রায়গঞ্জ : 'টাকা নিয়ে কেউ ঘোরাঘুরি করলে মন ডগমগ করবে না ?' নিয়োগ দুর্নীতিতে একের পর এক নেতা-মন্ত্রীর গ্রেফতারির ঘটনায় আজব সাফাই বিধায়কের। নিয়োগ দুর্নীতি নিয়ে তৃণমূল নেতা কৃষ্ণ কল্যাণী বলেন, 'কেউ হয়তো ঘুষ নিয়েছে, ঘুষ দিয়েছে কারা ? ঘুষ নেওয়া অন্যায় হলে, ঘুষ দেওয়াও অন্যায়।' রায়গঞ্জে বিজেপির টিকিটে জয়ের পরে তৃণমূলে যোগ দেন কৃষ্ণ কল্যাণী।


তৃণমূল নেতার বক্তব্য, "আজ কোনও ব্যক্তি হয়তো ঘুষ নিয়েছেন। কিন্তু, ঘুষ দিচ্ছেন কারা ? একজন ব্যক্তি যদি ঘুষ নিয়ে থাকেন, হাজারো লাখো ব্যক্তি ঘুষ দিয়েছেন। আমাদের সংবিধানে ঘুষ নেওয়াটা যদি অন্যায় হয়ে থাকে, তাহলে ঘুষ দেওয়াটাও অন্যায়। ধরুন, আপনার কাছে ১০০ টাকা আছে। আর কেউ যদি আপনার কাছে ২ হাজার টাকা নিয়ে ঘুর ঘুর করেন, মনটা ডগমগ করবে কি করবে না ? প্রথমে আমাদের সিস্টেমটাকে শোধরাতে হবে। আমাদের শপথ নিতে হবে, না অন্যায় করব, না অন্যায় সহ্য করব। না ঘুষ দেব, না ঘুষ দেব।" 


আন্দোলনরত চাকরিপ্রার্থী শহীদুল্লাহ বিধায়কের এই মন্তব্য নিয়ে বলেন, "উনি কথাটা ঠিকই বলেছেন। যাঁরা ঘুষ নিচ্ছেন, আর যাঁরা ঘুষ দিচ্ছেন, তাঁরা সমরূপে দোষী। কথাটা ঠিক। কিন্তু, ঘুষটা দিচ্ছে কারা, এটা গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। যারা অযোগ্য প্রার্থী তারা ঘুষটা দিচ্ছে। অযোগ্য প্রার্থীর কাছে ঘুষ নিয়ে অবৈধভাবে দুর্নীতি করে নিয়োগটা দিয়ে দিচ্ছে, আর যারা যোগ্য প্রার্থী তারা টাকা দিয়ে স্কুলে ঢুকতে চায় না। তাদের ভেতরে নীতি-নৈতিকতা বোধ আছে। আত্মসম্মান বোধ আছে। তারা মেধার মাধ্যমে ঢুকতে চায়। কিন্তু, যারা বঞ্চিত তাদের পথে বসিয়ে রাখা হয়েছে।  দুর্নীতি যাঁরা করেছেন, তাঁদের হয়ে কথা বলা তো অন্যায়। যাঁরা বঞ্চিত হয়েছেন, তাঁদের হয়ে কথা বলুন উনি।"


প্রসঙ্গত, বিধায়ক কৃষ্ণ কল্যাণী বিজেপির টিকিটে জিতলেও তৃণমূল কংগ্রেসে যোগ দেন। মুকুল রায়ের পর রায়গঞ্জের বিধায়ক কৃষ্ণ কল্যাণীকে বিধানসভার পাবলিক অ্যাকাউন্টস কমিটির চেয়ারম্যান করা হয়। তিনি খাতায় কলমে বিজেপি বিধায়ক, কিন্তু, গত বছর ২৭ অক্টোবর পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের উপস্থিতিতে তৃণমূলের পতাকা গ্রহণ করেন।


গত বছর জুলাই মাসে গাজোলে দুর্ঘটনার কবলে পড়ে রায়গঞ্জের বিধায়ক কৃষ্ণ কল্যাণীর গাড়ি। গাড়িতে ছিলেন না বিধায়ক। আহত হন বিধায়কের দুই নিরাপত্তা রক্ষী। ষড়যন্ত্রের অভিযোগ করেন বিধায়ক।


আরও পড়ুন ; সজোরে লরির ধাক্কা, ভয়াবহ দুর্ঘটনার কবলে কৃষ্ণ কল্যাণীর গাড়ি