ঝিলম করঞ্জাই, কলকাতা: আজ সিটি স্ক্য়ান (CT Scan) হচ্ছে না রাজ্যের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের (Ex Chief Minister Buddhadeb Bhattacharjee), সিদ্ধান্ত মেডিক্যাল বোর্ডের। সুগার নিয়ন্ত্রণে রাখতে দেওয়া হচ্ছে ইনস্যুলিন। চালু হয়েছে স্টেরয়েড (Steroid)। তবে রাজ্যের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী এখনও সঙ্কটে, জানাল মেডিক্য়াল বোর্ড।
কী জানা গেল?
গত কাল রাতেই বুদ্ধদেবকে ইনভেসিভ ভেন্টিলেশনে রাখা হয়। এদিন চিকিৎসকদের মেডিক্যাল বোর্ড তাঁর সিটি স্ক্যান করানোর বিষয়ে আলোচনার সময় নিজেদের পর্যবেক্ষণ সামনে রাখেন। পরে সর্বসম্মতিক্রমে সিদ্ধান্ত হয়, আপাতত সিটি স্ক্যানের সিদ্ধান্ত স্থগিত রাখা হচ্ছে। তাঁর শরীরের অবস্থা আরও একটু দেখে নিয়ে সম্ভবত আগামীকাল সিটি স্ক্যান করা হতে পারে বলে খবর। কিন্তু ইনভেসিভ ভেন্টিলেটরের মতো ঝুঁকিপূর্ণ ও যন্ত্রণাদায়ক চিকিৎসার পথে যেতে হল কেন? শোনা যাচ্ছে, প্রাথমিক ভাবে নন ইনভেসিভ ভেন্টিলেশনে রাজ্যের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী সাড়া দিলেও তাঁর শ্বাসের প্রক্রিয়া নিয়মিত হচ্ছিল না। তাই পরে ইনভেসিভ ভেন্টিলেশনে দিতে হয় বুদ্ধদেবকে।
এখন কী পরিস্থিতি?
হাসপাতাল সূত্রে খবর, এখনও সঙ্কটজনক অবস্থায় রয়েছেন রাজ্যের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য। ১০০ শতাংশ ভেন্টিলেশন সাপোর্টে রয়েছেন তিনি। রাইলস টিউবের সাহায্যে খাওয়ানো হচ্ছে বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যকে
সচেতন রয়েছেন, ডাকলে সাড়া দিচ্ছেন প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী। বাইল্য়াটারাল নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য। শ্বাসনালী ও ফুসফুসে সংক্রমণ থাকায় দেওয়া হচ্ছে হাইডোজের অ্যান্টিবায়োটিক। প্রভাব পড়েছে কিডনিতেও, স্বাভাবিকের থেকে বেশি ক্রিয়েটিনিনের মাত্রা। তবে গতকালের তুলনায় পরিস্থিতির সামান্য উন্নতি হয়েছে, দাবি সিপিএমের বর্ষীয়ান নেতা সূর্যকান্ত মিশ্রর। গত বুধবার থেকে জ্বরে ভুগছিলেন প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী। গতকাল অর্থাৎ শনিবার দুপুরে শ্বাসকষ্ট বাড়ায় ঝুঁকি নিতে চাননি চিকিৎসকরা। পাম অ্যাভিনিউয়ের বাড়িতে ক্রিটিক্যাল কেয়ার অ্যাম্বুল্যান্স পাঠিয়ে,গ্রিন করিডর করে আনা হয় উডল্যান্ডসে। হাসপাতালের ৫১৬ নম্বর কেবিনে ভর্তি বুদ্ধবাবু। দীর্ঘদিন ধরেই শ্বাসকষ্টের সমস্যা রয়েছে বুদ্ধদেবের। পরিবার সূত্রে খবর, শনিবার দুপুরে খাওয়া-দাওয়ার পর অসুস্থ বোধ করতে শুরু করেন তিনি। গত চার দিন ধরে জ্বরে ভুগছিলেন। শ্বাসনালীর পাশাপাশি সংক্রমণ ছড়ায় ফুসফুসেও। শরীরে অক্সিজেন স্যাচুরেশন কমতে কমতে ৬৮ শতাংশে নেমে যায়। বাড়তে থাকে কার্বন ডাই অক্সাইডের পরিমাণ। বুদ্ধদেব তন্দ্রাচ্ছন্ন হয়ে পড়ায় উদ্বেগ আরও বেড়ে যায়। ব্যক্তিগত চিকিৎসকরা প্রথমে হাই ফ্লো নেজাল অক্সিজেনেশনের মাধ্য়মে পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার চেষ্টা করেন। তাতে ৮০ শতাংশে স্যাচুরেশনের পরিমাণ পৌঁছনো গেলেও, চিকিৎসকরা আর ঝুঁকি নিতে চাননি। সেই মতো ক্রিটিক্য়াল কেয়ার অ্যাম্বুল্য়ান্সে গ্রিন করিডর করে পাম অ্যাভেনিউয়ের বাড়ি থেকে বুুদ্ধদেবকে আনা হয় উডল্যান্ডস হাসপাতালে।
আরও পড়ুন:বর্ষায় আবারও ডেঙ্গির প্রকোপ, এক শয্যায় দুই রোগী, ভিড় বাড়ছে জেলার হাসপাতালগুলিতেও