প্রদ্যোৎ সরকার, কৃষ্ণনগর: পরিশ্রুত পানীয় জল (Drinking Water) প্রকল্পের উদ্বোধন হল নদিয়ার (Nadia) কৃষ্ণনগরে (Krishnanagar)। পুরভোটের (Municipal Election) মুখে তা নিয়ে জল গড়াল রাজনীতির ময়দানে।
২০১৮ সালে কৃষ্ণনগরের এই জল প্রকল্পের উদ্বোধন করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। জল প্রকল্পের জন্য খরচ হয়েছে প্রায় ৭০ কোটি টাকা। সোমবার এই প্রকল্পের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন কৃষ্ণনগরের প্রশাসক এবং জেলাশাসক। পুরসভার দাবি, ১৫ দিনের মধ্যে পুর এলাকার প্রতিটি ঘরে পৌঁছবে পরিশ্রুত পানীয় জল। আর এ নিয়েই পুরভোটের মুখে তুঙ্গে উঠেছে রাজনৈতিক চাপানউতোর। নদিয়া উত্তর সাংগঠনিক জেলা বিজেপি মুখপাত্র সন্দীপ মজুমদারের দাবি, ‘এটা কেন্দ্রীয় সরকারের প্রকল্প, ২০১৮ সালে কেন্দ্রীয় সরকার তার জন্য অর্থ বরাদ্দ করেছিল। কৃষ্ণনগর পৌরসভা নির্বাচনের আগে তারা জল প্রকল্পের উদ্বোধন করলেন ঘটা করে, এটা লোক দেখানো।’
পাল্টা কৃষ্ণনগর পুরসভার প্রশাসক ও তৃণমূল নেতা নরেশকুমার দাস বলেছেন, ‘আগামী ১৫ দিনের মধ্যে সকলের বাড়িতে জল পৌঁছে যাবে। ইঞ্জিনিয়ারদের অসুবিধা ও ফান্ডের সমস্যার জন্য কাজ আটকে ছিল। বিরোধীরা বিরোধীদের মতো বলবে।’
সবমিলিয়ে পুরভোটের আগে জল প্রকল্প নিয়ে তুঙ্গে রাজনীতি।
কয়েকদিন আগেই নদিয়ার অপর এক পুরসভা রানাঘাটে কয়েকটি প্রকল্পের উদ্বোধন ও শিলান্যাস হয়। এই অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন পুর ও নগরোন্নয়ন মন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য এবং কারামন্ত্রী উজ্জ্বল বিশ্বাস। যে প্রকল্পগুলির উদ্বোধন করেন তাঁরা, এর মধ্যে রয়েছে গৃহহীনদের জন্য আবাস নীড়াশ্রয়, পার্ক ও বিপণন কেন্দ্র এবং চূর্ণী নদীর ধারে পর্যটন কেন্দ্র ‘বৈকালিক’। এর পাশাপাশি বিপণন কেন্দ্র স্বয়ংসিদ্ধা, কর্মতীর্থ প্রকল্পের শিলান্যাসও করেন তাঁরা।
পুর নির্বাচনের আগে একাধিক প্রকল্পের উদ্বোধন নিয়ে কটাক্ষ করেন রানাঘাট উত্তর-পশ্চিমের বিধায়ক তথা নদিয়া দক্ষিণ সাংগঠনিক জেলা বিজেপির সভাপতি পার্থসারথি চট্টোপাধ্যায়। বিজেপি বিধায়কের দাবি, ‘পুরসভা নির্বাচনের আগে এটা চমক ছাড়া আর কিছুই নয়। তৃণমূল আসলে ভয় পাচ্ছে ভারতীয় জনতা পার্টিকে। রানাঘাটের মানুষ বিষয়গুলি বোঝেন। এগুলির কাজ অনেকদিন ধরেই চলছিল, নতুন কিছু নয়। তাছাড়া ১১ মাসে এটা কোনওভাবেই সম্ভব হয় না। গত ১১ মাসে এদের উন্নয়ন হচ্ছে ফেসবুকের উন্নয়ন। আবার সেগুলিকে ফেসবুকে দেওয়ার জন্যই ঘটা করে উদ্বোধন হল।’
রাজ্যের পুর ও নগর উন্নয়নমন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য পাল্টা বলেন, ‘একটা কাজ করেছে, তার তো উদ্বোধন হয়। আমরা তো দেখছি কেন্দ্রীয় সরকারের কাজ না করেই উদ্বোধন হয়ে যাচ্ছে। সুতরাং বিরোধীরা কী বলল কিছু যায় আসে না। ভোটের আগে উদ্বোধন কোনও কৌশল নয়।’