কলকাতা : ইদের সকালে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে নিয়ে রিজওয়ানুর রহমানের (Rizwanur Rahaman) বাড়িতে গেলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। অন্যদিকে, আজই আনিসের বাড়িতে যান মহঃ সেলিম। আমতার সারদা গ্রামে পৌঁছন সিপিএম-এর রাজ্য সম্পাদক। আজ সারাদিন সেখানেই থাকবেন সেলিম।


আজ প্রথমে রিজওয়ানুরের পার্ক সার্কাসের বাড়ির সামনে বেদিতে মালা দেন মুখ্যমন্ত্রী। এরপর বাড়িতে গিয়ে কথা বলেন রিজওয়ানুরের মা ও দাদা রুকবানুর রহমান ও পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে। রিজওয়ানুর রহমানের বাড়িতে ৩ বছর পর গেলেন মুখ্যমন্ত্রী। সকলকে ইদের শুভেচ্ছা জানিয়ে মিনিট ২৫ পর ফিরে যান মুখ্যমন্ত্রী।


সময় বদলায়। কিন্তু সন্তানহারা মা-বাবাদের তীব্র যন্ত্রণা...তাঁদের দীর্ঘশ্বাসের সঙ্গে বেরিয়ে আসা চোয়াল চাপা শব্দগুলোর অর্থ কোনওদিনই বদলায় না। আজ আনিসের বাবা, ছেলের মৃত্যুর ‘বিচার’ চাইছেন। ঠিক এভাবেই কলকাতার রাজপথ উত্তাল হয়ে উঠেছিল ১৫ বছর আগে।


দিনটা ছিল ২০০৭ সালের ২১ সেপ্টেম্বর। পাতিপুকুরে রেললাইনের ধার থেকে ছেলের মৃতদেহ উদ্ধার হয়। খবর শুনে, কাঁদতে কাঁদতে ‘ইনসাফ’ চেয়েছিলেন কড়েয়ার রিজওয়ানুর রহমানের মা। আনিসের মৃত্যুর ঘটনায় যেভাবে পুলিশের দিকে অভিযোগের আঙুল উঠেছে, রিজওয়ানুরের মৃত্যুর সময়ও, পুলিশ অফিসারদের একাংশের বিরুদ্ধে উঠেছিল চক্রান্তে সামিল হওয়ার অভিযোগ।


এরপর সুবিচারের দাবিতে শুরু হয় আপোসহীন এক লড়াই।  ২৭ সেপ্টেম্বর, ২০০৭-  ‘উঠ গই আওয়াজ’। রিজওয়ানুরের বাড়ির সামনে দাঁড়িয়ে করা সেই শো-তে সামিল হন হাজার হাজার মানুষ। বহু তত্ত্ব-তর্ক-বিশ্লেষণ-কাঁটাছেঁড়ার পরে সেদিন ভিড় থেকে একটাই আওয়াজ উঠেছিল ‘ইনসাফ’ চাহিয়ে। সন্তানহারা কিশওয়ার জাহানের বুকফাটা আর্তি, জনতার দরবারে পৌঁছতে গিয়ে সেদিন রোষানলেও পড়তে হয় এবিপি আনন্দকে। 


সেই সময় রাজ্যের ক্ষমতায় সিপিএম। আর বিরোধী নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। রিজওয়ানুরের হয়ে পথে নেমেছিলেন তিনি। সেই সময় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছিলেন, সিআইডি তদন্তে সত্যি বেরোবে না, চাই সিবিআই তদন্ত।


এখন ক্ষমতায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আর ১৫ বছর পর আনিস খানের রহস্য মৃত্যুতে, তাঁর সরকার যখন তদন্তের জন্য স্পেশাল ইনভেস্টিগেশন টিম তৈরি করেছে, তখন মৃতের পরিবার চাইছে সিবিআই।


যেমন পুলিশের বেশে কারা আনিসের বাড়িতে হানা দিয়েছিল, সেই প্রশ্ন ওঠে। কিছুটা সেভাবেই রিজওয়ানুর মৃত্যুর মামলায় একের পর এক পুলিশ অফিসারের ভূমিকা আতসকাচের তলায় চলে এসেছিল।


১৪ বছর বাদে আনিস খানের রহস্যমৃত্যুতে ফের উত্তাল রাজ্য। শেষ অবধি সেই সময় রিজওয়ানুর মৃত্যুকাণ্ডে সিবিআই তদন্ত হয়েছিল।