সুজিত মণ্ডল, নদিয়া: রক্ষকই ভক্ষক ? রাজ্যজুড়ে একের পর এক নারী নির্যাতিনের ঘটনা যখন উঠে আসছে, ঠিক তখনই প্রকাশ্যে এল বিস্ফোরক অভিযোগ। যারা আছেন বলে, নির্ভয়ে সন্তানকে ছেড়ে বাড়িতে থাকেন মা-বাবা, আর এবার সেখানেই উঠল অভিযোগের আঙুল । মহিলা পুলিশ কর্মীকে শ্লীলতাহানির অভিযোগে গ্রেফতার পুলিশ অফিসার !
নদিয়ার কৃষ্ণনগর জেলা পুলিশের ডিআইবি পদে কর্মরত অভিযুক্ত পুলিশ অফিসার। নদিয়ার রাণাঘাট পুলিশ জেলার চাকদা থানার পুলিশ গতকাল রাতে চাকদা এলাকা থেকে অনিমেষ দাস নামে পুলিশ অফিসারকে গ্রেফতার করে। অভিযোগ, গতকাল দুপুরে অভিযোগকারী মহিলা কনস্টেবলকে রাস্তার মধ্যেই শ্লীলতাহানি করছিল। খবর যায় চাকদা থানার পুলিশের কাছে। ঘটনাস্থল থেকে আটক করে অনিমেষ দাসকে। তারপর জিজ্ঞাসাবাদ ও অভিযোগের পর গ্রেফতার করা হয়। পুলিশ সূত্রে খবর, ২১ জানুয়ারি একই ঘটনায় নবদ্বীপ থানাতেও একটি অভিযোগ করে ওই মহিলা কনস্টেবল। ধৃতের বিরুদ্ধে শ্লীলতাহানি, বেআইনি ভাবে আটক, মারধর, ভয় দেখানো-সহ একাধিক ধারায় মামলা করে পুলিশ। ধৃত পুলিশ অফিসারকে কল্যাণী আদালতে পাঠানো হয়।
গত বছর অক্টোবার মাসে তখন আরজিকর কাণ্ডে সরব সারা বাংলা তথা দেশ। ঠিক তেমনই এক মুহূর্তে পার্ক স্ট্রিট থানার রেস্ট রুমে একজন মহিলা সিভিক ভলান্টিয়ারের শ্লীলতাহানি করার অভিযোগ উঠেছিল। কাঠগড়ায় উঠেছিলেন ওই থানাতেই কর্মরত একজন সাব ইন্সপেক্টর ! এই বিষয়ে কলকাতা পুলিশ কমিশনার, জয়েন্ট সিপি ক্রাইম, ডিসি সাউথ ও পার্ক স্ট্রিট থানার ওসির কাছে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেচিলেন নির্যাতিতা সিভিক ভলান্টিয়ার। তারপরই অভিযুক্ত এসআইকে সাসপেন্ড করা হয়েছিল বলে জানিয়েছিলেন কলকাতার পুলিশ কমিশনার মনোজ বর্মা।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছিল, ২০১৭ সালে পার্ক স্ট্রিট থানায় সিভিক ভলান্টিয়ার পদে যোগ দিয়েছিলেন ওই মহিলা। তারপর থেকে সেখানেই কর্মরত ছিলেন তিনি। গত বছর ৪ অক্টোবর রাতে ডিউটি জয়েন করার পর, রাত ১ টা ১০ মিনিটে থানার তিন তলার রেস্ট রুমে ওই সিভিক ভলান্টিয়ারকে ডেকে পাঠিয়েছিলেন অভিযুক্ত SI। তারপর দিয়েছিলেন পুজোর পোশাক । এদিকে পোশাক দেওয়ার পর অভিযুক্ত এসআই ওই সিভিক ভলান্টিয়ারের শ্লীলতাহানি করেছিলেন বলে অভিযোগ। আরও অভিযোগ, ওই ঘটনার সময় অভিযুক্ত মত্ত অবস্থায় ছিলেন অভিযুক্ত SI.
আরও পড়ুন, চলন্ত ট্রেন থেকে ৪ মাসের অন্তঃসত্ত্বাকে ফেলে দেওয়া হল নিচে ! 'যৌন নির্যাতন' ইন্টারসিটি এক্সপ্রেসে..
এখানেই শেষ নয়, শ্লীলতাহানির ঘটনার পর নিচে নেমে এসে পার্ক স্ট্রিট থানার সেই সময়ে ডিউটি অফিসারের দায়িত্বে থাকা পুলিশ আধিকারিককে অভিযোগ জানিয়েওছিলেন। কিন্তু সেই অভিযোগ জানাতে গেলে তিনি সেটা নিতে অস্বীকার করেছিলেন বলে অভিযোগ। এমনকী বিষয়টি মিটিয়ে নেওয়ারও পরামর্শ দিয়েছিলেন তিনি। তবে রাজি হননি নির্যাতিতা। হার মানেননি অন্যায়ের সামনে। নিজের মামাকে ফোনে না পেয়ে, মামার এক বন্ধুকে ফোন করে সমস্ত ঘটনা জানিয়েছিলেন । এর পরে স্পিড পোস্টের মাধ্যমে কলকাতার পুলিশ কমিশনার, জয়েন্ট সিপি ক্রাইম, ডিসি সাউথের কাছে অভিযোগ জানিয়েছিলেন নির্যাতিতা। এরপরই আর পদক্ষেপ দেরি করেনি প্রশাসন। অভিযুক্তকে এসআইকে সাসপেন্ড করা হয়েছিল বলে জানা গিয়েছে।