মুর্শিদাবাদ: ফের গঙ্গা গর্ভে তলিয়ে গেলো দোতলা বাড়ি।  আতঙ্ক মুর্শিদাবাদের (Murshidabad) সামসেরগঞ্জের মহেশটোলা গ্রামে। ভাঙন আতঙ্কে এলাকাজুড়ে রীতিমতো উদ্বেগ ছড়িয়েছে। যে কোনো মুহূর্তে গঙ্গাগর্ভে তলিয়ে যাবার আশঙ্কায় এলাকা ছেড়ে পালাচ্ছেন বাসিন্দারা। 


সম্প্রতি সামসেরগঞ্জের প্রতাপগঞ্জে গঙ্গায় তলিয়ে যায় ঐতিহ্যবাহী কালী মন্দির । ভয়াবহ গঙ্গার ভাঙনের কবলে তলিয়ে যায় মুর্শিদাবাদের (Murshidabad )সামসেরগঞ্জের প্রতাপগঞ্জ-মহেশটোলা এলাকার একমাত্র উপাসনালয় ঐতিহ্যবাহী কালী মন্দির। গত রবিবার গভীর রাতেই গঙ্গায় পড়ে যায় সেই মন্দির। বহু চেষ্টা করেও, মা কালীর মন্দিরকে ভাঙনের হাত থেকে রক্ষা করা গেল না । এখনও অব্যাহত গঙ্গা ভাঙন। মা কালীর মন্দির তলিয়ে যাওয়ায়,  গঙ্গা ভাঙন নিয়ে আতঙ্ক আরও তীব্রতর হয়েছে । কী করবেন, কিছুই বুঝে উঠতে পারছেন না এলাকাবাসী। এদিকে মহেশটোলাতেও একের পর তলিয়ে যাচ্ছে বাড়িঘর। ফলে ভাঙনের হাত থেকে বাড়ির সামগ্রী রক্ষা করতে কয়েকশো পরিবার অন্যত্র আশ্রয়ের সন্ধানে পালাচ্ছেন। বর্ষার শেষ লগ্নে এসে  ভাঙন ঘুম উড়িয়েছে গঙ্গা পাড়ের বাসিন্দাদের।শনিবার বিকেলে গঙ্গা ভাঙ্গনের গ্রাসে যাওয়া শুরু করে সামশেরগঞ্জের মহেশটোলা গ্রাম। চোখের সামনে গঙ্গায় তলিয়ে যায় আস্ত একটা দোতলা বাড়ি। দোতলা বাড়ি গঙ্গায় তলিয়ে যাওয়ায় ভাঙনের আতঙ্কে ঘুম উড়েছে গঙ্গা পাড়ের বাসিন্দাদের।


প্রসঙ্গত, চলতি বছরের  সেপ্টেম্বরের প্রথম সপ্তাহে, গঙ্গা ভাঙনের মুখোমুখি হয় মুর্শিদাবাদের সামশেরগঞ্জ। বোগদাদনগর গ্রাম পঞ্চায়েতের অন্তর্গত প্রতাপগঞ্জ গ্রামে গঙ্গা ভাঙ্গন শুরু হয়। সেসময় তলিয়ে যায় দুটি বাড়ি। আরও বেশ কিছু বাড়ি যে কোনও সময়ে তলিয়ে যাওয়ার আশঙ্কা করা হয়েছিল সেসময়। বিপজ্জনক পরিস্থিতিতে আতঙ্কিত মানুষজন তাদের বাড়িঘর ভেঙে নিয়ে নিরাপদ দূরত্বে সরে যাওয়ার চেষ্টা করেন। সেসময়, ভিটেছাড়া  মানুষগুলোর দাবি তোলেন, প্রশাসনকে বারবার ভাঙনের কথা জানানো হয়। কিন্তু, কোনও লাভ হয়নি বলে জানান তাঁরা। সেসময় প্রতাপগঞ্জে ভাঙনে ক্ষতিগ্রস্ত এরিনা খাতুন বলেন, 'আমাদের ক্ষতিপূরণ চাই, আমরা কোথায় যাব, আমাদের কিছু নেই, কোনও জায়গা নেই।’ দেখতে দেখতে দুর্গা পুজো পেরিয়ে এখন অক্টোবারের মাঝামাঝি। আর আশঙ্কা মিলিয়ে ফের গঙ্গা ভাঙ্গনের মুখোমুখি এবারও সামশেরগঞ্জ। জানা গিয়েছে,  এদিন বিকেলে এলাকায় নতুন করে শুরু হয় গঙ্গা ভাঙন তাতেই নিমেষে তলিয়ে যায় দোতলা বাড়িটি। যদিও সেই সময় বাড়িতে কেউ ছিল না।


আরও পড়ুন, 'কাজের সুযোগ পাইয়ে দিয়েছেন মানিক', তাপসকে নিয়ে কী দাবি ইডির ?


প্রসঙ্গত, শুধুই গঙ্গা ভাঙ্গনের শিকার মুর্শিদাবাদ নয়, চলতি বছরের সেপ্টেম্বরের শুরুতে এমন ভয়াবহ ক্ষতির মুখোমুখি হয়েছে মালদাও। ভূতনির চরে ভাঙন ধরাচ্ছে গঙ্গা ও কোশি নদী।  মানিকচকের পাশাপাশি, ভাঙন  হয় রতুয়াতেও। বিলাইমারি ও মহানন্দাটোলা এলাকায় কোশি নদীর পাড় ভাঙন ধরে। নদীগর্ভে তলিয়ে যায় কৃষি জমি। গঙ্গার পাশাপাশি রুদ্রমূর্তি ধারণ করে কোশি নদীও। তার জেরে ভয়াবহ ঘটনা ঘটে যায় মালদায়। গঙ্গা গর্ভে তলিয়ে যায় বাঁধের ১০০ মিটার অংশ। মালদার মানিকচকের ভুতনির চরের কালুটন এলাকায় ঘটনাটি ঘটে।  আতঙ্কে সেসময় অন্যত্র চলে যান স্থানীয়রা