আবির দত্ত, সুমন ঘড়াই ও শিবাশিস মৌলিক, কলকাতা: মুখ্যমন্ত্রীর বাড়িতে ‘অনুপ্রবেশ’-এর ঘটনায়, সিট গঠন করে তদন্ত শুরু করল লালবাজার (Laalbazar)। জেড প্লাস সুরক্ষার ঘেরাটোপ এড়িয়ে কীভাবে মুখ্যমন্ত্রীর বাড়িতে প্রবেশ? কীভাবে জামার আড়ালে রড নিয়ে ৭ ঘণ্টা লুকিয়ে ছিল হাসনাবাদের হাফিজুল?  ডিসি ডিডি স্পেশাল, ডিডি এসটিএফের নেতৃত্বে সিট গঠন করল লালবাজার। ‘কোনও গাফিলতি ছিল কিনা, কী উদ্দেশ্যে মুখ্যমন্ত্রীর বাড়িতে ঢুকেছিল হাফিজুল?’ সমস্ত বিষয়েই তদন্ত করবে বিশেষ তদন্তকারী দল


শুধু লুকিয়ে থাকাই নয়, জামার নীচে লোহার রড লুকিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর বাড়িতে ঢুকেছিল হাসনাবাদের হাফিজুল মোল্লা। কালীঘাট থানায় এই মর্মে অভিযোগ জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রীর বাড়িতে নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা এক আধিকারিক। শনিবার রাত ১টা ২০ নাগাদ গার্ড রেল টপকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের (Mamata Banerjee )বাড়িতে ঢোকে ওই সন্দেহভাজন। ৭ ঘণ্টা লুকিয়েছিল কনফারেন্স রুমের পিছনে। সকালে তাকে দেখতে পান নিরাপত্তা রক্ষীরা। জেড প্লাস নিরাপত্তা পান মুখ্যমন্ত্রী। সেখানে হাই প্রোফাইল সিকিওরিটি জোনে, ত্রিস্তরীয় নিরাপত্তা বেষ্টনী ভেঙে কীভাবে অভিযুক্ত ঢুকে পড়ল? তাহলে কি নিরাপত্তায় বড়সড় কোনও গলদ ছিল? উঠছে প্রশ্ন।


মুখ্যমন্ত্রীর বাড়িতে এক সন্দেহভাজনের ঢুকে পড়ার ঘটনার তদন্তে, এবার সিট তৈরি করল লালবাজার। জামার ভিতরে রড লুকিয়ে ওই ব্যক্তি কেন সেখানে গেছিলেন? তা খতিয়ে দেখবে সিট। নবান্ন এবং মুখ্যমন্ত্রীর বাড়িতে ডিউটিতে থাকা পুলিশকর্মীদের জন্য জারি হয়েছে নতুন নির্দেশ। 


রাতভর মুখ্যমন্ত্রীর ঘরের কাছে কেন লুকিয়ে ছিল সন্দেহভাজন? কেন জামার ভিতর লুকিয়ে নিয়ে গেছিল রড? এসব খতিয়ে দেখতেই এবার তৈরি হল সিট। পাশাপাশি মুখ্যমন্ত্রীর নিরাপত্তার দায়িত্বপ্রাপ্ত পুলিশকর্মীদের জন্য জারি হল নতুন নির্দেশ। শনিবার রাতে, মুখ্যমন্ত্রীর দাদার ঘরের পাশ দিয়ে, পাঁচিল ও গার্ডরেল টপকে বাড়ির চত্বরে ঢুকে পড়েছিলেন হাসনাবাদের হাফিজুল মোল্লা।


মুখ্যমন্ত্রীর বাড়ির কনফারেন্স রুমের পিছনে লুকিয়ে ছিলেন তিনি। সন্দেহভাজন হাফিজুল রড নিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর বাড়িতে কেন ঢুকেছিল, তা খতিয়ে দেখতে  জয়েন্ট সিপি ক্রাইম মুরলীধর শর্মার নেতৃত্বে, ৮ সদস্যের স্পেশাল ইনভেস্টিগেশন টিম তৈরি করেছে লালবাজার। SIT-এ রয়েছেন ডিসি ডিডি স্পেশাল সূর্যপ্রতাপ যাদব ডিসি এসটিএফ হরিকৃষ্ণ পাই।এই ঘটনায় ইতিমধ্যেই প্রশ্ন উঠেছে, মুখ্যমন্ত্রীর বাড়ির কাছে যে সিসিটিভি ক্যামেরা রয়েছে, তার মনিটরিংয়ে কি কোনও খামতি ছিল? এই প্রেক্ষাপটে ডিউটি চলাকালীন 


নবান্ন ও মুখ্যমন্ত্রীর বাড়ির নিরাপত্তায় থাকা পুলিশকর্মীদের মোবাইল ফোন ব্যবহারে নিষাধাজ্ঞা জারি হয়েছে। সূত্রের খবর, ডেপুটি কমিশনার রিজার্ফ ফোর্সের তরফে জারি করা নির্দেশিকায় বলা হয়েছে, নবান্নে কর্মরত পুলিশকর্মীরা ডিউটিতে থাকাকালীন মোবাইল ফোন ব্যবহার করতে পারবেন না। ডিউটি যোগ দেওয়ার সময়, মোবাইল ফোন জমা রেখে দিতে হবে। বাড়িতে বা অন্য কোথাও জরুরিকালীন কোনও দরকার পড়লে, নবান্নের ল্যান্ডলাইন থেকে ফোন করা যাবে।


একই নির্দেশ জারি করা হয়েছে কালীঘাটে মুখ্যমন্ত্রীর বাড়ির সামনে মোতায়েন পুলিশকর্মীদের জন্যও। সূত্রের খবর, পুলিশকর্তারা মনে করছেন, ডিউটি চলাকালীন মোবাইল ফোনে ব্যস্ত থাকলে, মনসংযোগের অভাব ঘটে। সেই কারণ ও মুখ্যমন্ত্রীর নিরাপত্তার স্বার্থে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। অভিযুক্ত হাফিজুল আপাতত পুলিশ হেফাজতে রয়েছেন।