পার্থপ্রতিম ঘোষ, কলকাতা: মূল দরজা খুলে বাড়িতে ঢোকার সময় এলোপাথাড়ি গুলিতে খুন হন গৌরী বিশিষ্ট সমাজকর্মী তথা সাংবাদিক গৌরী লঙ্কেশ (Gauri Lankesh Murder)। পাঁচ বছর আগে সেই হত্যাকাণ্ডকে সামনে রেখেই বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বাড়িতে অনুপ্রবেশের ঘটনার তদন্ত করতে চলেছে কলকাতা পুলিশ (Mamata Banerjee Security)। তদন্তের পরিভাষায় এই ‘গেট প্য়াটার্ন’ পদ্ধতিতে তদন্ত শুরু হতে চলেছে, যা গোটা গোটা মামলায় অত্য়ন্ত গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠতে পারে বলে পুলিশ সূত্রে খবর। 


মুখ্যমন্ত্রীর বাডি়তে অনুপ্রবেশের তদন্তে পাথেয় গৌরী লঙ্কেশ হত্য়া!


২০১৭ সালের ৫ সেপ্টেম্বর রাত ৮টা নাগাদ বেঙ্গালুরুর বাড়িতে খুন হন গৌরী। মূল ফটক পেরিয়ে বাড়ির চৌহদ্দিতে ঢুকে পড়েছিলেন তিনি। মূল দরজার তালা খুলছিলেন। সেই সময় তাঁকে গুলিতে ঝাঁঝরা করে দেয় দুষ্কৃতীর দল। সেই ঘটনার তদন্তেও ‘গেট প্যাটার্ন’ পদ্ধতিতেই সাফল্য় মিলেছিল। তাই কালীঘাটে মমতার বাড়িতে হাসনাবাদের হাফিজুল মোল্লার অনুপ্রবেশের ঘটনাতেও এ বার সেই পদ্ধতি অনুসরণ করতে চলেছে কলকাতা পুলিশ।


কী এই ‘গেট প্যাটার্ন’ পদ্ধতি? পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে,  বিশেষজ্ঞের উপস্থিতিতে, কোনও ব্যক্তির শরীরের গঠন, উচ্চতা, পা ফেলার ধরন ওএবং গতিবিধি সিসি ক্যামেরায় রেকর্ড করা হয়। পরে, অপরাধস্থল থেকে পাওয়া সিসি ক্যামেরার ফুটেজের সঙ্গে তা মিলিয়ে দেখে তৈরি করা হয় রিপোর্ট। এই পদ্ধতি মেনে তদন্তকেই বলা হয় ‘গেট প্যাটার্ন’। হাফিজুলের ক্ষেত্রে, জেলে বিশেষজ্ঞকে নিয়ে গিয়ে এই পদ্ধতি অবলম্বর করতে চান তদন্তকারীরা।


আরও পড়ুন: Presidential Election 2022: রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের দিনে অন্য মুডে মদন, করিডরে তখন লম্বা লাইন


আগামী ১ অগাস্ট পর্যন্ত হাফিজুলের জেল হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছে আদালত। অভিযুক্তের জেল হেফাজতের আবেদন জানানোর পাশাপাশি, রবিবার আদালতে সরকারি আইনজীবী রাজস্থানে একটি অপরাধের সঙ্গে হাফিজুলের যোগ থাকার বিষয়টি আদালতে তুলে ধরেন। এ বিষয়ে খোঁজ নিতে হাফিজুলের গ্রামে রাজস্থান পুলিশের একটি দলও এসেছিল বলে জানা গিয়েছে।  


রবিবার জেলে গিয়ে হাফিজুলকে জিজ্ঞাসাবাদ করতে চেয়ে আদালতে আবেদন জানায় পুলিশ। পুলিশের সেই আবেদন মঞ্জুর করেছে আদালত। ১ অগাস্ট পর্যন্ত হাফিজুলের জেল হেফাজতের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। 


জেল হেফাজতে অভিযুক্ত হাফিজুল মোল্লা


এখনও পর্যন্ত পুলিশি তদন্তে যে তথ্য় পাওয়া গিয়েছে, তা হল, মমতার কালীঘাটের বাড়িতে চত্বরে ঢোকার আগে, এলাকায় ১০ থেকে ১২ বার রেকি করেছিল হাফিজুল। সিসি ক্যমেরার ফুটেজে এক ব্যক্তিকে মুখ্যমন্ত্রীর দাদার ঘরের পাশ দিয়ে, পাঁচিল এবং গার্ডরেল টপকে বাড়ির চত্বরে ঢুকে পড়তে দেখা গিয়েছে। সেই ব্য়ক্তিই যে হাফিজুল, তা নিশ্চিত করতেই ‘গেট প্যাটার্ন’ পদ্ধতি ব্যবহার করতে চলেছে পুলিশ।