রাজা চট্টোপাধ্যায় ও সমীরণ পাল, জলপাইগুড়ি:  রাতের অন্ধকারে কীভাবে জঙ্গলে ঢুকছে চোরাশিকারিরা? কার সাহায্যে কাঠ কেটে নদীতে ও চা বাগান অঞ্চলে লুকিয়ে রাখা হচ্ছে? ডুয়ার্সে পরপর কাঠ উদ্ধারের ঘটনা চিন্তা বাড়াচ্ছে বন দফতরের। পাচার রুখতে বন দফতরের পরিকাঠামো নিয়ে উঠেছে প্রশ্ন। বেতন নিয়েও ক্ষোভ রয়েছে অস্থায়ী কর্মীদের মধ্যে। দ্রুত সমাধানের আশ্বাস বনমন্ত্রীর। 


কখনও সোনাখালি জঙ্গল লাগোয়া নদীতে কাঠ পাচারের চেষ্টা। কখনও আবার ছক বদলে, বিন্নাগুড়ি কিংবা হলদিবাড়ি চা বাগানে কাঠ লুকিয়ে রাখা। গত কয়েক দিনে ডুয়ার্সের বনাঞ্চল থেকে লক্ষ লক্ষ টাকার চোরাই কাঠ পাচারের উদ্ধারের ঘটনায়, নজরদারির পাশাপাশি, দফতরের পরিকাঠামো নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন খোদ বনকর্মীরা।


রাজ্য সরকারি কর্মচারী ফেডারেশনের (ফরেস্ট) সভাপতি প্রবীর ভট্টাচার্যের কথায়, স্টাফ নেই যার জন্যই চোরাশিকারির সংখ্যা বাড়ছে, বন্দুক তো সবার কাছে দিতে পারি না। সেটা চালানোর ক্ষমতা আছে একমাত্র ফরেস্ট গার্ডের, কিন্তু ফরেস্ট গার্ড কোথায় ?স্টাফের সংখ্যা খুব কম।স্কোয়াডের গাড়ি তেল নেই এক একটা পেট্রোল পাম্পে ১৫ লাখ ২০ লাখ টাকা করে বাকি পরে আছে , অপারেশন হবে কীভাবে। 


বনমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক জানিয়েছেন, কাঠ চুরি অনেকভাবে রোধ করছি, ডগ স্কোয়াড মনিটরিং করছে, প্রত্যেক বনে টাস্ক ফোর্স গঠন করেছি, কিছু অত্যাধুনিক অস্ত্র কিনব।'  বনমন্ত্রী আরও জানিয়েছেন, কাল-পরশুর মধ্যে সমাধান হয়ে যাবে, টাকা পাঠিয়ে দিয়েছি, ট্রেজারি থেকে টাকা পৌঁছে যাবে।   অস্থায়ী কর্মীদের দিয়ে কাজ সামাল দেওয়ার চেষ্টা হলেও, বেতন নিয়েও উঠেছে অভিযোগ।


ট্যুরিস্ট থেকে সাফারির পরিষেবা সব করতে হয়, সম কাজে সম বেতনের দাবিতে বিক্ষোভ গরুমারায়। পুজোর আগে, বেতন সমস্যা না মিটলে ডুয়ার্সের সমস্ত বনাঞ্চল স্তব্ধ করে দেওয়ার হুমকি দিয়েছেন বনকর্মীরা।


গরুমারার বনকর্মী অয়ন মুখোপাধ্যায় বলছেন, ঠেকা দিয়ে রাখা হয়েছে, বেশিদিন চলবে না, ছুটি পাই না, অস্থায়ীদের হাত শক্ত করতে হবে, এদের মাইনে নিয়মিত করতে হবে। পাচারকারী রোখার ক্ষেত্রে কার্যত নিধিরাম সর্দারের মতো তাদের অবস্থা বলে দাবি বনকর্মীদের। সামান্য পরিকাঠামো দিয়ে কীভাবে বন রক্ষা হবে তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।