ঝিলম করঞ্জাই, সন্দীপ সরকার, সৌমেন চক্রবর্তী কলকাতা : মেদিনীপুর মেডিক্যালে এক প্রসূতির মৃত্যুর পর থেকেই ছড়িয়েছিল উত্তেজনা। মৃতার পরিবারের সন্দেহই ছিল, ভুল ওষুধ বা স্যালাইনের প্রয়োগেই মর্মান্তিক পরিণতি হয়েছে প্রসূতির। এবার সেই সন্দেহেই পড়ল সিলমোহর। এই নিয়ে স্বাস্থ্য দফতরে যে প্রাথমিক রিপোর্ট জমা পড়েছে, তা এক কথায় বিস্ফোরক ! বিতর্কিত সংস্থার স্যালাইন ব্যবহারের ফলেই পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হয়ে মৃত্যু হয়েছে প্রসূতির, ব্যাখ্যা রিপোর্টে।
সিজার হওয়া মহিলাদের অতিরিক্ত রক্তপাত বন্ধ করতে ও শরীরে সোডিয়াম-পটাশিয়ামের ভারসাম্য বজায় রাখতে স্যালাইনের সঙ্গে ওষুধ দেওয়া হয়। রিপোর্ট বলছে, ওই প্রসূতিদের রক্তক্ষরণ বন্ধ করতে রিঙ্গার ল্যাকটেট স্যালাইন দেওয়া হয়েছিল। আর এই স্যালাইনের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার জেরেই মৃত্যু হয়েছে। স্বাস্থ্য দফতরে রোগী মৃত্যুর ঘটনা সম্পর্কে যে প্রাথমিক রিপোর্ট জমা পড়েছে, তাতে দাবি এমনটাই।
ঘটনার পূর্ণাঙ্গ তদন্ত করতে ৭ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করেছে স্বাস্থ্য দফতর। শনিবার মেদিনীপুর মেডিক্যালে যাবে স্বাস্থ্য দফতরের তদন্ত কমিটির প্রতিনিধিরা। ওই ব্যাচের সব স্যালাইন বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে।
এই প্রথম নয়, এর আগেও সংশ্লিষ্ট সংস্থার স্যালাইন ঘিরে বিতর্ক তৈরি হয়। সম্প্রতি কর্নাটকে ওই সংস্থার স্যালাইন ব্যবহারের পর এক রোগী মৃত্যুর অভিযোগ ওঠে। তারপর পশ্চিমবঙ্গের একটি সংস্থার সরবরাহ করা ওষুধকে কালো তালিকাভুক্ত করে কর্ণাটক সরকার। একের পর এক প্রসূতি মৃত্যুর কারণ হিসাবে দায়ী করা হয় সংস্থার তৈরি ওই ওষুধটিকেই। তখনই বিজেপি অভিযোগ করেছিল, কর্ণাটক সরকার পশ্চিমবঙ্গের যে সংস্থার তৈরি ওষুধকে কালো তালিকাভুক্ত করেছে, সেই সংস্থারই তৈরি ওষুধ ব্যবহার হচ্ছে এরাজ্যের বিভিন্ন সরকারি হাসপাতালে।
বিতর্কের মুখে রাজ্যের স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে দাবি করা হয়, অভিযোগ আসার পর, সব ব্যাচ সরিয়ে রেখে NABL স্বীকৃত ল্যাবে পরীক্ষা হয়। কোনও ত্রুটি নজরে আসেনি। তবুও অভিযুক্ত সংস্থার উৎপাদন প্রক্রিয়া খতিয়ে দেখা হচ্ছে। তারপর অবশ্য জানা যাচ্ছে, পশ্চিমবঙ্গ ফার্মাসিউটিক্যালের ওই স্যালাইন উৎপাদনে নিষেধাজ্ঞা জারি করে স্বাস্থ্য দফতর। তারপরও কীভাবে ওই বিতর্কিত সংস্থার স্যালাইন ব্যবহার করা হচ্ছে ? প্রসূতি-মৃত্যুর দায় কার? কীভাবে থেকে গেল বিতর্কিত সংস্থার স্যালাইন? প্রশ্ন উঠছে ।
আরও পড়ুন : গঙ্গাসাগরে মকরস্নানে সমাগম কপিল মুনির আশ্রম ঘিরেই, কে এই কপিলমুনি?