হাওড়া : নবান্ন অভিযান ঘিরে কার্যত রণক্ষেত্র হাওড়া ব্রিজে। ব্রিজের ওপর একের পর এক কাঁদানে গ্যাসের শেল ফাটানো হচ্ছে। দাঁড়িয়ে থাকার উপায় নেই। নবান্ন অভিযান ঘিরে কার্যত তুলকালাম পরিস্থিততি হাওড়া ব্রিজে। বিক্ষোভকাীদের ঠেকাতে টানা জলকামান ছোড়া হচ্ছে।


বিশাল গার্ডরেল। ব্যারিকেডের উপর এক যুবক জাতীয় পতাকা হাতে দাঁড়িয়ে পড়লেন। বিক্ষোভকারীদের তখন বলতে শোনা যায়, 'আমাদের এইভাবে দমিয়ে রাখা যাবে না। আমরা জাস্টিস চাইছি জাস্টিস, লিগাল জাস্টিস চাইছি।' পরিস্থিতি ক্রমশ উত্তপ্ত হয়ে উঠতে শুরু করে । এই সময়ই জলকামান থেকে জল ছোড়া শুরু হয়। হাওড়া ব্রিজে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। বিভিন্ন দিক থেকে মিছিল এসেছিল। জলকামান চলার মধ্যেই ব্যারিকেড ভেঙে ফেলার চেষ্টা করা হয়। পাশাপাশি পরপর টিয়ার গ্যাসের শেল ফাটানো হয় একের পর এক। জলের সেই তোড়ের সামনেই জাতীয় পতাকা হাতে লাল পোশাকে দাড়িওয়ালা একজন টানা দাঁড়িয়ে ছিলেন। কিন্তু, জলের তোড় বাড়তে থাকায় দাঁড়িয়ে থাকার উপায় ছিল না। গেরুয়া বসন পরে জাতীয় পতাকা হাতে আন্দোলনে যোগ দিতে এসেছিলেন। কিন্তু, পুলিশের টানা জলকামানের সামনে কার্যত দাঁড়াতে পারেননি। এই পরিস্থিতিতে পুলিশের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দেন এক বিক্ষোভকারী। তিনি বলেন, "চুড়ি পরে বসে থাকুক এরা। এদের বাড়িতেও মা-বোন আছে। কি না, আমরা মহিলাদের সুরক্ষার জন্য আন্দোলন করতে এসেছি। কারো হাতে তো কোনও অস্ত্র নেই। জাতীয় পতাকা নিয়ে এসেছি আমরা।"   


পরিস্থিতি ক্রমশ ভয়াবহ আকার নেয়। প্রচুর মহিলা-পুরুষ দাঁড়িয়ে ছিলেন তখনও। তার মধ্যেই পরপর কাঁদানে গ্যাসের শেল ফাটানো শুরু হয়। জলকামান ছোড়া হয়। চরম উত্তেজনা ছড়ায় ফোরশোর রোডেও। পুরো বিশাল ব্যারিকেড ভেঙে ফেলা হয়। সঙ্গে সঙ্গে জলকামান চালাতে শুরু করে পুলিশ। জল কামানের সামনেই জাতীয় পতাকা হাতে প্রতিরোধের চেষ্টা করা হয়। সঙ্গে সঙ্গে সাইরেন বাজানো শুরু হয়ে যায়।


আঁচ ছিলই। সেইমতোই সকাল থেকেই যুদ্ধকালীন তৎপরতায় প্রস্তুতি চোখে পড়ছিল। নিশ্চিদ্র নিরাপত্তা বলয়ে মুড়ে ফেলা হয় নবান্ন ও তার আশপাশের চত্বর। কিন্তু, আরজি কর কাণ্ডের প্রতিবাদে কার্যত শহরের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে এদিন বহু সংখ্যক মানুষ শামিল হন। 'পশ্চিমবঙ্গ ছাত্র সমাজ'-এর আহ্বানে এই আন্দোলন আহ্বান করা হলেও, এদিন সাঁতরাগাছি হোক বা হাওড়া ব্রিজ চত্বর, হাওড়া ময়দান হোক ফোরশোর রোড চত্বর সর্বত্রই মিছিলে চোখে পড়ল বহু সংখ্যক মহিলাদের।


আপনার পছন্দের খবর আর আপডেট পাবেন আপনার পছন্দের চ্যাটিং প্ল্যাটফর্ম হোয়াটস অ্যাপেও। যুক্ত হোন ABP Ananda হোয়াটস অ্যাপ চ্যানেলে।