কলকাতা : 'আমি বিজেপির অনুষ্ঠানে কী করে যাব ? আমি তো একটা পার্টি করি। আমার তো একটা মতাদর্শ আছে।" গতকাল ব্রিগেডে গীতাপাঠের অনুষ্ঠানে অনুপস্থিতি নিয়ে এমনই মন্তব্য করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বলেন, "বিজেপির অনুষ্ঠানে আমি যাব কী করে ? আপনারা আমাকে বলুন, এটা যদি নিরপেক্ষ অনুষ্ঠান হত আমি নিশ্চয়ই যেতাম। কিন্তু, আমি বিজেপির অনুষ্ঠানে কী করে যাব ? আমি তো একটা পার্টি করি। আমার তো একটা মতাদর্শ আছে। আমি সব ধর্মকে সম্মান করি। আমি সব বর্ণ, সব জাতিকে সম্মান করি। কিন্তু, যেখানে বিজেপি সরাসরি যুক্ত সেখানে আমি যাব কী করে বলুন তো ! যারা বলছে আমরা নেতাজিকে ঘৃণা করি, গান্ধীজিকে মানি না, আমি সেখানে যেতে পারব না। আমার বাবা-মা এই শিক্ষা আমায় দেননি। আমার বাংলার মাটি এই শিক্ষা দেয়নি। আমাদের শিক্ষকরা এই শিক্ষা দেননি। বাংলাকে যারা অপমান-অসম্মান করে, যারা বাংলা-বিরোধী তাদের সঙ্গে আমি নেই।" পাল্টা জবাব দেন বিজেপি সাংসদ সুকান্ত মজুমদার। তিনি বলেন, "গোটা মাঠে কোথাও বিজেপির পতাকা দেখেছেন ? আমরা হিন্দু হিসাবে ওখানে যোগদান করেছিলাম। হ্যাঁ, আমাদের আর একটা পরিচয় আছে যে, আমরা রাজনৈতিক নেতা। ওখানে অনেক ডাক্তার-শিক্ষক ছিলেন। তাঁরা রাজনৈতিক নেতা নন। তাঁরা হিন্দু হিসাবে এসেছিলেন। অনেক ইউটিউবার-সাংবাদিক ছিলেন। তাঁরা এসেছিলেন। মাননীয় মুখ্যমন্ত্রী, ইদের নমাজে যাবেন... ওঁকে ওটাই মানায়। ওঁকে গীতাপাঠে মানাবে না। উচ্চারণই করতে পারবেন না গীতা।"
একদিকে পাঁচ লক্ষ কণ্ঠে গীতাপাঠ, অন্যদিকে মুর্শিদাবাদে বাবরি মসজিদ তৈরির তোড়জোড়। এরই সঙ্গে আবার মুর্শিদাবাদেই রামমন্দিরের শিলাপুজো। ভোটের আগে রাজ্য রাজনীতি এখন ধর্মময়। ব্রিগেডে ৫ লক্ষ কণ্ঠে গীতা পাঠ অনুষ্ঠানের আবহেই তুঙ্গে উঠল রাজনৈতিক তরজা। উঠল পরিবর্তনের ডাক। ইঙ্গিতপূর্ণ মন্তব্য শোনা যায় সাধু সন্তদের একাংশের গলাতেও। অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রীকে আমন্ত্রণ জানানো হলেও তিনি যাননি।
বিধানসভা ভোটের আগে ফের একবার রাজ্য রাজনীতির চর্চার কেন্দ্রবিন্দুতে ব্রিগেড। তবে কোনও রাজনৈতিক সভার জন্য নয়, রাজনীতি চর্চার জায়গায় রবিবার হয়ে গেল ধর্মচর্চা। তবে সেখানেও বাদ গেল না রাজনীতি। ধর্মের আবেগে মিশল রাজনীতির রং। উঠল পরিবর্তনের ডাক। গতকাল গীতাপাঠের অনুষ্ঠানে উদ্যোক্তাদের তরফে মুখ্যমন্ত্রীকে আমন্ত্রণ জানানো হলেও তিনি যাননি। যা নিয়ে সরব হয়েছে বিজেপি।