সমীরণ পাল, নদিয়া: সীমান্তে নজরদারি চালাতে গিয়ে ফের পাচারচক্রের হদিশ মিলল। সীমান্তরক্ষী বাহিনীর হাতে ধরা পড়ল এক পাচারকারী। তাঁর কাছ থেকে ১৮ লক্ষ ৩৬ হাজার টাকা মূল্যের রুপো উদ্ধার করা হয়েছে। গ্রেফতার হয়েছেন ওই পাচারকারী। BSF দক্ষিণ বঙ্গ সীমান্ত এবং শুল্ক বিভাগের যৌথ অভিযানে এই পাচারচক্রের পর্দাফাঁস হয়েছে। এই ঘটনায় আর কে বা কারা জড়িত, কোথায় পাঠানো হচ্ছিল ওই রুপো, সেই নিয়ে শুরু হয়েছে তদন্ত। (Nadia News)


BSF সূত্রে জানা গিয়েছে, ২৬ জানুয়ারি অর্থাৎ শুক্রবার দক্ষিণবঙ্গ সীমান্তের অন্তর্গত ৮৬ নং ব্যাটেলিয়নের সীমান্ত চৌকি বিআরসি পুরায় BSF জওয়ান এবং করিমপুরের শুল্ক বিভাগের সঙ্গে মিলে নদিয়া জেলার সীমান্ত এলাকায় একটি যৌথ অনুসন্ধান চালায়। তাতেই ২৪ কেজি রুপো-সহ এক চোরাকারবারীকে গ্রেফতার করা সম্ভব হয়। ধৃত চোরাকারবারী ভারতীয় নাগরিক বলেই জানা গিয়েছে। (India Bangladesh Border)


ধৃত চোরাকারবারীকে সৈকত মণ্ডল নামে শনাক্ত করা গিয়েছে। নদিয়ার মথুরাপুরের বাসিন্দা তিনি। জানা গিয়েছে, জামতলা থেকে এক ব্যক্তির কাছ ছেকে ওই রুপো সংগ্রহ করা হয়। বাংলাদেশে ওই রুপো নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল। কিন্তু সীমান্ত পেরনোর আগেই তাঁকে ধরে ফেলা হয়। BSF-এর তরফে জানানো হয়েছে, প্রজাতন্ত্র দিবসের সন্ধেয় একাধিক জায়গা নাকাতল্লাশি চলছিল। BSF এবং শুল্ক দফতর তল্লাশি চালাচ্ছিল সীমান্ত লাগোয়া রাস্তা দিয়ে এগনো যানবাহনেও। 


আরও পড়ুন: Supreme Court: বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের নির্দেশের বিরুদ্ধে SLP দায়ের করল রাজ্য, সোমবার শুনানি সুপ্রিম কোর্টে


সেই সময়ই, সন্ধে ৭টা নাগাদ মথুরাপুর রোডের অট স্ট্যান্ডের কাছে গাড়িতে তল্লাশি চলাকালীন, করিমপুর মার্কেট থেকে মথুরাগামী এক মোটরসাইকেলের চালক আচমকা থমকে যান। নাকাতল্লাশি দেখে পিছন ফিরে দৌড়তে শুরুতে শুরু করেন তিনি। কিন্তু তাড়া করে তাঁকে ধরে ফেলেন BSF জওয়ানরা। তল্লাশি চালাতে গিয়ে তাঁর কাছ থেকে রুপো ভর্তি ব্যাগ উদ্ধার হয়। সদুত্তর দিতে না পারায় গ্রেফতার করা হয় তাঁকে। 


BSF সূত্রে খবর, যে ২৪ কেজি রুপো বাজেয়াপ্ত কার হয়েছে, তার বর্তমান বাজারমূল্য প্রায় ১৮ লক্ষ ৩৬ হাজার টাকা। ধৃত চোরাকারবারীকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। এই ঘটনায় আর কে বা কারা জড়িত রয়েছে, তা জানার চেষ্টা চলছে। কার কাছ থেকে কোথায় ওই রুপো পৌঁছে দেওয়া হচ্ছিল, চেষ্টা চলছে তা-ও জানার। তবে এখনও পর্যন্ত সেই নিয়ে বিশদ তথ্য প্রকাশ করা হয়নি। ধৃত ব্যক্তিকে বাজেয়াপ্ত করা রুপো-সহ করিমপুর শুল্ক দফতরের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে। শুল্ক দফতরই পরবর্তী পদক্ষেপ করবে।


এই ঘটনায় দক্ষিণবঙ্গ সীমান্তের জনসংযোগ কর্মকর্তা শ্রী একে  আর্য বিবৃতি দেন।  এই সাফল্যে আনন্দ প্রকাশ করেন তিনি। BSF এবং শুল্ক দফতকেক ভূয়সী প্রশংসা করেন তিনি। তিনি জানিয়েছেন, সীমান্তে কর্তব্যরত জওয়ানরা কতটা সতর্ক, এই ঘটনাই তার প্রমাণ। কোনও পরিস্থিতিতেই চোরাচালানের পথ অবলম্বন করা উচিত নয় বলে বার্তা দিয়েছেন তিনি।  BSF চোরাচালান েবং সীমান্ত সংলগ্ন এলাকায় অপরাধমূলক কাজকর্মকে প্রশ্রয় দেবে না, অপরাধীরা রেহাই পাবেন না বলেও জানান তিনি।