কলকাতা: স্বাধীন এবং নিরপেক্ষ বিচারব্যবস্থার পক্ষে সওয়াল বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের (Mamata Banerjee)। তাঁর মতে, আশাহত হয়ে পড়লে মানুষ বিচারব্যবস্থারই দ্বারস্থ হন। তাই স্বাধীন এবং নিরপেক্ষ বিচারব্যবস্থার (judiciary) প্রয়োজনীয়তার কথা বলতে শোনা যায় মমতাকে। তবে সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি ইউইউ ললিতের (CJI UU Lalit) প্রশংসা শোনা যায় তাঁর মুখে। তিনি দায়িত্ব নেওয়ার পর বিচারব্যবস্থায় সক্রিয়তা লক্ষ্য করা গিয়েছে বলে মন্তব্য করেন মমতা।


বিচারব্যবস্থার নিরপেক্ষতা নিয়ে সওয়াল মমতার


রবিবার ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি অফ জুরিডিক্যাল সায়েন্সেসের চতুর্দশতম সমাবর্তন। তার জন্য নিউটাউনে বিশ্ব বাংলা কনভেনশন সেন্টারে অনুষ্ঠানে বিশেষ আয়োজন হয়েছিল। এ দিন সেখানে উপস্থিত ছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি এবং বাংলাদেশের প্রধান বিচারপতি। 


তাঁদের উপস্থিতিতেই এ দিন দেশের বিচারব্যবস্থা নিয়ে মুখ খোলেন মমতা। তিনি বলেন, "স্যর, সম্মানই আমাদের একমাত্র সম্বল। সেটা যাওয়া মানে, সব চলে যাওয়া। একবার সম্মানহানি হলে, তা আর ফেরত আসে না। তাই বিচারব্যবস্থার সঙ্গে যুক্ত সকলকে বলব, দেশের যুক্তরাষ্ট্রীয় পরিকাঠামো যেন বজায় থাকে দেখবেন।"


আরও পড়ুন: Naihati : মাদক কারবারের প্রতিবাদ করেছিলেন বলেই নিশানায় ? শিবপুরের ঘটনায় উঠছে প্রশ্ন


চলতি বছরে নিয়োগ দুর্নীতি থেকে গরু এবং কয়লা পাচারে, তৃণমূলের হেভিওয়েট নেতাদের নাম জড়িয়েছে। পার্থ চট্টোপাধ্যায়, মানিক ভট্টাচার্য, অনুব্রত মণ্ডলরা জেলে রয়েছেন। তা নিয়ো মমতার 'মা-মাটি-মানুষ' সরকারের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ হয়েছে বিস্তর। সেই নিয়ে প্রকাশ্যেই অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন দলীয় নেতৃত্ব। দোষী সাব্যস্ত হওয়ার আগেই রায় দিয়ে দেওয়া হচ্ছে বলে দাবি করেন তাঁরা। 


এ দিন মমতার গলায় সেই সুর ধরা পড়ে। তিনি বলেন, "অকারণে আজকাল মানুষকে হেনস্থার শিকার হতে হচ্ছে। এক শ্রেণির মানুষ সব গণতান্ত্রিক শক্তিকে কুক্ষিগত করেছে। এমন চলতে থাকলে দেশে রাষ্ট্রপতি শাসনের পরিস্থিতি তৈরি হবে। দয়া করে গণতন্ত্রকে রক্ষা করুন।"


দুর্নীতির অভিযোগের মধ্যেই মমতার মুখে সম্মানের কথা


মমতার মন্তব্যে প্রতিক্রিয়া চাইলে সিপিএম সাংসদ তথা আইনজীবী বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য বলেন,"উনি কী বলেন, তার অর্থ উনিই বোঝেন। আর কেউ বোঝেন না। আমি ওঁর বক্তৃতার কোনও অর্থ খুঁজে পেলাম না। গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া চালু রাখতে হবে নিঃসন্দেহে। কিন্তু তার নাম করে দুর্নীতি করবেন, আবার আইনত ব্যবস্থা নিলে সম্মানহানি বলে কান্নাকাটি করবেন, তা হতে পারে না। দু'টি একে অপরের পরিপূরক হতে পারে না কখনওই। গণতান্ত্রিক কাঠামোকে টিকিয়ে রাখতে গেলে, সংবিধানে উল্লেখিত যুক্তরাষ্ট্রীয় পদ্ধতি মেনে চলতে হবে কেন্দ্র এবং রাজ্য, দুই সরকারকেই।"