প্রকাশ সিনহা, হাওড়া: পাণ্ডে ব্রাদার্সের (Pandey Brothers) বিরুদ্ধে বেআইনি আর্থিক (Money Laundering) লেনদেনের অভিযোগের ঘটনায় অভিযুক্তদের স্থাবর, অস্থাবর সম্পত্তি মিলিয়ে আরও ১১৮ কোটি ২৭ লক্ষ টাকা বাজেয়াপ্ত করল ED। ED-র তরফে দাবি, এই নিয়ে মোট ২৩৯ কোটি ২৯ লক্ষ টাকার সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত হয়েছে।
কী জানা গেল?
প্রথমে এই মামলার তদন্ত করছিল কলকাতা পুলিশ। এবার চার্জশিট জমা দিল ইডি। তাতে দাবি করা হয়েছে, ফরেক্স ট্রেডিংয়ের মাধ্যমে টাকা তুলত পান্ডে ব্রাদার্স। তার পর সেই টাকা বিভিন্ন জায়গায় নয়ছয় করা হত, জেনেছে কেন্দ্রীয় এজেন্সি। এখনও পর্যন্ত তিন জনের নাম চার্জশিটে দিয়েছে ইডি। তবে আরও একাধিক ব্যক্তির নাম ইতিমধ্যেই জানা গিয়েছে। এর মধ্যে কার কী ভূমিকা, হাওয়ালার মাধ্যমে তারা কী ভাবে টাকা পাচার করত, এই সব খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলে সূত্রের খবর। পাশাপাশি পাণ্ডে ব্রাদার্সে আরও কোনও নামী-বেনামি সম্পত্তি রয়েছে কিনা, সেটিও খোঁজ করছে ইডি।
প্রেক্ষাপট....
গত বছরের অক্টোবর মাসে শিবপুরের একটি বহুতলের গ্যারাজে গাড়ির ভিতর থেকে ২০ লক্ষ টাকা ও সোনার গয়না উদ্ধার হয়েছিল। এরপর মন্দিরতলায় পাণ্ডেদের ফ্ল্যাটে হানা দিয়ে, ৫ কোটি ৯৫ লক্ষ টাকা পায় পুলিশ। বক্স খাটের মধ্যে মেলে খাজানার হদিশ!! ঘটনার ১ সপ্তাহের মধ্য়ে ওড়িশা ও গুজরাত থেকে গ্রেফতার করা হয়, ব্যবসায়ী ও পেশায় চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্ট শৈলেশ পাণ্ডে, তাঁর দুই ভাই অরবিন্দ ও রোহিত। অভিযোগ, ক্রিপ্টোকারেন্সির পাঠ দেওয়ার জন্য জনসাধারণের কাছ থেকে বিপুল টাকা তুলেছিলেন পাণ্ডে ভাইরা। পাশাপাশি, কালো টাকা সাদা করার জন্য বিভিন্ন ব্যাঙ্কে একের পর এক অ্যাকাউন্ট খোলা হয়েছিল, দাবি করে পুলিশ। সূত্রের খবর, গত অগাস্টে কানাড়া ব্যাঙ্কের নরেন্দ্রপুর শাখায় দুটি কারেন্ট অ্যাকাউন্ট খোলা হয় ১৬ নম্বর স্ট্র্যান্ড রোডের ঠিকানায় খাদ্যশস্য সংস্থার নামে। একমাস পর, ওই দুটি অ্যাকাউন্টে ৭৭ কোটি টাকা লেনদেন দেখে সন্দেহ হয় ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষের। দেখা যায়, টাকা ট্রান্সফার হয়েছে ঝাড়খণ্ডের জামশেদপুরের তিন বাসিন্দার নামে থাকা পাঞ্জাব ন্যাশনাল ব্যাঙ্কের অ্যাকাউন্টে। পুলিশ সূত্রে খবর, এরপর ইয়েস ব্যাঙ্ক, অ্যাক্সিস ব্যাঙ্ক-সহ আরও ৯টি ব্যাঙ্কে খোলা হয় ভুয়ো অ্যাকাউন্ট। সমস্ত অ্যাকাউন্টের ইনট্রোডিউসার ছিলেন ব্যবসায়ী ও চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্ট শৈলেশ পাণ্ডে। তাঁর মাধ্যমেই চলত কালো টাকা সাদা করার কারবার।