রাজীব চৌধুরী, মুর্শিদাবাদ: মুর্শিদাবাদের কাশিমবাজার রাজবাড়ির মাতৃ আরাধনা এবার পড়ল ২৮১ বছরে। কথিত আছে, অষ্টাদশ শতাব্দীর শুরুর দিকে কাশিমবাজারে চলে আসেন রেশম ব্যবসায়ী কমলারঞ্জন রায়। তাঁর ছেলে দীনবন্ধু রায় তৈরি করেন কাশিমবাজার ছোট রাজবাড়ি। দীনবন্ধু রায়ের আমলেই শুরু হয় দুর্গাপুজো। ঐতিহ্যের পুজোয় সাবেক দেবী মূর্তি এক চালার। প্রায় তিন শতাব্দী প্রাচীন রাজবাড়িতে, তুলোট কাগজে হাতে লেখা নিজস্ব পুঁথি থেকে মন্ত্র পড়ে পুজো হয়। বাড়ির বর্তমান প্রজন্ম কলকাতা নিবাসী হলেও, পুজো এলেই জেগে ওঠে রাজবাড়ি। ইতিহাসের গন্ধ মাখা রাজবাড়িতে সাতজন পুরোহিতে পুজো করেন। করোনাসুরের কারণে এবারও মন ভাল নেই রাজবাড়ির। সবাইকে যে ডাকা যাবে না। জন অরণ্য থেকে দূরে থেকে এবার মাতৃ আরধানা কাশিমবাজার ছোট রাজবাড়িতে।
অবিভক্ত বাংলার সমৃদ্ধ জমিদার পরিবারগুলির মধ্যে অন্যতম ছিল মুর্শিদাবাদের কাশিমবাজারের রায় পরিবার। সাবেকিয়ানা ও ঐতিহ্যে আজও অমলিন সেই কাশিমবাজার ছোট রাজবাড়ির পুজো! নামে রাজবাড়ির পুজো। আসলে জমিদার বাড়ির পুজো। তিন খিলানের নাট মন্দির! এখানেই পুজো হয় পার্বতীর। একচালার সাবেক দেবী মূর্তি! রীতি মেনে রথের দিন কাঠামো পুজো হয়। কাশিমবাজার ছোট রাজবাড়ির সদস্য সুপ্রিয়া রায় জানালেন, রথের দিন কাঠামোতে মাটি দিয়ে পুজো শুরু হয় পাঠ করে।
কাশিমবাজার ছোট রাজবাড়ির সদস্য প্রশান্ত রায় জানালেন, ' ১৭০৪ সালে আমরা কাশিমবাজারে বসতি স্থাপন করে দুর্গাপুজো শুরু করে এই পরিবার, আমরা আগে ছিলাম ভগবানগোলার কাছে ফিরোজপুর নামে একটা বন্দর নগরে। তখন যে রীতি ছিল, সে-কথা পুঁথিতে লেখা আছে, তা নতুন করে স্ক্রিপ্ট করে ল্যামিনেশন করা আছে । সেই অনুসারেই পুজো হয়।
প্রথা মেনে, প্রতিপদের দিন ঘট ভরা হয়। সপ্তমীতে হয় মায়ের প্রাণ প্রতিষ্ঠা। সকালে হয় নবপত্রিকা পুজো। রাজবাড়ি থেকে কাটিগঙ্গা পর্যন্ত শোভাযাত্রা করে পঞ্চমূল ঘট ভরতে যান সদস্যরা।
রাজবাড়িতে কুমারী পুজোর চল রয়েছে। দূর দূরান্ত থেকে সেই পুজো দেখতে আসেন বহু মানুষ।