আবির দত্ত, কলকাতা : কখনও বাড়ির সামনে আত্মহত্যার চেষ্টা, কখনও আবার আদিগঙ্গা পেরিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর ( Mamata Banerjee )  বাড়িতে পৌঁছনোর চেষ্টা। বারবার প্রশ্নের মুখে পড়েছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নিরাপত্তা। এবার, সরাসরি মুখ্যমন্ত্রীর বাড়ি চত্বরে (Mamata Banerjee’s home in the Kalighat) ঢুকে পড়ল এক সন্দেহভাজন। আর সেই হাসনাবাদের হাফিজুল মোল্লার কাছে নাকি ছিল লোহার রড ! ভয়ঙ্কর এই অভিযোগ এসেছে মুখ্যমন্ত্রীর বাড়িতে নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা এক আধিকারিকের তরফে ! 


তাঁর অভিযোগ, শুধু লুকিয়ে থাকাই নয়, জামার নিচে লোহার রড লুকিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর বাড়িতে ঢুকেছিল হাসনাবাদের হাফিজুল । কালীঘাট থানায় এই মর্মে অভিযোগ জানিয়েছেন,  মুখ্যমন্ত্রীর বাড়িতে নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা এক আধিকারিক। শনিবার রাত ১টা ২০ নাগাদ গার্ড রেল টপকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বাড়িতে ঢোকে ওই সন্দেহভাজন। ৭ ঘণ্টা লুকিয়েছিল কনফারেন্স রুমের পিছনে। এই ঘটনার পরই চাঞ্চল্য ছড়ায় সারা রাজ্যে। মুখ্যমন্ত্রী জেড প্লাস ক্যাটেগরির নিরাপত্তা পেয়ে থাকেন। সেখানে এত বড় ছিদ্র কীভাবে। কীভাবে চোখ ধুলে দিয়ে এক্কেবারে তাঁর ঘরের কাছে পৌঁছে গেল সন্দেহভাজন ? 

আরও পড়ুন :


আশঙ্কাজনক হারে বাড়ছে ব্রেস্ট ক্যান্সার, শনাক্ত করতে দোরে দোরে পৌঁছে যাবে সরকারের টিম


সকালে তাঁকে দেখতে পান নিরাপত্তা রক্ষীরা। জেড প্লাস নিরাপত্তা পান মুখ্যমন্ত্রী। সেখানে হাই প্রোফাইল সিকিওরিটি জোনে, ত্রিস্তরীয় নিরাপত্তা বেষ্টনী ভেঙে কীভাবে অভিযুক্ত ঢুকে পড়ল? তাহলে কি নিরাপত্তায় বড়সড় কোনও গলদ ছিল? উঠেছে প্রশ্ন। শুধু হয়ে বিরোধী দলের খোঁচাও। 


মুখ্যমন্ত্রীর নিরাপত্তা ব্যবস্থা ঠিক কেমন


VVIP হিসেবে জেড প্লাস নিরাপত্তা পান মুখ্যমন্ত্রী। ২৪ ঘণ্টা তাঁর বাড়িতে ত্রিস্তরীয় নিরাপত্তা মোতায়েন থাকে। সূত্রের খবর, মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে সব সময় ৩২ থেকে ৩৬ জন নিরাপত্তারক্ষী থাকেন। তাঁদের মধ্যে অন্তত ১০ জন কম্যান্ডো। থাকেন পার্সোনাল সিকিওরিটি অফিসাররা। যাঁরা মুখ্যমন্ত্রীকে ঘিরে থাকেন। মুখ্যমন্ত্রীর নিরাপত্তায় সব মিলিয়ে, দিনভর ঘুরিয়ে ফিরিয়ে ১৫০ জন আধিকারিক মোতায়েন থাকেন। অথচ এত কড়া নিরাপত্তার মধ্যেই বাড়ির চত্ত্বরে ঢুকে, ঘণ্টার পর ঘণ্টা কীভাবে থেকে গেল এক সন্দেহভাজন?


২০১১ সালের ৬ই মার্চ, রেল মন্ত্রী থাকাকালীন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বাড়ির সামনে আত্মহত্যার চেষ্টা করেন হুগলির বাঁশবেড়িয়ার এক যুবক। ২০১৭ সালেও, একই ধরনের ঘটনা হয়েছিল। ২০২১ সালের ২৫ জুলাই, আরও একজন আদিগঙ্গায় নেমে পড়েন। নিরাপত্তারক্ষীরা তাঁকে আটকান। এরই মধ্যে এবার মুখ্যমন্ত্রীর বাড়ি চত্বরে ঢুকে পড়লেন হাসনাবাদের বাসিন্দা হাফিজুল মোল্লা। মুখ্যমন্ত্রীর নিরাপত্তা নিয়ে সোমবার নবান্নে বৈঠকে বসেন মুখ্যসচিব, স্বরাষ্ট্রসচিব, মুখ্যমন্ত্রীর নিরাপত্তা অধিকর্তা ও কলকাতার পুলিশ কমিশনার।