পূর্ণেন্দু সিংহ, বাঁকুড়া: অনুনয়-বিনয় থেকে খানিকটা জোরজবরদস্তি! 'যাত্রীকে' (passenger) টোটো (toto) থেকে নামাতে সব রকম চেষ্টা করেছিলেন চালক। কিন্তু কিছুতেই কিছু হল না। ঠায় টোটোর পিছনের আসনেই বসে রইল সে। অবশেষে সেই টোটোতে চাপিয়েই 'তাকে' বন দফতরে (forest department) নিয়ে গেলে সমস্যা মেটে। ভাবছেন তো এ আবার কেমন যাত্রী যাকে বন দফতরে নিয়ে যেতে হল? তা হলে একটু খোলসা করা যাক।


কে তুমি আগন্তুক?


অন্য দিনের মতো শনিবারও টোটো নিয়ে সকাল সকাল বেরিয়ে পড়েছিলেন বাঁকুড়া (bankura) শহরের বাসিন্দা সৌমেন ঘোষ। বাঁকুড়া শহরে টোটো চালিয়েই রোজগার করেন সৌমেন। আয়ের একমাত্র পথ বলতে ওই যান। শহরের এ প্রান্ত থেকে ও প্রান্ত যাত্রী বয়ে নিয়ে যান প্রত্যেক দিন।  সাধারণত রুটিনের নড়চড় হয় না। এদিনও হয়নি। কিন্তু তাল কাটল দুপুর বেলায়।  বাঁকুড়ার কলেজ মোড় এলাকায় রাস্তার ধারে ফাঁকা টোটো রেখে পাশেই চায়ের দোকানে গিয়েছিলেন সৌমেন । ফিরে এসে দেখেন টোটোর পিছনের সিট দখল করে দিব্যি ঘুমোচ্ছে এক বাঁদর (monkey)। প্রথমে বাঁদরটিকে টোটো থেকে নামানোর জন্য আপ্রাণ চেষ্টা করেন তিনি । কিন্তু আসন ছাড়ার কোনও ইচ্ছেই ছিল না আগন্তুকের। এর মধ্যে হঠাতই সৌমেন দেখেন, প্রাণীটির পায়ে একটা আঘাত রয়েছে। জখম বাঁদরটিকে আর বিরক্ত করেননি তিনি। বরং শান্ত মাথায় অপেক্ষা করতে থাকেন কখন তার নতুন যাত্রীর মর্জি বদলায়। এভাবেই ঘণ্টাদুয়েক কেটে গিয়েছিল। তার পরও টোটো থেকে নামার কোনও ইঙ্গিত দেয়নি বাঁদরটি। অতঃকিম?


অতঃপর বনকর্মীরা...


খবর পেয়ে অবশেষে বন দফতরের কর্মীরা ঘটনাস্থলে পৌঁছন। তাঁরাও  অসুস্থ প্রাণীটিকে টোটো থেকে নামাতে পারেননি। শেষমেশ বাঁদর সমেত টোটো নিয়েই শহরের লোকপুর এলাকার বন দফতরে চলে আসেন তাঁরা। পরে জানা যায়, কোনও ভাবে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে অসুস্থ হয়ে পড়েছিল প্রাণীটি। বনকর্মীরা জানিয়েছেন, তার চিকিৎসা চলছে। সুস্থ হলেই ফের তাকে জঙ্গলে ছেড়ে দেওয়া হবে। 
কিন্তু তার পর? সৌমেনকে 'ধন্যবাদ' জানাতে ফের কি ফিরে আসবে সে? জল্পনা শুরু হয়ে গিয়েছে স্থানীয় বাসিন্দাদের। 


আরও পড়ুন:ভারতীয় নৌবাহিনীতে ২০০টি পদে হবে নিয়োগ, দশম শ্রেণি উত্তীর্ণরা করতে পারবেন আবেদন