কলকাতা: রাজ্যে একের পর এক ঘটনায় পুলিশের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন শাসকদলেরই নেতা-মন্ত্রীরা। এবার খোদ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় পুলিশের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ তুললেন। তাঁর দাবি, পুলিশের একাংশ এবং সিআইএসএফ দুর্নীতির সঙ্গে যুক্ত। তারা টাকা খায়, আর দোষ হয় তৃণমূল নেতাদের। পুলিশকর্মীদের বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ পেলে যাকে কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হয়, তার জন্য রাজ্য পুলিশের ডিজি রাজীব কুমারকে নির্দেশও দেন মমতা। (Mamata Banerjee)
এদিন মূল্যবৃদ্ধি নিয়ে নবান্নের সভাঘরে প্রশাসনিক বৈঠক করেন মমতা। সেই বৈঠক সরাসরি সম্প্রচারিতও হয়। আর সেখানেই পুলিশের ভূমিকা নিয়ে সরব হন মমতা। বাজারে শাক-সবজির দাম যেভাবে বেড়ে চলেছে, বালিখাদান, পাথরখাদান, কয়লাখনি নিয়ে দুর্নীতির অভিযোগ উঠছে, তাতে পুলিশের একাংশও জড়িত বলে দাবি করেন মমতা। (Nabanna News)
তিনি নির্দেশ দেওয়ার পরও সীমানা পেরিয়ে অন্য রাজ্যে আলু-পেঁয়াজ পাচার চলে যাচ্ছে, আর রাজ্যের মানুষ চড়া দামে শাক-সবজি কিনতে বাধ্য হচ্ছেন বলে অভিযোগ করেন মমতা। পাশাপাশি, কয়লাখনি, বালিখাদান, পাথরখাদান নিয়ে তিনি টেন্ডার ডাকার কথা বললে, বাস্তকে তা হচ্ছে না বলে দাবি করেন। স্থানীয় পুলিশ, এমনকি সিআইএসএফ, এই দুর্নীতির সঙ্গে জড়িত বলে অভিযোগ করেন তিনি।
ডিজি রাজীব কুমারের উদ্দেশে এদিন মমতা বলেন, "কিছু বিষয়ে এখনই পদক্ষেপ কর। তুমি হয়ত চেষ্টা করছো, কিন্তু লোকাল পুলিশ করছে না। রাজীনীতিকদের বেশি বদনাম হয়। ৫ টাকা খেলে ৫০০ বলা হয়, চোর বলা হয়। রাজনীতিকরা কিন্তু টাকা খাওয়ার আগে দশ বার ভাবেন, তাঁদের দায়বদ্ধতা রয়েছে। কিন্তু কিছু নীচু স্তরের অফিসার, কর্মী, যাঁরা এই সরকারকে ভালবাসেন না... তোমার পুলিশের কিছু লোকও টাকা খাচ্ছে।"
মমতা আরও বলেন, "সিআইএসএফ টাকা খেলেও, আমাদের ধরার অধিকার আছে। কারণ চুরি হলে বলবে তৃণমূল করছে। চুরি করে সিআইএসএফ, পুলিশের একাংশ। এটা আমি সহ্য করব না। আমার এক পয়সাও দরকার নেই। বার বার বলি, দলের নির্বাচনের জন্য দরকারে লোকের সামনে আঁচল পেতে টাকা নেব। বলতে পারবে না, আজ পর্যন্ত সরকারি কাজে বা কারও থেকে এক পয়সাও কোনও কারণে নিয়েছি। তাহলে অন্য কেউ নিলে কেন ছাড়বে? সকলের জন্য একই আইন, সমান ভাবে প্রযোজ্য।"
চুরি, দুর্নীতি রুখতে রাজ্য পুলিশের STF এবং দুর্নীতি দমন শাখার হাত হাত মজবুত করতে হবে বলে জানান মমতা। রাজ্যে পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগ CID-কেও ঢেলে সাজানো হবে বলে জানালেন। ডিজি-র উদ্দেশে বলেন, "কারও বিরুদ্ধে অভিযোগ থাকলে, যাচাই করে দেখো। অভিযোগ সত্য হলে কড়া পদক্ষেপ করতে পারো। কেউ বাধা দেবে না, দিলে শুনবও না আমি। আমি যদি আমাকে ক্ষমা করতে না পারি, তোমরা কাকে ভয় পাচ্ছো?" শুধু বক্তৃতা করলে হবে না, প্রশাসনকে কাজে করে দেখাতেও হবে বলে এদিন মন্তব্য করেন মমতা।