প্রদ্যোৎ সরকার, নদিয়া: গেরুয়াকে সমর্থন বাম ও ঘাসফুল শিবিরের। এমনই ঘটনা দেখা গেল নদিয়ার কৃষ্ণনগরে। সিপিএম ও তৃণমূলের চার জয়ী প্রার্থীর সমর্থনে পঞ্চায়েত বোর্ড দখল করল গেরুয়া শিবির। আর উল্টোদিকে সংখ্যাগরিষ্ঠ আসন পেয়েও বোর্ড গঠন করতে পারল না তৃণমূল।
পাশাপাশি উড়ছে কাস্তে হাতুড়ি ও পদ্ম আঁকা পতাকা। উল্লাসে মাতোয়ারা সিপিএম-বিজেপির কর্মীরা। মতাদর্শগতভাবে বহু যোজন পার্থক্য থাকলেও পঞ্চায়েত স্তরে অন্য কাহিনি। তৃণমূলকে দূরে রাখতে নদিয়ার কৃষ্ণনগরে রুইপুকুর গ্রাম পঞ্চায়েতে বোর্ড গঠনে বিজেপিকে সমর্থন জানাল সিপিএম। আরও চমকের বিষয় হল, বিজেপিকে সমর্থন জানিয়েছেন দুই জয়ী তৃণমূল প্রার্থীও। সব মিলিয়ে অভিনব জোটের সাক্ষী থাকল নদিয়া।
কৃষ্ণনগর ১ ব্লকের রুইপুকুর গ্রাম পঞ্চায়েতের ২২ আসনের মধ্যে, ১৩টি আসনে জেতে তৃণমূল। বিজেপি জেতে ৭টি আসন। সিপিএম জেতে ২টি আসনে। তৃণমূলের এক সদস্যের মৃত্যু হওয়ায়, তাদের আসন সংখ্যা কমে দাঁড়িয়েছে ১২তে। তারপরও, এই পঞ্চায়েতে সংখ্যাগরিষ্ঠ ছিল রাজ্যের শাসকদলই। স্বাভাবিকভাবে তাদেরই বোর্ড গঠনের কথা ছিল। কিন্তু, মঙ্গলবার বোর্ড গঠনের পর একেবারে উল্টে গেল ছবিটা। ২ জয়ী সিপিএম প্রার্থী ও ২ জয়ী তৃণমূল প্রার্থীর সমর্থনে বোর্ড গঠন করল বিজেপি।
তাৎপর্যপূর্ণ বিষয় হল, পঞ্চায়েতের প্রধান মনোনীত হয়েছেন বিজেপিকে সমর্থনকারী জয়ী তৃণমূল প্রার্থী। রুইপুকুর গ্রাম পঞ্চায়েতের জয়ী তৃণমূল সদস্য ইনার আলি শেখের অভিযোগ, বিজেপির কাছে বিক্রি হয়েই এই কাজ করেছে তৃণমূলের ২ জয়ী সদস্য। যদিও রুইপুকুর গ্রাম পঞ্চায়েতে বিজেপিকে সমর্থনকারী তৃণমূল সদস্য ও প্রধান অনুপ বিশ্বাস বলেন, 'এটা সম্পূর্ণ মিথ্যা, জনগণ আমার সঙ্গে আছে, জয়ী মেম্বাররা আমার সঙ্গে আছে আর জনগণের কাজ করার জন্য আমি এটা করেছি।'
জাতীয় স্তরে মোদি সরকারকে উৎখাত করা উদ্দেশে, একজোট হয়েছে কংগ্রেস, তৃণমূল ও সিপিএম। কিন্তু, রাজ্য স্তরে তৃণমূলের বিরুদ্ধে লড়ে যাচ্ছে বিজেপি-কংগ্রেস ও সিপিএম। পঞ্চায়েত স্তরে যে অনেক সমীকরণ বদলে যায়, তার উদাহরণ হয়ে থাকল কৃষ্ণনগরের রুইপুকুর পঞ্চায়েত।