সুদীপ্ত , কলকাতা : বড়বাজারের মেছুয়াবাজার ফলপট্টির হোটেলে বিধ্বংসী আগুনে মর্মান্তিক মৃত্যু বহু মানুষের । শেষ পাওয়া খবর অনুসারে মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৪। পুলিশ সূত্রের খবর ১৩ জনের মৃত্যু হয়েছে ধোঁয়ায় দম আটকে আর ১ জন প্রাণ বাঁচাতে নিচে ঝাঁপ দিতে গিয়ে পড়ে মৃত্যু হয়েছে। প্রবল ধোঁয়ার জেরে দমবন্ধ হওয়ায় বেড়েছে মৃত্যুর সংখ্যা, জানিয়েছেন নগরপাল।
ইমার্জেন্সি এগজিটের সুবন্দোবস্ত ছিল কি?
মঙ্গলবার সন্ধে ৭.৩০ নাগাদ আগুন লাগে। ঘিঞ্জি এলাকা, তার উপর হোটেলে আবাসিক ভর্তি থাকায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে দ্রুত। ঢোকা-বেরনোর একটাই সিঁড়ি। তাই অনেকেই নিচে নামতে পারেননি। কেউ হোটেলের ঘরেই আটকে পড়েন। হোটেলে রাজ্যের ও ভিনরাজ্যের বাসিন্দারা থাকতেন। সম্ভবত অগ্নিনির্বাপন ব্যবস্থা ঠিক মতো ব্যবহার করা যায়নি। সেই সঙ্গে ইমার্জেন্সি এগজিটের সুবন্দোবস্ত না থাকায় অনেকেই বেঁচে বের হতে পারেননি।
রান্নাঘর থেকে ধোঁয়া দৃশ্যমান
৬ নম্বর মদনমোহন বর্মন স্ট্রিটের এই ঋতুরাজ হোটেলের একতলায় দোকান ও গুদাম রয়েছে। ওপরের অংশে হোটেল। হোটেলের ৪৭টি ঘর রয়েছে। হোটেলের কর্মী সংখ্যা ৬০ জন। ৪২টি ঘরে ৮৮ জন আবাসিক ছিলেন। এদের মধ্যে অনেকেই ভিনরাজ্যের বাসিন্দা। প্রাণ বাঁচাতে পাইপ বেয়ে নামতে গিয়ে মৃত্যু হয় একজনের। কেউ কেউ ছাদের কার্নিস থেকে পড়ে যান। সিঁড়ির কাছেও অনেকের দেহ মেলে। স্থানীয়দের দাবি, রাত সোয়া ৮টা নাগাদ একতলার রান্নাঘর থেকে ধোঁয়া বের হতে দেখা যায়। সেখান থেকেই আগুন ছড়ায়। দমকলের ১০টি ইঞ্জিন আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে।
প্রাণে বাঁচতে হোটেলের ছাদে
আগুনের হাত থেকে বাঁচতে কয়েকজন হোটেলের ছাদে আশ্রয় নেন। তাঁরা মোবাইলের ফ্লাস লাইট জ্বালিয়ে সঙ্কেত দেন বহু মানুষ। প্রাণে বাঁচতে হোটেলের উপর তলায় কার্নিসে এসে দাঁড়ান। সেখান থেকেই পড়ে গিয়ে ১ জনের মৃত্যু হয়েছে। ছাদে আটকে পড়াদের ল্যাডারে করে পাশের বাড়ির ছাদে নামানো হয়। দমকলের মই করে নিচে নামিয়ে আনা হয় আবাসিকদের কয়েকজনকে। ঘটনাস্থলে রাতেই আসেন নগরপাল ও কলকাতার মহানাগরিক ফিরহাদ হাকিম। পুলিশ সূত্রে খবর, ৮ জনের দেহ শনাক্ত করা হয়েছে। হোটেল থেকে অনেককেই উদ্ধার করে নিয়ে যাওয়া হয় RG কর, NRS ও কলকাতা মেডিক্যাল কলেজে। একজন আশঙ্কাজনক অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন।