kolkata News)


মমতা আরও বলেন, "মুর্শিদাবাদ জেলা হলেও আসনটা কিন্তু মালদার মধ্যে পড়ে। গোটাটা পূর্ব পরিকল্পিত সাম্প্রদায়িক হিংসা। আমিও কিন্তু অনেক তথ্য পাচ্ছি মাুষের কাছ থেকে।" যদিও এ নিয়ে মমতাকে পাল্টা আক্রমণ করেন বিজেপি-র রাজ্যসভার সাংসদ শমীক ভট্টাচার্য। তিনি বলেন, "কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর স্বাভাবিক নেতৃত্বকে উনি মেনে নিচ্ছেন। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী যে একজন যোগ্য ব্যক্তি এবং তাঁর আচরণে যে সামগ্রিক লুঠে নেতৃত্ব দেওয়া তৃণমূল ভীত-সন্ত্রস্ত, আজ মুখ্যমন্ত্রীর কণ্ঠে তা প্রতিধ্বনিত হয়ে গেল।" মুর্শিদাবাদ প্রসঙ্গে শমীক বলেন, "মুষ্টিমেয় ধর্মান্ধ, মৌলবাদীরা পরিকল্পিত ভাবে হিন্দুদের উপর আক্রমণ করেছে, ঘরে আগুন ধরিয়েছে, মহিলাদের সম্ভ্রমহানির চেষ্টা করেছে। যাঁদের নিয়ে মঞ্চে শান্তির বার্তা দিলেন, তা শান্তির নয়, বিভাজনের বার্তা। ওয়াকফ ফের সংশোধন হবে বলে ঘোষণা করে দিলেন! আজ এর কি প্রয়োজন ছিল?"


এদিন কংগ্রেসকেও নিশানা করেন মমতা। তিনি বলেন, "কিছু অশান্তি হয়েছে, প্ররোচনামূলক কথাও হয়েছে। মুর্শিদাবাদ নয় ওটা মালদা আসন। কংগ্রেসের জেতা আসন ওটা। জেতবার সময় জিতবে আর দাঙ্গা হলে রাস্তায় বেরোবে না, নিয়ন্ত্রণ করবে না। এটা আমি আশা করিনি। তৃণমূল করলে দলের বিধায়কদের বাড়িতে আক্রমণ হতো না, দলের কার্যালয় ভাঙা হতো না! আমি উস্কানিমূলক বক্তৃতা করতে আসিনি। আমি শান্তি চাই।"


এতে অধীররঞ্জন চৌধুরী বলেন, "আপনার বিধায়কদের বাড়িঘর ভাঙছে, আর আপনি কলকাতায় ইমাম-মোয়াজ্জমদের সামনে বক্তৃতা করছেন। প্রশাসন আপনার, পুলিশ আপনার, সরকার আপনার, আপনি বিএসএফ ডাকছেন। এর চেয়ে হাস্যকর আর কী হতে পারে! কংগ্রেসের বিধাক ওখানে নেই। কংগ্রেস হারুক বা জিতুক, দল মানুষের সামনে দাঁড়ানোর চেষ্টা করে। দলের লোকই তৃণমূলের বিধায়কের বাড়ির ভাঙচুর করেছে। সবাই জানে।" জঙ্গিপুর, সামশেরগঞ্জে কেন আসছেন না মমতা, প্রশ্ন তোলেন অধীর।