কলকাতা : কলকাতার পুলিশ কমিশনার বিনীত গোয়েলকে (Vineet Goyal) তাঁর পদ থেকে সরিয়ে দেওয়ার কথা গতকালই ঘোষণা করে দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। নতুন কমিশনারের নাম ঘোষণা ছিল কার্যত সময়ের অপেক্ষা। অবশেষে জানা গেল কলকাতা পুলিশের নতুন কমিশনারের নাম। নতুন কমিশনার হলেন মনোজ ভার্মা। বিনীত গোয়েলের জায়গায় তাঁকে দায়িত্বভার তুলে দেওয়া হল।


১৯৯৮ ব্যাচের আইপিএস অফিসার মনোজ ভার্মা (Manoj Verma)। এর আগে তিনি রাজ্য পুলিশে এডিজি (আইন-শৃঙ্খলা) ছিলেন। এবার শুরু হতে চলেছে তাঁর নতুন ইনিংস। কলকাতার নতুন পুলিশ কমিশনার হচ্ছেন তিনি। কিছুক্ষণ আগেই এই বিষয়ে বিজ্ঞাপিত জারি করা হয় নবান্ন থেকে। অন্যদিকে, বিনীত গোয়েলকে পাঠানো হচ্ছে স্পেশাল টাস্ক ফোর্সের এডিজি করে। রাজ্য পুলিশের যে ইন্টেলিজেন্স ব্যুরো রয়েছে তার নতুন এডিজি হচ্ছে জ্ঞানবন্ত সিং। জাভেদ শামিম যিনি এতদিন পর্যন্ত এডিজি আইবি ছিলেন, তিনি এবার রাজ্য পুলিশের নতুন এডিজি আইন-শৃঙ্খলা হচ্ছেন। তার পাশাপাশি মনোজ ভার্মা যিনি এডিজি আইন-শৃঙ্খলা ছিলেন, তিনি কলকাতার পুলিশ কমিশনার হচ্ছেন। ১৯৯৮ ব্যাচের এই আইপিএস অফিসার এর আগে ব্যারাকপুরের পুলিশ কমিশনার ছিলেন। জঙ্গলমহলে, দার্জিলিঙে কাজ করেছেন। বিভিন্ন সময়ে সংকট মোকাবিলার কাজে পুলিশকে নেতৃত্ব দিয়েছেন। সেখানে সরকারের সাফল্য এসেছে।  


 






 


একনজরে মনোজের ভার্মার কেরিয়ারে উল্লেখ্যযোগ্য দিক-


বাম জমানায় মাওবাদী-দমনে বিশেষ ভূমিকা নিয়েছিলেন মনোজ ভার্মা । ২০০৮ সালে পুলিশ বয়কট হঠাতে লালগড়-সহ জঙ্গলমহলে বিশেষ দায়িত্ব দেওয়া হয় তাঁকে। পশ্চিম মেদিনীপুরের SP হিসেবে মনোজের নেতৃত্বেই মাওবাদী দমনে অভিযান চলে। কিষেণজির এনকাউন্টারের সময় CIF-এর প্রধান ছিলেন মনোজ ভার্মা । ব্যারাকপুরের CP হিসেবে দুষ্কৃতী দমনে বিশেষ ভূমিকাও ছিল তাঁর। মুখ্যমন্ত্রীর নিরাপত্তা আধিকারিকের দায়িত্বও ছিলেন IPS মনোজ ভার্মা।


৯ অগাস্ট RG কর মেডিক্যাল কলেজে তরুণী চিকিৎসকের দেহ উদ্ধারের পর কেটে গেছে এক মাসেরও বেশি সময়। সেই থেকে সমানে রাজ্য সরকার ও জুনিয়র চিকিৎসকদের মধ্যে স্নায়ুযুদ্ধ চলেছে। এদিকে ঘটনার পর থেকে প্রতিবাদে সরব জুনিয়র চিকিৎসকরা। তাঁরা প্রথম থেকেই দুর্নীতিমুক্ত স্বাস্থ্য ব্যবস্থা-সহ ৫ দফা দাবিতে সরব হয়ে কর্মবিরতির সিদ্ধান্ত নেন। তাঁদের অন্যতম দাবি ছিল, আর জি কর মেডিক্যালের তৎকালীন অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষের সাসপেনশন ও কলকাতার পুলিশ কমিশনার বিনীত গোয়েলের অপসারণ। সেই দাবিতে তাঁরা দীর্ঘ আন্দোলন চালিয়ে গিয়েছেন তাঁরা। 


এই পরিস্থিতিতে গতকাল সুপ্রিম কোর্টে আর জি কর-মামলার শুনানির আগের দিন কালীঘাটে ৫ ঘণ্টার বৈঠকে অধিকাংশ দাবি মানেন মুখ্যমন্ত্রী। কার্যকরী হলে তবেই কাজে ফিরবেন জানিয়ে দেন আন্দোলনরত জুনিয়র চিকিৎসকরা। গতকাল ম্য়ারাথন বৈঠকের পর, আন্দোলনকারীদের দাবি মেনে পুলিশ কমিশনার বিনীত গোয়েল ও DC নর্থ অভিষেক গুপ্তকেও সরিয়ে দেওয়া হল। গতকাল মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছিলেন, বিকেল চারটের পরে কলকাতা পুলিশে বদল হবে। বিনীত যেখানে কাজ করতে চেয়েছেন, সেখানে পাঠানো হবে। সেইমতো এদিন দেখা গেল রদবদলের পর্ব।