উজ্জ্বল মুখোপাধ্যায়, কলকাতা: ইডি-সিবিআইয়ের (ED CBI) অতিসক্রিয়তার অভিযোগে প্রস্তাব (motion) পাশ বিধানসভায় (west bengal assembly)। প্রস্তাবের পক্ষে ভোট ১৮৯ জন বিধায়কের, বিপক্ষে ভোট পড়ল ৬৪ জন বিধায়কের।কিছুটা চিৎকার-চেঁচামেচি হল বটে। তবে আলোচনা ও প্রস্তাব পাশের প্রক্রিয়া আটকায়নি তাতে। 


কী হল?
অতীতে সরকার পক্ষ যে কটি প্রস্তাব এনেছে, তার সবকটিই ধ্বনি ভোট বা বিধানসভায় যে প্রক্রিয়ায় ভোটাভুটি হয়, তাতে পাশ হয়েছে। এবারও যে সংখ্যাগরিষ্ঠ ভোট প্রস্তাবের পক্ষেই পড়বে, তা মোটামুটি জানা ছিল। তবে এদিন এই প্রস্তাব ঘিরে ভোটাভুটিতে রাজ্য বিধানসভায় যে ছবি দেখা গিয়েছে, তা তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করছেন রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা। সরকার ও বিরোধী, দুপক্ষের বিধায়করাই আজ বিধানসভায় এসেছিলেন। বিশেষত, সরকার পক্ষের মন্ত্রী-বিধায়কদের আসতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল বলে খবর। তবে মূল যে দুটি দিক নজর কাড়ার মতো তা অন্য। এক, এ দিন বিরোধীপক্ষ বিধানসভা থেকে ওয়াক আউট করেননি। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায়ের বক্তৃতা তাঁরা শুনেছেন। কিছুটা হই-হট্টগোল করলেও একে অন্যকে বক্তব্য পেশ করার সুযোগ দিয়েছেন তাঁরা। এই ছবি সাম্প্রতিক অতীতে দেখা যায়নি। এমনকি গত সপ্তাহে যখন বিষয়টি নিয়ে আলোচনা শুরু হয়েছিল, তখনও সরকার ও বিরোধী পক্ষের বিধায়করা স্লোগান এবং পাল্টা স্লোগান দিয়েছিলেন। হোর্ডিং-পোস্টার নিয়ে বিক্ষোভও দেখিয়েছিলেন। পরে বিরোধীরা ওয়াক আউট করেন। সরকারি দলের বিধায়করাও বিধানসভা থেকে বেরিয়ে আসেন। কিন্তু এদিন ছবিটা অন্য। সরকারি তরফে বক্তব্য রাখার সময় বিরোধীদের তরফে হট্টগোল করা হলেও তা কখনও এমন পর্যায়ে যায়নি যাতে বক্তা কথা শেষ না করতে পারেন। অন্য দিকে বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী যখন কথা বলতে শুরু করেন, তখন সরকারি বেঞ্চের বিধায়করাও নিজেদের যথেষ্ট সংযত রাখেন। ফল? এক দিকে, টানটান আলোচনা ও অন্য দিকে প্রস্তাবে ভোটাভুটি। 


কী বললেন বিরোধী দলনেতা?
পরে অবশ্য সাংবাদিক বৈঠক করে শুভেন্দু অধিকারী বললেন, 'এই প্রস্তাব কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার কাজে কোনও প্রভাব ফেলবে না। তৃণমূল চোরেদের বীরের সম্মান দেয়, এর চেয়ে লজ্জার কিছু নেই।' এই ব্যাপারে সুপ্রিম কোর্টের রায়ের কথাও উল্লেখ করেন বিরোধী দলনেতা। তাঁর দাবি, বিধানসভার অধ্যক্ষ কী ভাবে এমন 'বেআইনি' প্রস্তাবে ভোটাভুটি করতে দিলেন তা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন। মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে নমস্কার ও প্রতি নমস্কারের কথা এলেও শুভেন্দুর দাবি, 'আমরা ওঁকে আপনি করে বলি। উনি বিরোধী দলনেতাকে তুই-তোকারি করেন। ব্যক্তিগত আক্রমণ করেন।' 
তবে দিনের শেষে ফোকাসে বিধানসভার আজকের ছবি। সেটি যে অনেকটাই ব্যতিক্রমী ছিল, সে কথা মানছেন রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের অনেকেই।  


আরও পড়ুন:SSC নিয়োগ প্রক্রিয়া কে দেখত ? CBI জেরায় বিস্ফোরক পার্থ