সন্দীপ সরকার, ঝিলম করঞ্জাই, কলকাতা : গুণমান যাচাইয়ের পরীক্ষায় পাস করতে পারল না বিপুল পরিমাণ ট্যাবলেট, ক্যাপসুল, ইঞ্জেকশন। তালিকা প্রকাশ করে কেন্দ্রীয় ড্রাগ কন্ট্রোল জানিয়েছে, ওষুধের পর এবার চিকিৎসা সরঞ্জামের মার্কশিটেও লাল কালির দাগ। দেশ জুড়ে গুণমান যাচাইয়ের পরীক্ষায়, আবার ফেল করল প্রচুর ট্যাবলেট, ক্যাপসুল, ইঞ্জেকশন এবং চিকিৎসা সরঞ্জাম। এরমধ্য়ে রয়েছে বিভিন্ন কোম্পানির ক্যাথিটার , স্যালাইন এবং তরল ওষুধ শরীরে প্রবেশ করানোর ইনফিউশন সেট, যা চিকিৎসার ক্ষেত্রে অত্য়ন্ত গুরুত্বপূর্ণ!
সম্প্রতি, পরীক্ষার জন্য বাজার থেকে বিভিন্ন ওষুধ ও চিকিৎসা সরঞ্জাম সংগ্রহ করে কেন্দ্রীয় ড্রাগ কন্ট্রোল বিভাগ। সেই রিপোর্ট সামনে আসার পর দেখা যাচ্ছে, এক সঙ্গে ৯৭টি ওষুধ গুণমান যাচাইয়ের পরীক্ষায় ফেল করেছে। কোনও ক্ষেত্রে মোড়কে লেখা বিবরণের সঙ্গে ওষুধের মাত্রায় হেরফের রয়েছে। কোথাও আবার ওষুধের পরিমাণই কম। কোনও ইঞ্জেকশনের ভায়ালে ক্ষতিকারক ব্যাকটেরিয়ার উপস্থিতি মিলেছে। কোনটি আবার পরিশোধিত জল দিয়ে বানানো হয়নি। তিনটি ওষুধ আবার নামী সংস্থার ব্র্যান্ড নেম জাল করে বানানো।
কলকাতা মেডিক্যাল কলেজের বিভাগীয় প্রধান সৌমিত্র ঘোষ জানালেন, আমরা তো সব কিছু স্টেরিলাইজ করি, প্যাকেটের ভিতরের জিনিস যদি এরকম থাকে, তাহলে তো ভয়াবহ! পরীক্ষায় ফেল করা ওষুধ ও চিকিৎসা সরঞ্জামের মধ্যে রয়েছে, ক্যাথিটার, স্যালাইন এবং তরল ওষুধ শরীরে প্রবেশ করানোর ইনফিউশন সেট, বিভিন্ন অ্যান্টিবায়োটিক, স্যালাইন, রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখার ওষুধ অ্যামলোডিপিন, ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণের ওষুধ অ্যামিকাসিন, প্যারাসিটামল, চোখের ড্রপ, কিডনির অসুখের চিকিৎসায় ব্যবহৃত ইঞ্জেকশন, ডায়ারিয়া এবং বমি বন্ধের ওষুধ, প্যান্টোপ্রাজল, অ্যাসপিরিন এবং অক্সিটোসিন।
এছাড়াও নমুনা পরীক্ষায় মেহেন্দিতে মিলেছে ক্ষতিকারক রাসায়নিকের উপস্থিতি। জাল অ্যালোভেরা সাবানেরও হদিশ মিলেছে। Sই সব ওষুধ এবং চিকিৎসা সরঞ্জাম বাজার থেকে প্রত্যাহার করার নির্দেশে দিয়েছে রাজ্য ড্রাগ কন্ট্রোল। যে সব কোম্পানির ওষুধ, গুণমান যাচাইয়ের পরীক্ষায় ফেল করেছে, সেই কোম্পানিগুলোর বেশিরভাগ গুজরাত, মধ্যপ্রদেশ, হিমাচল প্রদেশ ও উত্তরাখণ্ডের।
গত মাসেও ফেল-করা ওষুধের তালিকায় ছিল, ফেল করা ওষুধের তালিকায় রয়েছে, ব্লাড ক্যান্সারের চিকিৎসায় ব্যবহৃত ভেনেটোক্ল্যাক্স ট্যাবলেট। ব্রেস্ট ক্যান্সারের ইঞ্জেকশন ন্যানড্রোলন ডেকানোয়েট। হজমের ওষুধ প্যানটোপ্রাজল 40। রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে ব্যবহৃত টেলমিসারটন 40। ব্যথা কমানো ও জমাট রক্ত স্বাভাবিক করার হেপারিন অয়েনমেন্ট। অ্যান্টিবায়োটিক অ্যামোক্সিসিলিন ও পটাশিয়াম ক্লাভুলেনেট 625-এর মতো ওষুধ। শুধু তাই নয়, পরীক্ষায় ধরা পড়েছে, অ্যাড্রিনালিন ইঞ্জেকশন এবং ভিটামিন C ইঞ্জেকশনের ভায়ালে ভাসছে দূষিত পদার্থ। চোখের ড্রপের শিশিতে ভুল লেভেল লাগানো এমন ঘটনাও সামনে আসে।