সুজিত মণ্ডল, নদিয়া: বাজি কারখানায় বিস্ফোরণের পর তৎপর হয়েছে নদিয়ার রাণাঘাট পুলিশ। শুক্রবার কল্যাণীর রথতলা এলাকায় বাজি কারখানায় বিস্ফোরণের পরই পুলিশের তরফ থেকে বিশেষ অভিযান চালানো হয় বাজি কারখানার মালিক সাধন বিশ্বাসের বাড়ি এলাকায়। সেখান থেকেই প্রচুর পরিমাণে নিষিদ্ধ শব্দবাজি তৈরির সরঞ্জাম এবং নিষিদ্ধ শব্দবাজি বাজেয়াপ্ত করে কল্যাণী থানার পুলিশ। যদিও আজ শনিবার ধৃতকে আদালতে তোলা হয়েছিল এবং পুলিশ রিমান্ডে নেওয়া হয়েছে বলে পুলিশ সূত্রে খবর। তবে এই ঘটনার পর অবৈধ বাজির বিরুদ্ধে অভিযান চলবে বলেও জানিয়েছে পুলিশ আধিকারিকরা।
ঠিক কী হয়েছিল?
শুক্রবার দুপুরে কল্যাণী পুরসভার ২০ নম্বর ওয়ার্ডের রথতলায় জনবহুল এলাকায় বিস্ফোরণ হয়। কারখানার চাল উড়ে যায়। চার-চারটি ঝলসানো মৃতদেহ উদ্ধার হয়। আশঙ্কাজনক অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন আরও একজন। তৃণমূল পরিচালিত কল্যাণী পুরসভার দাবি, বাজি বিক্রির অনুমতি ছিল। যদিও দমকল স্পষ্ট জানিয়েছে, পুরোটাই ছিল বেআইনি। বিস্ফোরণস্থল থেকে রানাঘাট পুলিশ জেলার সুপারের অফিসের দূরত্ব মেরেকেটে এক কিলোমিটার। প্রশ্ন উঠছে, এরকম জনবহুল জায়গায় বেআইনি বাজির কারখানা এতদিন চলছিল কীভাবে? কোথায় ছিল পুলিশের নজরদারি?
উল্লেখ্য, কল্যাণী পুরসভার ২০ নম্বর ওয়ার্ডের অন্তর্গত রথতলা থেকে, রানাঘাট পুলিশ জেলার সুপারের অফিসের দূরত্ব মেরেকেটে এক কিলোমিটার। আর এখানেই রমরমিয়ে চলছিল বেআইনি বাজির কারবার। তৃণমূল পরিচালিত কল্যাণী পুরসভার চেয়ারম্যান বলছেন, শুধু বাজি বিক্রির অনুমতি ছিল। অথচ মৃতের পরিবারই স্পষ্ট জানাচ্ছে, শব্দবাজি বানানো হত।
বিস্ফোরণের পরেই চারদিকে ধোঁয়া, পুড়ে ছাই হয়ে যায় সবকিছু। তার মধ্যে থেকেই বের করা করা হয় একের পর এক ঝলসানো মৃতদেহ। তবে কীভাবে জনবহুল এলাকায় তৈরি হল বাজি কারখানা ? সেই নিয়েই উঠছে প্রশ্ন। এদিকে বিস্ফোরণের তীব্রতা এতটাই ছিল যে, গোটা এলাকা কেঁপে ওঠে। গোটা বাজি কারখানাটিই উড়ে যায় বিস্ফোরণের তীব্রতায়। দমকল আসার আগে স্থানীয়রাই টিউবওয়েল থেকে বালতি বালতি জল এনে আগুন নেভানোর চেষ্টা করে।
স্থানীয় এক মহিলা বলেন, "সারা পাড়াতেই বাজি হয়। ভয় তো লাগেই। কী করব ? আমরা সাধারণ লোক।" অপর এক মহিলা বলেন, "এখানে অনেক কারখানা আছে। এখানে আছে, গঙ্গার ধারে আছে...প্রচুর কারখানা আছে এখানে। যে কোনও সময় বিপদ ঘটতে পারে। কে দেখবে ? কে বলবে ?"