হাঁসখালি : হাঁসখালির (Hanskhali) ঘটনা নিয়ে ট্যুইট রাজ্যপাল জগদীপ ধনকড়ের (Jagdeep Dhankar)। তুললেন একাধিক প্রশ্ন। ট্যুইটারে রাজ্যপাল লিখলেন, হাঁসখালিতে লজ্জাজনক ধর্ষণ ও নাবালিকা মৃত্যু নিয়ে ফৌজদারি তদন্তে দাগ লেগেছে। যাঁরা দায়িত্বে আছেন এবং সাংবিধানিক পদ অলঙ্কৃত করছেন, তাঁরাই সিদ্ধান্ত নিয়ে নিচ্ছেন। এই বেআইনি মনোভাব স্বচ্ছ ও স্বাধীন তদন্তকে বিপথগামী করে। কারণ পুলিশও এই পথই অনুসরণ করে।


এদিকে রাজ্যপালের ট্যুইটের পাল্টা বিজেপি মুখপাত্র শমীক ভট্টাচার্য ট্যুইট করেন। লেখেন, আর ট্যুইট দেখতে চাইছে না বাংলার মানুষ, চাইছে কিছু করুন। মানুষ রাজ্যপালের দিকে তাকিয়ে, তিনি সংবিধানের রক্ষাকর্তা। মানুষ আর মতামত শুনতে চাইছে না, চাইছে কিছু করুন।


নদিয়ার হাঁসখালিতে ভয়ঙ্কর ঘটনা। জন্মদিনের পার্টিতে ডেকে মাদক খাইয়ে নবম শ্রেণির ছাত্রীকে গণধর্ষণ ও খুনের অভিযোগে উত্তাল বাংলা। ধৃত তৃণমূলের পঞ্চায়েত সদস্যের ছেলে। নির্যাতিতার পরিবারের দাবি, সোমবার ওই যুবকের (মূল অভিযুক্ত) আমন্ত্রণে জন্মদিনের পার্টিতে তাদের বাড়িতে যায় ওই নাবালিকা। সেখানেই তাকে ধর্ষণ করা হয় বলে অভিযোগ। পরিবারের দাবি, এরপর এক অপরিচিত মহিলা নাবালিকাকে বাড়িতে দিয়ে যায়।


ঘটনার বেশ কিছু দিন পরে পুলিশে অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে বলেই তথ্য সামনে আসে। পাশাপাশি নাবালিকার মৃত্যুর পর ময়নাতদন্তের আগেই ডেথ সার্টিফিকেট ছাড়াই দেহ পুড়িয়ে দেওয়ার মতোও মারাত্মক অভিযোগ উঠেছে। যে ঘটনায় গ্রেফতার হয়েছেন স্থানীয় তৃণমূল নেতার ছেলে। গণধর্ষণ ও খুনের মামলা রুজু হয়েছে। ধৃতের ১৪ দিনের পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। 


এনিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘ঘটনাটি দুর্ভাগ্যজনক। কিন্তু লাভ অ্যাফেয়ার্স ছিল কিনা, দেখতে হবে। শুনেছি দু’জনের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক ছিল।’ পাশাপাশি ঘটনায় রাজ্যের শাসক দল জড়িয়ে যাওয়া প্রসঙ্গে তোপ দেগে তৃণমূল সুপ্রিমোর সংযোজন, ‘তৃণমূলকে টানার কী দরকার? সবাই তো তৃণমূল। ছেলেটার বাবা তৃণমূল করে তো কি হয়েছে, রং না দেখে গ্রেফতার হয়েছে।’ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সংযোজন, 'ঘটনাটা খারাপ, কিন্তু গ্রেফতার হয়েছে। কিন্তু প্রথমেই কেন থানায় রিপোর্ট করা হয়নি? না জানিয়ে পুড়িয়ে দেওয়া হল কেন? শিশু সুরক্ষা অধিকার কমিশনকে মামলাটি দেখতে বলব, তদন্তের পরে কেসটা কি ছিল, সেটা আমরা জানাব।'


এদিকে সোমবার রানাঘাট মহকুমা আদালতে মৃতার মা-বাবা, হাতুড়ে ও শ্মশানের অস্থায়ী কর্মীর গোপন জবানবন্দি নেওয়া হয়। ঘটনার পর থেকেই পলাতক অভিযুক্তের বাবা তৃণমূলের পঞ্চায়েত সদস্য। ধৃতকে ১৪ দিনের পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছে আদালত। এদিকে হাঁসখালির ঘটনায় কলকাতা হাইকোর্টে দুটি জনস্বার্থ মামলা হয়েছে। তার মধ্যে একটি মামলা করেছে বিজেপি। এ প্রসঙ্গে প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী বলেন, হাঁসখালির ঘটনা আর উত্তরপ্রদেশের হাথরসের ঘটনা যখন সামনে আসছে তখন এই বাংলার অধঃপতনের ছবিটা আপনাদের সামনে স্পষ্ট হচ্ছে।