রাজীব চৌধুরী, মুর্শিদাবাদ : বহরমপুরে (Beharampore) রাজ্য সরকারের উদ্যান পালন দফতরের অনুষ্ঠানে তৃণমূলের বিধায়ক, সাংসদরা ডাক পেলেও, আমন্ত্রিতের তালিকায় বাদ বহরমপুরের কংগ্রেস সাংসদ, মুর্শিদাবাদ ও বহরমপুরের বিজেপি বিধায়করা। অথচ ওই অনুষ্ঠানে ভাষণ দিলেন মন্ত্রী সুব্রত সাহার ছেলে। একই মঞ্চে হাজির ছিলেন নওদার তৃণমূল বিধায়ক সাহিনা মমতাজ খানের মেয়েও। যা নিয়ে শুরু হয়েছে বিতর্ক।
'আমন্ত্রিত' নন কংগ্রেস, বিজেপির জনপ্রতিনিধিরা
বহরমপুরে রাজ্য সরকারের উদ্যান পালন দফতরের অনুষ্ঠান। মঞ্চে উপস্থিত রাজ্যের অতিরিক্ত মুখ্যসচিব সুব্রত গুপ্ত। রাজ্যের উদ্যান পালন দফতরের ম্যানেজিং ডিরেক্টর। উপস্থিত, উদ্যান পালন দফতরের স্বাধীন দায়িত্বপ্রাপ্ত রাষ্ট্রমন্ত্রী থেকে তৃণমূলের বিধায়ক-সাংসদরা। কিন্তু, অভিযোগ, সরকারি অনুষ্ঠানে আমন্ত্রণই জানানো হয়নি বহরমপুরের কংগ্রেস সাংসদ অধীর চৌধুরী, বহরমপুরের বিজেপি বিধায়ক সুব্রত মৈত্র। মুর্শিদাবাদের বিজেপি বিধায়ক গৌরীশঙ্কর ঘোষকে।
আবার বিরোধী দলের সাংসদ-বিধায়ক না থাকলেও, সরকারি অনুষ্ঠানে উপস্থিত তৃণমূলের বিধায়ক ও মন্ত্রীর ছেলে-মেয়ে। আর শুধু উপস্থিত থাকাই নয়, মঞ্চে ভাষণও দেন মন্ত্রীর ছেলে!
'নিয়ম, ভদ্রতা, সৌজন্য মানে না'
বিরোধীদের আমন্ত্রণ না জানানোর অভিযোগের মুখে কার্যত অস্বস্তিতে অতিরিক্ত মুখ্যসচিবও। সুব্রত গুপ্ত বলেছেন, 'কেন ডাকা হয়নি, বিষয়টি খোঁজ নিয়ে দেখব।' গোটা ঘটনায় রাজ্যের শাসক দলকে নিশানা করেছেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি। অধীর চৌধুরী বলেছেন, 'তৃণমূল দল তৃণমূলের পরিচয়েই থাকত। ওরা তাই নিজেদের পরিচয় বহন করছে। নিয়ম, ভদ্রতা, সৌজন্য মানে না।' বহরমপুর বিজেপি বিধায়ক সুব্রত মৈত্র-র কটাক্ষ, 'কেন এই সরকারি অনুষ্ঠানে ছেলে-মেয়েরা আছেন, দলটা তো পৈত্রিক সম্পত্তির মতো। লুটেপুটে খাওয়া চোরেদের দল। তাই প্রোগ্রামে মন্ত্রীর ছেলে-মেয়েরা বলে আছে।'
ক্ষুব্ধ তৃণমূলের একাংশও
প্রকাশ্যে না বললেও, গোটা ঘটনায় ক্ষুব্ধ তৃণমূলের একাংশও। এমনকি, অনুষ্ঠানের মাঝপথে মঞ্চ ছাড়েন মুর্শিদাবাদের তৃণমূল সাংসদ আবু তাহের খান। মুর্শিদাবাদের তৃণমূল কংগ্রেস চেয়ারম্যান আবু তাহের খান বলেছেন, 'মনে করি সরকারি প্রোগ্রাম সরকারি প্রোটোকল মেনে হওয়া উচিত। কেউ এরকম করে থাকলে সঠিক নয়। পুরোপুরি সরকারি অনুষ্ঠান, ৩ জন IS উপস্থিত। '
যদিও, পুত্র-কন্যাদের উপস্থিতিতে অস্বাভাবিক কিছু দেখছেন না তৃণমূলেরই মন্ত্রী সুব্রত সাহা। তিনি বলেছেন, 'এখানে যাঁরা উপস্থিত হয়েছেন প্রত্যেকেই কিন্তু পদে থাকা অবস্থায় এখানে এসেছে, প্রত্যেকেই প্রফেসর, এখানে এমআইটি কলেজে আমাদের এগ্রিকালচারের দপ্তরের সঙ্গে ওখানে ইঞ্জিনিয়ারিং পড়ানো হচ্ছে এই উদ্যান পালন দপ্তরের পক্ষ থেকে এবং এই এখানে সেটা পড়ানো হচ্ছে। এই অভিযোগ গুলো অভিযোগের জন্য করা হচ্ছে কিন্তু জেলার উন্নয়নের জন্য করা হচ্ছে না।'
সুব্রত সাহার পুত্র সপ্তর্ষি সাহা বর্তমানে মুর্শিদাবাদ ইঞ্জিনিয়ারিং টেকনোলজিতে কর্মরত। ২০১৯ সালের অগস্টে বহরমপুরের একটি সরকারি গেস্ট হাউস থেকে বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্কের অভিযোগে গ্রেফতার হন। জেলে ছিলেন একমাস।
আরও পড়ুন- বাড়ছে উদ্বেগ, উপসর্গ বদলাচ্ছে ডেঙ্গি, দেখা দিচ্ছে কী কী নতুন সমস্যা ?