আদ্যাপীঠ: দুর্গাপুজো, কালীপুজো যেমন করেন, তেমন ইদ, বড়দিনও পালন করেন। সর্বসমক্ষে সেকথা তুলেও ধরেন তিনি। আদ্যাপীঠ মন্দিরের (Adyapeath Mandir ) সঙ্গে নিজের সংযোগের কথা এবার তুলে ধরলেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। জানালেন বাড়িতে আদ্যাস্তব জপ করেন তিনি। একই সঙ্গে দেড় দশক আগের একটি ঘটনার কথা তুলে ধরলেন তিনি। 


মঙ্গলবার আদ্যাপীঠের মন্দিরে যান মমতা। সেখানে তাঁর সঙ্গে ছিলেন তৃণমূলের সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের মা, মমতার বৌদি লতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ছিলেন কামারহাটির বিধায়ক মদন মিত্রও। মন্দিরে মাতৃ আরাধনায় যোগ দেন মমতা। নিজেহাতে করেন আরতি। তার পর একটি অনুষ্ঠানেও যোগ দেন। সেখানেই নিজের সেই অভিজ্ঞতার কথা তুলে ধরেন। 



মমতা জানান, মাকে স্মরণ করেই আজ আদ্যাপীঠে ছুটে এসেছেন তিনি। এর পরই স্মৃতিচারণে ডুবে যান মমতা। জানান, ২০০৯ সালের ঘটনা। তিনি তখন কেন্দ্রীয় সরকারের রেলমন্ত্রী। ছোট বোনকে নিয়ে তাঁর মা আদ্যাপীঠের মন্দিরে পুজো দিতে এসেছিলেন। তার জন্য একটি ছোট, কমদামি সুতির শাড়ি কিনে পাঠিয়েছিলেন তিনি। 


আরও পড়ুন: Mamata Banerjee: মায়ের আরাধনায় মমতা, নিজেহাতে করলেন আরতিও, আদ্যাপীঠে মুখ্যমন্ত্রী


তিনি যা বলছেন, তার অন্য অর্থ যাতে বের না করা হয়, সতর্ক করে দেন মমতা। তাঁর মতে, কেউ বিশ্বাস করেন, কেউ আবার করেন না। অনেকে আবার নাটক বলতে পারেন। বলতে পারেন দর হাঁকছেন তিনি। কিন্তু এত দিন রাজনীতি করার পর এসবের প্রয়োজন নেই তাঁর। তাই ফের অতীতে ফিরে যান তিনি। 


এ দিন মমতা জানান, তাঁর মা এবং বোন ভোর ৪টে থেকে মন্দিরে মন্দিরে এসে বসেছিলেন। আদ্যাপীঠের মন্দিরে সাধারণত ভাল কাপড়ই আসে। বেনারসি পরানো হয় প্রতিমাকে। তাই কেউ বা কারা তাঁর মায়ের কাছে কাপড় দেখতে চান। কিন্তু অত কমদামি শাড়ি নিয়ে তিনি মন্দিরে আসবেন, তা আন্দাজ করতে পারেননি। তাই তাঁর মাকে বসতে বলা হয়। বলা হয়, প্রতিমাকে সাধারণত বেনারসি শাড়ি পরানো হয়। রোজ অনেক দামি শাড়ি আসে মন্দিরে। ভাল শাড়ি এলে প্রতিমাকে পরানো হবে। তত ক্ষণ যেন অপেক্ষা করেন মমতার মা। তাঁর শাড়িটি পুজোয় দিয়ে দেওয়া হবে।


মমতা জানিয়েছেন, সেই কথা শুনে মন্দিরে অপেক্ষা করতে থাকেন তাঁর মা। তাতে সন্ধে ৫টা বেজে যায়। সন্ধের মুখে একজন এসে জানান, রোজ কাপড় এলেও, সেদিনই কোনও কাপড় আসেনি। তাতে একজন পুরোহিত মমতার কিনে দেওয়া কমদমি, সুতির শাড়িটিই নিয়ে যান। সেটিই পরানো হয় প্রতিমাকে। 


মমতা জানিয়েছেন সন্ধে পার হয়ে গেলেও, মা বাড়ি না ফেরায় চিন্তায় পড়ে গিয়েছিলেন তাঁরা সকলে। পরে বাড়ি ফিরে মা-ই গোটা ঘটনা ঘুলে বলেন। ছোট বোন এখনও বেঁচে রয়েছেন। আজও সেই কথা মনে পড়লে গায়ে কাঁটা দেয় তাঁর।