কলকাতা: দীর্ঘদিন ধরেই কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়গুলিতে হচ্ছিল না ছাত্র সংসদ নির্বাচন। তা নিয়ে শাসক দলকেই নিশানা করেছে বিরোধীরা। এবার ছাত্র সংসদ নির্বাচন হওয়ার ইঙ্গিত দিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। তৃণমূল ছাত্র পরিষদের অনুষ্ঠানের মঞ্চ থেকে ইঙ্গিত তৃণমূল নেত্রীর।  


ছাত্র নির্বাচন হচ্ছে না কেন, কেন ছাত্র ভোট বন্ধ হয়ে রয়েছে এমন নানা প্রশ্ন তুলে তৃণমূলের বিরুদ্ধে ক্ষমতা কুক্ষিগত করে রাখার অভিযোগ তুলেছে বিরোধী দল। শহর থেকে শহরতলির একাধিক কলেজ-বিশ্ববিদ্য়ালয়ে এই প্রশ্ন উঠেছে। ছাত্র সংসদ নির্বাচন চেয়ে লাগাতার বিক্ষোভ হয়েছে যাদবপুর-প্রেসিডেন্সি-কলকাতা মেডিক্য়াল কলেজে। এই আবহেই শিক্ষামন্ত্রী আশ্বাস দিয়েছিলেন, পঞ্চায়েত ভোটের পরই হবে ছাত্র নির্বাচন। কিন্তু, পঞ্চায়েতের রেজাল্ট বেরোনোর পরও প্রায় ২ মাস হতে চলল। ভোট হয়নি। তখনই মুখ্য়মন্ত্রীর পুজোর পরই ভোট করানোর আশ্বাস। 


কী বলেছেন মমতা:
এদিন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, পুজোর পরেই হতে পারে ছাত্র-সংসদ নির্বাচন। প্রয়োজনে বিলে সংশোধনী আনার কথাও বলেছেন তিনি। পাশাপাশি ছাত্র সংসদ নির্বাচন যাতে শান্তিপূর্ণ হয়, সেই কথাও শোনা যায় তাঁর মুখে। তিনি আরও বলেছেন, 'কলেজ পড়ুয়ারাই সংশ্লিষ্ট কলেজে নির্বাচন করবে। পুলিশকে বলব, কোনও বহিরাগতকে যেন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের বিষয় নাক গলাতে না দেওয়া হয়। স্থানীয় নেতারাও ছাত্রদের পাশে থাকবেন। পতাকা-ঝালমুড়ি কিনে দিয়ে সাহায্য করবেন। আমরা যখন ছাত্র রাজনীতি করতাম, কেউ পাশে দাঁড়াত না। নবীন বরণের ব্যবস্থাও করে দিতে হবে স্থানীয় নেতাদের।'


আর ঠিক এখানেই তীব্র আপত্তি তুলেছেন বিরোধী নেতারা, কলেজ রাজনীতিতে কেন স্থানীয় নেতারা ঢুকবেন সেই প্রশ্ন তুলেছেন তাঁরা। সিপিএমের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য সুজন চক্রবর্তী বলেন, 'মুখ্য়মন্ত্রী চাইছেন বহিরাগতরা কলেজে এসে দাপট দেখাক। সেই কারণে উনি দায়িত্ব দিয়েছেন কাউন্সিলরদের।' 


পঞ্চায়েত হোক বা পুরসভা, লোকসভা হোক বা বিধানসভা। পশ্চিমবঙ্গে ভোট আর অশান্তি এ দুটো শব্দ যেন সমার্থক। সোমবার মুখ্য়মন্ত্রীর ছাত্র ভোটের ঘোষণার ঠিক আগে, রবিবার কলেজে কলেজে বকেয়া ছাত্র নির্বাচন নিয়ে ইঙ্গিতপূর্ণ মন্তব্য় শোনা যায় সৌগত রায়ের গলাতেও। তিনি বলেছিলেন, 'ছাত্র নির্বাচন করা দরকার। নির্বাচন না করলে আমরা ছাত্র রাজনীতির আঙ্গিনাকে পরিষ্কার করতে পারব না। শুধু আমার গায়ের জোর আছে, কলেজের গেটের সামনে গিয়ে আমি মস্তানি করে ছাত্রনেতা হব, তা হয় না। কলেজে ছাত্র ভর্তির নামে টাকা তোলা এটাকে আমি ঘৃণা করি। টাকা তোলার মধ্যে তৃণমূল ছাত্র পরিষদ থাকবে না।' কলেজ ভোট যাতে শান্তিপূর্ণ হয় তার জন্য বলেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। রাজ্য বিজেপির মুখপাত্র শমীক ভট্টাচার্যর কটাক্ষ, 'ছাত্র ভোট এতদিন বন্ধ ছিল কেন? কোনও দলের সঙ্গে তো কমপিটিশন ছিল না। প্রতিযোগিতা হত টিএমসিপির দুই উইংস-এর। এখন উনি ভেবেছেন কন্ট্রোল করতে পারবেন। তাই করবেন।' রাজ্যে কবে হবে ছাত্র ভোট? এখন তারই অপেক্ষা।


আরও পড়ুন: ক্ষুদ্র শিল্পে ১০ লক্ষ চাকরি! নিয়োগ নিয়ে বড় আশ্বাস মমতার