কলকাতা : অবশেষে মুখ্যমন্ত্রী-জুনিয়র ডাক্তারদের বৈঠকের লাইভ স্ট্রিমিং । নবান্নে মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকে ১৭ জন জুনিয়র ডাক্তারকেই অনুমতি। নবান্নের বৈঠকে ৫ মেডিক্যাল কলেজের অধ্যক্ষ, MSVPও উপস্থিত। বৈঠক চলাকালীন ওয়েস্ট বেঙ্গল জুনিয়র ডক্টর্স ফ্রন্টের তরফে জুনিয়র চিকিৎসক দেবাশিস হালদার বক্তব্য রাখার সময় উঠে আসে অভীক দে ও বিরুপাক্ষ বিশ্বাসের নাম। যাতে সঙ্গে সঙ্গে আপত্তি জানান মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁদের কথোপকথনের ধরন অনেকটা এরকম... 


দেবাশিস হালদার : "আমরা চাই না আমাদের মধ্যে দিয়ে ভবিষ্যতের অভীক, ভবিষ্যতের বিরুপাক্ষ তৈরি হোক। আমরা একদমই এটা চাই না।" 


মুখ্যমন্ত্রী তখনই তাঁকে থামিয়ে বলেন, "আমাদের কারো নাম উল্লেখ করা উচিত নয়। তাহলে, আমাকেও অনেক নাম উল্লেখ করতে হবে। তোমরা তোমাদের কথা বলতে পারো। যে উপস্থিত নেই, তাঁকে তো তাঁর বক্তব্য রাখার সুযোগ করে দিতে হবে।" 


দেবাশিস হালদার বলেন, "ওকে ম্যাম। কিন্তু, আমাদের তাঁদের নামে অভিযোগ আছে। যখন অভিযোগ জানাব, তখন কি জানাতে পারব ? এখন বলছি না আমি।"


মুখ্যমন্ত্রী : "অভিযোগ তো সবার বিরুদ্ধে সবার আছে। আমার মনে হয়, তোমার কথাগুলো বলো আগে।"


দেবাশিস হালদার বলেন, "আচ্ছা। ঠিক আছে, ম্যাম।" 


অভীক দে-র বিরুদ্ধে অভিযোগ-


৯ অগাস্ট আর জি কর মেডিক্যালে তরুণী  চিকিৎসকের মৃতদেহ উদ্ধারের দিন তৎকালীন স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিকর্তা কৌস্তভ নায়েক এবং আর জি কর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের রোগী কল্যাণ সমিতির তদানীন্তন চেয়ারম্যান সুদীপ্ত রায় যখন সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হয়েছিলেন, তখন তাঁদের ঠিক পিছনেই দাঁড়িয়েছিলেন বিরূপাক্ষ বিশ্বাস ও অভীক দে। রাজ্য়ের বিভিন্ন সরকারি মেডিক্য়াল কলেজে থ্রেট কালচার চালানোর অভিযোগ উঠেছে বিরূপাক্ষ এবং অভীক দে-র বিরুদ্ধে। এঁরা দুজনেই সন্দীপ ঘোষ ঘনিষ্ঠ। আর এদের নিয়ম-ভাঙার ইতিহাস এতি দীর্ঘ। অভীক যে নিয়মের তোয়াক্কাই করেন না, তার প্রমাণ মিলেছে এসএসকেএম-এর ডিনের লেখা একটি চিঠিতে। অভীক দে-র বেনিয়মে কার্যত অতিষ্ঠ হয়ে যান তিনি। তারপর স্বাস্থ্যভবনে চিঠিও লিখেছিলেন এসএসকেএম-এর ডিন। সেই চিঠিতে উঠে এসেছে চাঞ্চল্যকর তথ্য । ওই চিঠি অনুসারে, আর জি কর হাসপাতালের  চিকিৎসক ধর্ষণ-খুনের দিন সকাল অর্থাৎ ৮ অগাস্ট থেকেই এসএসকেএমে আসেননি অভীক দে। অথচ ঠিক তার পর দিন আরজি করে ক্রাইম সিনে ভাইরাল ভিডিও-য় অভীককে দেখা গিয়েছে বলে অভিযোগ। নিজের ডিপার্টমেন্ট, নিজের ইউনিট, এমনকী এসএসকেএম কর্তৃপক্ষ, কারও থেকেই লম্বা ছুটির অনুমতি নেননি অভীক দে। অথচ তিনি আসছেনই না। কিন্তু তিনি আছেন শহরেই।


SSKM হাসপাতালের সার্জারি বিভাগের প্রথম বর্ষের PGT। আরজি কর কাণ্ডের প্রেক্ষিতে সাসপেন্ড করেছিল স্বাস্থ্যভবন। শুধু সাসপেনশন নয়, তাঁর বিরুদ্ধে শুরু হয় বিভাগীয় তদন্তও। অভীক দের- বিরুদ্ধে রয়েছে পাহাড়প্রমাণ অভিযোগ। এই সব অভিযোগ খতিয়ে দেখতে তদন্ত কমিটি গঠন করে স্বাস্থ্যভবন। 


বিরুপাক্ষ বিশ্বাসের বিরুদ্ধে অভিযোগ-


বর্ধমান মেডিক্য়ালের প্রাক্তন চিকিৎসক বিরূপাক্ষ বিশ্বাস, SSKM-এর পোস্ট গ্র্য়াজুয়েট ট্রেনি অভীক দে। একদিকে আর জি কর মেডিক্য়ালে চিকিৎসকের মৃতদেহ উদ্ধারের দিন সেখানে উপস্থিতি।
অন্য়দিকে, দীর্ঘদিন ধরে বিভিন্ন মেডিক্য়াল কলেজে থ্রেট কালচার চালানো। এই দুই অভিযোগে নাম জড়িয়েছে বর্ধমান মেডিক্য়ালের প্রাক্তন চিকিৎসক বিরূপাক্ষ বিশ্বাসের।