বহরমপুর: প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনায় 'দুর্নীতি'র অভিযোগ উঠেছে ভূরি ভূরি। তাতে নেতা-আধিকারকদের রোষের মুখেও পড়ছেন। সেই 'জনরোষের' আশঙ্কায় গণইস্তফা মুর্শিদাবাদে। পঞ্চায়েত প্রধান এবং উপপ্রধান-সহ মোট ১৭ জন ইস্তফা দিলেন শনিবার। কাঁদতে কাঁদতে পদত্যাগ করলেন প্রধান। 


মুর্শিদাবাদের ভরতপুরের মালিহাটি ২ নম্বর পঞ্চায়েত এলাকার ঘটনা। আবাস যোজনায় দুর্নীতির অভিযোগ উঠছে যে ভাবে, তাতেই গণ ইস্তফা দেন সকলে। ইস্তফা দেন ভরতপুর ২ নম্বর পঞ্চায়েতের প্রধান, উপপ্রধান-সহ ১৭ জন।  দুর্নীতির অভিযোগ ঘিরে জনরোষে পড়ার আশঙ্কাতেই পদত্যাগ বলে জানিয়েছেন তাঁরা। 


পদত্যাগ করার সময় এ দিন কেঁদেও ফেলেন পঞ্চায়েত প্রধান। তিনি বলেন, "বুকে ব্যথা নিয়ে পদত্যাগ করছি।" এলাকার দরিদ্র মানুষ, যাঁরা মাটির ঘরে কেনও রকমে দিনপাত করছেন, আবাস যোজনার তালিকায় তাঁদের নাম ওঠেনি বলেও এ দিন মেনে নেন তিনি। 


প্রধান, উপপ্রধান সহ ১৭ জন মেম্বার পদত্যাগ করেন। তাঁরা সকলেই তৃণমূলের। বিডিও অফিসে গিয়ে রিসিভিং সেকশনে গিয়ে পদত্যাগপত্র জমা দেন। বিকেল তিনটে নাগাদ। পদত্যাগের সিদ্ধান্তের কথা জানাতে গিয়ে প্রধান সৈয়দ নাসিরুদ্দিন বলেন, "এমনও দেখা যাচ্ছে যে, বেড়ার বাড়ি। অনেকে হয়ত শীতে থরথর করে কাঁপছে, সেই মানুষগুলো চিৎকার করে আমাদের সামনে কাঁদছে। আমরা কিছুই করতে পারছি না। কীভাবে আমি তাঁদের ঘর দেব?যেভাবে তালিকা করা হয়েছে, তাতে বহু মানুষের নাম বাদ গিয়েছে। আমরা কিছু করতে পারছি না। মানুষ এসে আমাদের জিজ্ঞেস করছেন। সদস্যরা গ্রামে গেলে ক্ষোভের মুখে পড়ব, সেই আশঙ্কায় পদত্যাগ করে দিলাম।"


পঞ্চায়েতের সদস্য মণিকা দাস বলেন, "কেন দিচ্ছি, মানে মাটির বাড়ি, তাঁরা ঘর পাচ্ছে না, তাহলে কী করব বলুন। কারা ঘর পাচ্ছে না। আমাদের গ্রামেই, সব ওয়ার্ডে। তাঁরা তো পাচ্ছে না। তাঁদের নাম বাদ গেছে।তাহলে তাঁরা তো আর পাচ্ছে না। যাঁদের পাকা বাড়ি, তাঁরা পাচ্ছে। এবার আমাদের তো গাল দেবে। বলবে, তাহলে মেম্বারই করছে এগুলো। সেইজন্যই আমরা করছি।"


এ নিয়ে কোনও প্রতিক্রিয়া জানাননি মুর্শিদাবাদ-বহরমপুরে তৃণমূলের সাংগঠনিক জেলা সভাপতি শাওনি সিংহ রায়। বরং জনান, বিষয়টি শুনেছেন তিনি। উচ্চস্তরে কথা বলে বিশদ জানাবেন। কংগ্রেস জানিয়েছে, এই পঞ্চায়েতের তালিকা হবে, সেটা গ্রাম সংসদের সভায় অনুমোদন করতে হবে।