কলকাতা : মেঘভাঙা (Cloud Burst) বৃষ্টিতে সিকিমে ভয়াবহ বিপর্যয় । নিখোঁজ ২৩ সেনা জওয়ান। ঘটনায় গভীর উদ্বেগপ্রকাশ করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। প্রয়োজনে সিকিম সরকারকে সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছেন তিনি। উত্তরবঙ্গের (North Bengal) পরিস্থিতি নিয়েও উদ্বিগ্ন মমতা। বিপর্যয় মোকাবিলায় মুখ্যসচিবকে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপের নির্দেশ দিয়েছেন বলে আজ X হ্যান্ডেলে জানান তিনি।


 






সিকিমে ভয়াবহ প্রাকৃতিক বিপর্যয় দেখা দিয়েছে। উত্তর সিকিমের লোনাক লেকে মেঘভাঙা বৃষ্টির জেরে চুংথাম বাঁধ ভেঙে ভয়াল আকার নিয়েছে তিস্তা। নদীতে প্রবল জলোচ্ছ্বাস। জলস্তর ১৫ থেকে ২০ ফুট বেড়ে গেছে। স্রোতের টানে ভেসে যাচ্ছে বাড়ি ঘর-গাছ পালা। পাহাড়ি রাস্তায় ভাসছে গাড়ি। চুংথাম এলাকা কার্যত সিকিম থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। বন্য়ায় ক্ষতিগ্রস্ত একাধিক সেনাছাউনি। ২৩ জন সেনা জওয়ানের খোঁজ মিলছে না বলে সেনার তরফে জানানো হয়েছ। 


সেনার ইস্টার্ন কমান্ডের তরফে এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, লাচেন উপত্যকা বরাবর থাকা কিছু প্রতিষ্ঠান ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। চুংথাম বাঁধে জল ছাড়ার ফলে নিম্ন অববাহিকায় হঠাৎ করে ১৫ থেকে ২০ ফুট পর্যন্ত জলস্তর বেড়ে যায়। এর ফলে সিংতামের কাছে বরদাং এলাকায় পার্ক করে রাখা সেনা গাড়িগুলির ক্ষতি হয়েছে। ২৩ জন জওয়ান নিখোঁজ। জলোচ্ছ্বাসের জেলে কিছু গাড়ি ডুবে গেছে। তল্লাশি অভিযান চলছে।


এদিকে ভয়াবহ দুর্যোগে বিপর্যস্ত কালিম্পং-ও। জলের তো়ড়ে ধসে গেছে রাস্তা। তিস্তা বাজার, রাম্পু সহ বিভিন্ন এলাকা জলমগ্ন হয়ে পড়েছে। শিলিগুড়ি থেকে কালিম্পং এবং দার্জিলিং যাওয়ার বিকল্প রাস্তার ওপর দিয়েই বইছে জল। সম্পূর্ণ বন্ধ ১০ নম্বর জাতীয় সড়ক। তিস্তায় জলস্তর ব্য়াপক বেড়ে যাওয়ায় গজলডোবা, জলপাইগুড়ি় সহ তিস্তা তীরবর্তী এলাকাগুলিতে লাল সতর্কতা জারি করা হয়েছে।


এনিয়ে X হ্যান্ডেলে উদ্বেগপ্রকাশ করে মমতা লেখেন, 'সিকিমে মেঘভাঙা বৃষ্টির জেরে তৈরি হওয়া জলোচ্ছ্বাসে ২৩ সেনা জওয়ানের নিখোঁজ হওয়ার খবরে আমি গভীর ভাবে চিন্তিত। প্রয়োজনে সিকিমকে সাহায্য করব। এর পাশাপাশি এই মরসুমে উত্তরবঙ্গে যাতে সর্বাধিক নজরদারি চালানো যায় তার জন্য উত্তরবঙ্গে সংশ্লিষ্ট মহলের সকলের কাছে আবেদন জানাচ্ছি। যত তাড়াতাড়ি সম্ভব বিপর্যয় মোকাবিলা বিভাগের প্রস্তুতি খতিয়ে দেখার জন্য ইতিমধ্যেই মুখ্যসচিবকে নির্দেশ দিয়েছি। কালিম্পং, দার্জিলিং ও জলপাইগুড়িতে মানুষকে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। রাজ্যের সিনিয়র মন্ত্রী ও আধিকারিকরা উদ্ধারকাজ ও ত্রাণ বিলি খতিয়ে দেখতে উত্তরবঙ্গে ছুটে গেছেন। এই বিপর্যয়ে যাতে কোনও প্রাণহানি না হয় তা নিশ্চিত করতে কড়া নজরদারি চালানো হচ্ছে।'