কৃষ্ণেন্দু অধিকারী, কলকাতা : শুক্রবার খড়গপুর পুরসভার ৬ নম্বর ওয়ার্ডে রাস্তা উদ্বোধন করতে গিয়ে বিক্ষোভের মুখে পড়েছিলেন দিলীপ ঘোষ। সেখানে তিনি মেজাজ হারান। 'এই ৫০০ টাকার চাকররা এরা কিছু করতে দেয় না, ঘেউ ঘেউ করে' বলে মন্তব্য করেছিলেন। মহিলাদের প্রতি দিলীপ ঘোষ বিরূপ মন্তব্য করেন বলেও অভিযোগ ওঠে। যা নিয়ে রাজ্য রাজনীতিতে সমালোচনার ঝড় বয়ে যায়। কিন্তু নিজের অবস্থান থেকে এক বিন্দুও সরেননি বিজেপির প্রাক্তন রাজ্য সভাপতি। এই অবস্থায় এবার খড়গপুরের ঘটনায় দিলীপের পাশেই দাঁড়ালেন তৃণমূল বিধায়ক হুমায়ুন কবীর। 'এমপি ফান্ডের টাকায় রাস্তার উদ্বোধন করতে গিয়েছিলেন। সেটাতে বাধা দেওয়ার কোনও দরকার নেই। কেন বাধা দিতে গেল ?' স্পষ্ট বললেন ভরতপুরের তৃণমূল বিধায়ক।   


হুমায়ুন বলেন, "দিলীপদার বক্তব্যকে আমি সমর্থন করি। কেন করি ? ২০১৫ সালের আগে দিলীপ ঘোষ নামক কোনও ব্যক্তি বিজেপির রাজ্য সভাপতি হবেন তা কেউ জানতেন না। আর চিনতেনও না। পরিচিতিই ছিল না। ঝাড়গ্রামের বোধ হয় বাসিন্দা। সেখানকার মানুষজন চিনতেন। ২০১৫ সালে রাজ্য সভাপতি হওয়ার পর ২০১৬ সালে খড়গপুরে দাঁড়িয়ে বিধায়ক হয়েছেন। ২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনে ২ থেকে ১৮টি আসন এনে দিয়েছেন। ২০২১-এ ওঁর নেতৃত্বেই ৭৭ হয়েছে। কিন্তু, ওই ভদ্রলোককে তাঁর দলের মধ্যেই, এই শুভেন্দুর মতো লোকরা...তাঁর অ্যাডজাস্টিং একটা এমপি সিট, সেখান থেকে তাঁকে সরিয়ে বর্ধমানে পাঠিয়ে দিলেন। এই ধরনের লোকের মেজাজ কী করে ঠিক থাকে বলুন ! দলের লোকরা যদি অ্যাডজাস্টিং জায়গা থেকে সরিয়ে ওই একজন মহিলাকে দাঁড় করিয়ে দিয়ে, তিনিও হারলেন, ওঁকেও হারালেন। দিলীপদা কোন ধৈর্য্য ধরবেন ? দিলীপদাকে তো এটা করতেই হবে। এর আগেও দিলীপদাকে অনেক লাঞ্ছনা, গো ব্যাক দিলীপ ঘোষ, তাঁর গাড়ি ঘেরাও করে অনেক হেনস্থা করা হয়েছে। আমি হলেও এটা করতাম। আমাকে যদি কেউ বারবার আক্রমণ করে, স্বাভাবিক চলাফেরায় বাধা দেয়, তাতে তো....।"


এবিপি আনন্দর প্রতিনিধি তাঁকে প্রশ্ন করেন, কিন্তু যাঁরা করছেন তাঁরা তো তৃণমূল সমর্থক ? এর উত্তরে তৃণমূল বিধায়ক বলেন, "তৃণমূল করছে, না বিজেপি করছে...একজন মানুষ তো করছে। তৃণমূলের যেমন দল করার অধিকার রয়েছে, তাঁর যেমন নির্বাচিত হওয়ার শখ-সাধ রয়েছে, দিলীপ ঘোষ তো এমএলএ ছিলেন, তারপর এমপি হলেন। দলের একশ্রেণির লোক তাঁকে চক্রান্ত করে তাঁর এক্সিস্টিং সিট থেকে তাঁকে বর্ধমান পাঠিয়ে দিয়ে হারিয়ে দিল, সেই লোকটার মেজাজ কোনও দিন ঠিক থাকে ?"


তাঁকে আরও প্রশ্ন করা হয়, আপনি বলছেন, দিলীপ ঘোষ যেটা বলেছেন সেটাকে আপনি সমর্থন করেন ? ভরতপুরের তৃণমূল বিধায়কের জবাব, "অবশ্যই করি। একটা কারণেই করি। দিলীপ ঘোষকে যদি কেউ ধাক্কা দেন...আপনার বারবার বলছেন আমি কেন ঠুসে দেব বলেছি। বলেছি, চ্যাংদোলা করলে ঠুসে দেব। চ্যাংদোলা থেকে যদি উনি (শুভেন্দু অধিকারী) পিছিয়ে আসেন, আমারও ঠুসে দেওয়ার কোনও প্রশ্নই নেই। আপনি আমায় ঢিল ছুড়লে, আমি আপনার বাড়িতে রসগোল্লার হাড়ি পাঠাব নাকি ? এমপি ফান্ডের টাকায় রাস্তার উদ্বোধন করতে গিয়েছিলেন। সেটাতে বাধা দেওয়ার কোনও দরকার নেই। কেন বাধা দিতে গেল ?  "