বিজেন্দ্র সিংহ, কলকাতা: শিশুদের জন্য বরাদ্দ মিড ডে মিলের (Mid Day Meal) টাকা অন্য় খাতে ব্য়বহার করা নিয়ে বেশ কিছুদিন ধরে সরগরম বঙ্গ রাজনীতি। বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী এই অভিযোগ তুলেছিলেন। বগটুইকাণ্ডে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলিকে মিড ডে মিলের টাকা থেকে ক্ষতিপূরণ দেওয়া হয়েছিল বলে দাবি করেন তিনি (Bogtui Fire)। এ বার কেন্দ্রের জয়েন্ট রিভিউ মিশনের রিপোর্টও একই দাবি করা হল। 


শিশুদের খাবারটুকুও কারচুপির হাত থেকে রেহাই পাচ্ছে না!


মিড ডে মিল প্রকল্পে স্কুলে একবেলা খেতে পায় গরিব পরিবারের ছোট ছোট ছেলেমেয়েরা। সেই প্রকল্পেও একশো কোটি টাকার বেশি গরমিলের অভিযোগ শুনে অনেকে প্রশ্ন তুলছেন, শিশুদের খাবারটুকুও কারচুপির হাত থেকে রেহাই পাচ্ছে না? যদিও রাজ্যের দাবি, একতরফা রিপোর্ট প্রকাশ করা হয়েছে। নিয়ম বহির্ভূত ভাবে রিপোর্ট তৈরিতে রাজ্যের প্রতিনিধিকে রাখা হয়নি বলে দাবি করেছে রাজ্য সরকার। 

কেন্দ্রীয় শিক্ষামন্ত্রকের জয়েন্ট রিভিউ মিশনের রিপোর্টে রাজ্য় সরকারের বিরুদ্ধে মিড ডে মিলে গরমিলের বিস্ফোরক অভিযোগ তোলা হয়েছে। এই রিপোর্টে বলা হয়েছে, রাজ্য় সরকারকে দেওয়া রিপোর্টে বীরভূমের জেলাশাসক জানিয়েছেন, ২০২২ সালের ২১ মার্চের একটি অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্তদের আর্থিক সাহায্য় দিতে ২০০৫ সালের বিপর্যয় মোকাবিলা আইন অনুযায়ী, পিএম পোষণের টাকা ব্য়বহার করা হয়।


আরও পড়ুন: Mid Day Meal: ৬ মাসে ১০০ কোটির দুর্নীতি! বাংলায় মিড ডে মিল নিয়ে চাঞ্চল্যকর অভিযোগ, রিপোর্ট শিক্ষা মন্ত্রকের

রিপোর্টে আরও জানানো হয়, ২৮ মার্চ রাজ্য় সরকারের সংশ্লিষ্ট খাত থেকে এই টাকা আবার পিএম পোষণ প্রকল্পে ফেরত পাঠানো হয়। যদিও, এর সপক্ষে কোনও তথ্য় দেওয়া হয়নি। গতবছরের ২১ মার্চই ঘটেছিল বগটুইকাণ্ড। তার পর ২৪ মার্চ বগটুই গ্রামে যান মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর উপস্থিতিতেই নিহতদের পরিবারের হাতে চেক তুলে দেওয়া হয়।


বগটুইকাণ্ডে মিড ডে মিলের টাকায় আর্থিক সাহায্য় করা হয়েছে, সেই অভিযোগ প্রথম তুলে ধরে এবিপি আনন্দ। স্বজনহারা মিহিলাল শেখকে দেওয়া চেকের ছবিতে দেখা যায়, তাতে জয়েন্ট বিডিও-র অফিসের জন্য বরাদ্দ মিড ডে মিলের কথা লেখা রয়েছে। মিহিলালের বক্তব্য, "আমরা তো জানি না কোথাকার চেক দেওয়া হয়েছিল আমাদের। তবে এটা করে থাকলে অন্য়ায় করেছে।"

এবার কেন্দ্রীয় শিক্ষামন্ত্রকের জয়েন্ট রিভিউ মিশনের রিপোর্টেও সেই একই অভিযোগ উঠে এল, যা নিয়ে শুরু হয়েছে রাজনৈতিক তরজা। রিপোর্ট সামনে আসার পর শুভেন্দু বলেন, "ইনি মিড ডে মিলের টাকা নিয়ে নয়ছয় করেছেন। বগটুইতে যে ১০ জনকে খুন করা হয়, তাদের চিফ মিনিস্টার রিলিফ ফান্ড দেওয়া হয়নি। মিড ডে মিলের টাকা থেকে দেওয়া হয়েছে।"


পুরনো বিতর্ক ফের উস্কে দিল কেন্দ্রীয় রিপোর্ট

গতবছরের বগটুইকাণ্ড এবং তারপর আর্থিক সাহায্য় ঘিরে রাজ্য় রাজনীতি উত্তাল হয়েছিল। এবার কেন্দ্রীয় শিক্ষামন্ত্রকে জমা পড়া রিপোর্ট আবার উস্কে দিল সেই বিতর্ক।