কলকাতা : অ্যাডিনো (Adeno) পরিস্থিতি নিয়ে নবান্নে মুখ্যমন্ত্রীর (Mamata Banerjee) সঙ্গে স্বাস্থ্য-সচিব এবং মুখ্যসচিবের গতকাল বৈঠক হয়। সূত্রের দাবি, সেই বৈঠকে উদ্বেগপ্রকাশ করে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, কোভিডের সময় যেভাবে কাজ করা হয়েছে, এক্ষেত্রেও যেন সেই রকম ব্যবস্থা করা হয়। অক্সিজেনের অভাব যাতে না হয় সেই বিষয়ে নজর রাখতে বলেছেন মুখ্যমন্ত্রী।
এদিনই ১০ দফা অ্যাডভাইসরি জারি করেছে স্বাস্থ্য দফতর। তাতে বলা হয়েছে,
- শ্বাসকষ্ট, সর্দি-কাশি আক্রান্ত শিশুদের জন্য ২৪ ঘণ্টার ক্লিনিক করতে হবে।
- যে যে হাসপাতাল বা মেডিক্যাল কলেজে শিশু বিভাগ আছে, সেখানে আলাদা আউটডোর চালু করতে হবে। যাতে সাধারণ বর্হিবিভাগে এইসব রোগীকে অপেক্ষা করতে না হয়।
- হাসপাতাল প্রধান বা অধ্যক্ষের অনুমতি ছাড়া শ্বাসকষ্ট, সর্দি-কাশি আক্রান্ত শিশু রোগীদের রেফার করা যাবে না।
- ভেন্টিলেটর ও অন্য সামগ্রী প্রস্তুত রাখতে হবে।
- শিশু বিভাগের সঙ্গে যুক্ত থাকা জুনিয়র চিকিৎসকদের কাজে লাগাতে হবে।
- শিশুদের জনবহুল এলাকায় না নিয়ে যাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। বলা হয়েছে, মাস্ক ব্যবহার করতে।
- হাসপাতালগুলিকে নিয়মিত প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করতে হবে। এই বিষয়ে পরামর্শ দেওয়ার জন্য ৫টি হাসপাতালকে চিহ্নিত করা হয়েছে, যাদের থেকে পরামর্শ নিতে হবে।বেসরকারি হাসপাতাল বা প্রতিষ্ঠানের ক্ষেত্রেও প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করতে বলা হয়েছে।
অব্যাহত মৃত্যু-
এদিকে অ্যাডিনো-আতঙ্কের মাঝেই কাল রাত থেকে আজ সকালের মধ্যে কলকাতার দুটি সরকারি হাসপাতালে ৪ শিশুর মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে বি সি রায় শিশু হাসপাতালে মৃত্যু হয়েছে ২ শিশুর। উত্তর ২৪ পরগনার গোবরডাঙার ৪ বছরের শিশুর জ্বর, শ্বাসকষ্টের সমস্যা থাকায়, প্রথমে হাবড়া স্টেট জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। ২৬ ফেব্রুয়ারি বি সি রায় হাসপাতালে স্থানান্তরিত করার পর ভেন্টিলেশনে রাখা হয় শিশুকে। সেখান থেকে বের করার পর, আজ ভোর ৪টে ৫৫ মিনিটে ওই শিশুর মৃত্যু হয়। নিউমোনিয়ার জেরে মৃত্যু বলে উল্লেখ করা হয়েছে।
অন্যদিকে, রবিবার বারাসাত হাসপাতালে সন্তানের জন্ম দেন বারাসাত পুরসভার ৭ নম্বর ওয়ার্ডের নবপল্লির বাসিন্দা এক মহিলা। জন্মের পরই অসুস্থ হয়ে পড়ে সদ্যোজাত। ওইদিনই ফুলবাগানের বি সি রায় হাসপাতালে এনে ভেন্টিলেশনে রাখা হয় নবজাতককে। আজ সকালে তার মৃত্যু হয়।
কলকাতা মেডিক্যাল কলেজেও ২ শিশুর মৃত্যু হয়েছে। চুঁচুড়ার হামিদপুরের ৭ মাসের শিশুর জ্বর, শ্বাসকষ্টের সমস্যা থাকায় ১৯ ফেব্রুয়ারি, চুঁচুড়া ইমামবাড়া হাসপাতাল থেকে রেফার করা হয়। আজ ভোরে মৃত্যু হয় একরত্তির। ওই শিশুর জন্মগত হার্টের সমস্যা ছিল। শরীরে অ্য়াডিনো ভাইরাস মেলে। হাসপাতালের দাবি, অ্যাডিনোর জেরে নিউমোনিয়া সংক্রমণ মিটলেও, হার্টের সমস্যার কারণেই ওই শিশুর মৃত্যু হয়েছে।
কলকাতা মেডিক্যালে মৃত দ্বিতীয় শিশুর বয়স ২২ দিন। হাওড়ার বাগনানের বাসিন্দা। জ্বর-শ্বাসকষ্ট থাকায়, ১৬ ফেব্রুয়ারি উলুবেড়িয়া হাসপাতাল থেকে রেফার করা হয়। অ্যাডিনো ভাইরাস সংক্রমণ মেলে। গতকাল রাতে ওই শিশুর মৃত্যু হয়।