রাজীব চৌধুরী,মুর্শিদাবাদ: সামশেরগঞ্জে (Samserganj) গঙ্গায় তলিয়ে গেল দোতলা বাড়ি। চোখের সামনে গঙ্গায় তলিয়ে  গেল আস্ত একটা বাড়ি। শনিবার বিকেলে ফের গঙ্গা ভাঙ্গনের গ্রাসে সামশেরগঞ্জের মহেশটোলা গ্রাম। চোখের সামনে গঙ্গায় তলিয়ে গেল আস্ত একটা দোতলা বাড়ি। দোতলা বাড়ি গঙ্গায় তলিয়ে যাওয়ায় ভাঙনের আতঙ্কে ঘুম উড়েছে গঙ্গা পাড়ের বাসিন্দাদের।


চলতি বছরের  সেপ্টেম্বরের প্রথম সপ্তাহে, গঙ্গা ভাঙনের মুখোমুখি হয় মুর্শিদাবাদের সামশেরগঞ্জ। বোগদাদনগর গ্রাম পঞ্চায়েতের অন্তর্গত প্রতাপগঞ্জ গ্রামে গঙ্গা ভাঙ্গন শুরু হয়। সেসময় তলিয়ে যায় দুটি বাড়ি। আরও বেশ কিছু বাড়ি যে কোনও সময়ে তলিয়ে যাওয়ার আশঙ্কা করা হয়েছিল সেসময়। বিপজ্জনক পরিস্থিতিতে আতঙ্কিত মানুষজন তাদের বাড়িঘর ভেঙে নিয়ে নিরাপদ দূরত্বে সরে যাওয়ার চেষ্টা করেন। সেসময়, ভিটেছাড়া  মানুষগুলোর দাবি তোলেন, প্রশাসনকে বারবার ভাঙনের কথা জানানো হয়। কিন্তু, কোনও লাভ হয়নি বলে জানান তাঁরা। সেসময় প্রতাপগঞ্জে ভাঙনে ক্ষতিগ্রস্ত এরিনা খাতুন বলেন, 'আমাদের ক্ষতিপূরণ চাই, আমরা কোথায় যাব, আমাদের কিছু নেই, কোনও জায়গা নেই।’ দেখতে দেখতে দুর্গা পুজো পেরিয়ে এখন অক্টোবারের মাঝামাঝি। আর আশঙ্কা মিলিয়ে ফের গঙ্গা ভাঙ্গনের মুখোমুখি এবারও সামশেরগঞ্জ। জানা গিয়েছে,  এদিন বিকেলে এলাকায় নতুন করে শুরু হয় গঙ্গা ভাঙন তাতেই নিমেষে তলিয়ে যায় দোতলা বাড়িটি। যদিও সেই সময় বাড়িতে কেউ ছিল না।


প্রসঙ্গত, শুধুই গঙ্গা ভাঙ্গনের শিকার মুর্শিদাবাদ নয়, চলতি বছরের সেপ্টেম্বরের শুরুতে এমন ভয়াবহ ক্ষতির মুখোমুখি হয়েছে মালদাও। ভূতনির চরে ভাঙন ধরাচ্ছে গঙ্গা ও কোশি নদী।  মানিকচকের পাশাপাশি, ভাঙন  হয় রতুয়াতেও। বিলাইমারি ও মহানন্দাটোলা এলাকায় কোশি নদীর পাড় ভাঙন ধরে। নদীগর্ভে তলিয়ে যায় কৃষি জমি। গঙ্গার পাশাপাশি রুদ্রমূর্তি ধারণ করে কোশি নদীও। তার জেরে ভয়াবহ ঘটনা ঘটে যায় মালদায়। গঙ্গা গর্ভে তলিয়ে যায় বাঁধের ১০০ মিটার অংশ। মালদার মানিকচকের ভুতনির চরের কালুটন এলাকায় ঘটনাটি ঘটে।  আতঙ্কে সেসময় অন্যত্র চলে যান স্থানীয়রা। গ্রামবাসীদের দাবি গঙ্গা গর্ভে বিলীন হয়ে যায় চার-চারটি বাড়ি। খবর পেয়ে সেসময় ঘটনাস্থলে  পৌঁছে যান সেচ দফতরের কর্মীরা।


 আরও পড়ুন, ৪৫ বছরেই সব শেষ, দক্ষিণ দমদমে ডেঙ্গি আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু গৃহবধূর 


উল্লেখ্য, রাজ্যে গঙ্গার দ্বিতীয় বৃহত্তম চর ভূতনি। গঙ্গা, ফুলহার ও কোশি, এই ৩টি নদী ঘেরা ভূতনির চর। স্থানীয় সূত্রে খবর, গত কয়েকবছর কোশি নদীতে ভাঙন হয়নি। কিন্তু, এবার ৫ কিলোমিটার এলাকাজুড়ে ব্যাপক ভাঙন শুরু হয়েছে। ৭টি গ্রাম যে কোনও মুহূর্তে নদীগর্ভে তলিয়ে যেতে পারে বলে আশঙ্কা। সর্বস্ব খুইয়ে ফেলার আগেই বাড়ির ইট, কাঠের দরজা, জানলা খুলে নিয়ে অন্যত্র চলে যান নদী পাড়ের বাসিন্দারা।