RG কর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে মহিলা চিকিৎসককে নৃশংস খুনের ঘটনায় CBI তদন্তে আপত্তি নেই। এবিপি আনন্দ-র সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট সুমন দে - কে এক্সক্লুসিভ সাক্ষাৎকারে জানালেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
প্রশ্ন: আরজি করে যে নারকীয় ঘটনা ঘটেছে, একজন ৩১ বছরের চিকিৎসকের খুনের ঘটনা, শোনা যাচ্ছে পুলিশ ১ জনকে গ্রেফতার করেছে, এই ঘটনার কি কোনও ব্রেক থ্রু হয়েছে ?
উত্তর : মৃত্যুটা খুবই অমানবিক, ন্যক্কারজনক, নৃশংস। মনে হচ্ছে আমার পরিবারের কেউ হারিয়ে গেছে। এ ধরনের মৃত্যুকে আমরা সমর্থন জানাতে পারি না। জুনিয়র ডাক্তাররা যে দাবি জানাচ্ছে, তা সঙ্গত। এর মধ্যে কোনও অস্বাভাবিকতা নেই। ওঁরা যে ডিমান্ডগুলো করছে, তার প্রত্যেকটির সঙ্গে আমি একমত। তারা যে ডিমান্ড কালকে পর্যন্ত করেছিলেন, পুলিশ প্রত্যেকটি মেনে নিয়েছে। কালকে আমি ঝাড়গ্রামে ছিলাম। আমি আসতে আসতে খবর রাখছিলাম। আমি বাবা-মার সঙ্গেও কথা বলেছি। প্রশাসনকে নির্দেশ দিয়েছি, ফার্স্ট ট্র্যাক কোর্টে কেসটা গিয়েছে, একেবারে ফাঁসির আবেদন জানানো হোক। যে কালপ্রিট এই ঘটনা ঘটিয়েছে , তার কোনও ক্ষমা নেই। ১ জনকে তো গ্রেফতার করেছে, একটা ব্রেক থ্রু নিশ্চয়ই হয়েছে।
প্রশ্ন : জুনিয়র ডাক্তাররা হাসপাতালে স্বাস্থ্যকর্মীদের সুনিশ্চিত করার দাবি জানাচ্ছে। সরকার এটা নিয়ে কী ভাবছে ?
উত্তর : দেখুন আমরা প্রতিটা হাসপাতালে, চিকিৎসকদের গায়ে যেন কেউ হাত না দেয়, তার জন্য পুলিশ ক্যাম্প বসিয়েছি। আমাদেরও যেমন একটা দায়িত্ব আছে, তেমনই হাসপাতালের প্রিন্সিপাল, সুপারেরও একটা দায়িত্ব আছে, যাঁরা আভ্যন্তরীণ নিরাপত্তাটা দেখেন, আভ্যন্তরীণ ব্যাপারটা দেখেন। তাঁদের দিক থেকে কোনও নেগলিজেন্স হল কি না, সেটাও আমরা তলিয়ে দেখব। আমি আবেদন করব ছাত্র সমাজের কাছে, তাঁরা যদি মনে করে তাঁদের পশ্চিমবঙ্গ সরকারের উপর আস্থা নেই, তাঁরা অন্য যে কোনও এজেন্সির কাছে যেতে পারে, আমাদের কোনও আপত্তি নেই। কারণ আমরা চাইব, এই কেসটার সঠিক বিচার হোক। আমি অলরেডি বলেছি ফাস্টট্র্যাক কোর্টে মামলা করে, দোষীদের পেশ করে, দরকারে ফাঁসির দাবি জানাতে হবে, যাতে এইরকম অপরাধ ঘটানোর শাস্তি না পায়।
প্রশ্ন : আপনি বলছেন, অন্য যে কোনও এজেন্সির কাছে যেতে পারে, আপত্তি নেই। তাহলে সিবিআই তদন্তেও আপত্তি নেই আপনাদের?
উত্তর : আমাদের কোনও আপত্তি নেই। আমরা চাই ঘটনাটির সঠিক তদন্ত হোক। আমাদের তো কিছু লোকানোর নেই। সিপি কাল সারাদিন হাসপাতালে ছিলেন। আমার সঙ্গে কনট্যাক্টে ছিলেন, রাত দুটো পর্যন্ত। তারপর আজ সকালেও কথা হয়েছে। আমি পরিষ্কার বলে দিয়েছি, যেই হোক তার বিরুদ্ধে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই। প্রয়োজনে ফাঁসির আবেদনও জানাতে হবে। যদিও আমি ফাঁসির পক্ষে নই। কিন্তু কিছু কিছু কেসে যেখানে এদের শিক্ষা দেওয়ার জন্য যাতে এরকম ঘটনা ঘটানোর কেউ সাহস না পায়, তার জন্য এমন দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেওয়ার প্রয়োজন আছে। তাই আমি বলেছি, কেসটাকে ফাস্টট্র্যাক কোর্টে নিয়ে যেতে। এর আগে বালুরঘাটের একটা ঘটনায় আমরা ৩ দিনে করেছিলাম। সুতরাং হবে না কেন, চেষ্টা করতে হবে। জুনিয়র ডাক্তাররা খুব দায়িত্ববান, তাঁরা রোগীদের কখনও ফেরান না। তাঁরা আন্দোলন করুক। মিছিল - মিটিং করুক। সঙ্গে রোগী পরিষেবাও চালু করুক। এটা আমার একটা আবেদন থাকবে। স্বাস্থ্য ডিপার্টমেন্টের প্রিন্সিপাল পাঠিয়েছিলাম কিছু ফাঁকফোঁকর আছে কি না দেখার জন্য। কারণ সবকিছু থাকা সত্ত্বেও এই ঘটনাটা ঘটেছে সেমিনার হলে। চারিদিকে সিসিটিভি আছে। আমি বুঝতে পারছি না এত সাহস হয় কী করে। যাকে ধরা হয়েছে তার সেখানে যাতায়াত ছিল। যাকে ধরা হয়েছে, সে তো যাতায়াত করত ।
প্রশ্ন : আন্দোলনরত জুনিয়র চিকিৎসকদের কী বার্তা দেবেন ?
উত্তর : তাঁদের যা দাবি আছে, তাঁদের ক্ষোভ খুবই সঙ্গত। একটা সহকর্মীকে হারানোর বেদনা সবাইকেই আঘাত দেয়। আমার পরিবারেও দুজন ডাক্তার আছেন, জুনিয়র ডাক্তার। তাঁদের সাথে আমি আগেও ছিলাম, এখনও থাকব। আমি ওদের খুব ভালবাসি। ওদের যে কোনও ডিমান্ড, তার সঙ্গ আমরা একমত। কোনও অসুবিধা নেই।
( সম্পূর্ণ সাক্ষাৎকার শুনতে ক্লিক করুন নিচের লিঙ্কে )
শুনুন সরাসরি -