প্রদ্যুৎ সরকার, নদিয়া : কৃষ্ণনগর জেলা পার্টি অফিসের সামনে বসল তৃণমূলের কমপ্লেন বক্স। দলীয় নিচুতলার কর্মীরা যাতে দল সম্পর্কে নির্ভয়ে অভিযোগ জানাতে পারেন, তার জন্যই এমন উদ্যোগ। কর্মীরা নাম গোপন রেখেও অভিযোগ জানাতে পারবেন এখানে। নিচুতলার কর্মীদের জন্য এই বিশেষ উদ্যোগ নিলেন নদিয়া জেলা কৃষ্ণনগর সাংগঠনিক জেলার তৃণমূল কংগ্রেসের নতুন সভাপতি জয়ন্ত সাহা। শুধু তাই নয়, সেই কমপ্লেন বক্সে জমা পড়া অভিযোগ নিয়ম করে খতিয়েও দেখছেন তিনি। জানা যাচ্ছে এমনটাই। যদিও এ নিয়ে কটাক্ষ করতে ছাড়েনি বিজেপি।


প্রসঙ্গে নতুন জেলা সভাপতি জয়ন্ত সাহা বলছেন, 'গত ১৬ অগাস্ট মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় আমাকে যে দায়িত্ব দিয়েছেন, আমি সেই দায়িত্ব পালন করার চেষ্টা করছি মাত্র। চেষ্টা করছি গ্রাসরুট থেকে নেতৃত্ব তুলে নিয়ে আসতে। মাননীয়া মুখ্যমন্ত্রী দুর্নীতিশূন্য় দল চান। তার জন্য দলের সমস্যাগুয়ো বোঝা দরকার। তাই আমি যেমন মানুষের সঙ্গে কথা বলছি। তেমন মানুষও আমাকে কথা বলার সুযোগ করে দিচ্ছেন। এমন অনেক ব্যাপারই রয়েছে, যা কর্মীরা কিংবা সাধারণ মানুষ সামনে এসে সরাসরি বলতে পারেন না। সেজন্য নাম ও পরিচয় গোপন রেখে যাতে তাঁরা অভিযোগ জানাতে পারেন, তার ব্যবস্থাও রয়েছে। এখানে মানুষ নিজেদের মনের কথা বলার সুযোগ পাবেন।'


তিনি আরও বলছেন, 'যেকোনও নেতা কিংবা কর্মীদের বিরুদ্ধে এমনকি আমার বিরুদ্ধেও যদি কারও কোনও অভিযোগ থাকে, তাহলে যাতে যে কেউ এখানে নির্দ্বিধায় অভিযোগ জানাতে পারেন, সেইজন্যই এই ব্যবস্থা নেওয়া। আমি আমার উর্ধ্বতন রাজ্য নেতৃত্বের কাছে তা পাঠিয়েও দেবো।' যদিও শাসকদলের এই পদক্ষেপ নিয়ে কটাক্ষ করতে ছাড়েনি বিজেপি। বিজেপির নদিয়া জেলা উত্তরের মুখপাত্র সন্দীপ মজুমদার বলেছেন, 'তৃণমূল কংগ্রেসের উপর থেকে নিচেরতলা পর্যন্ত সবাই দুর্নীতিগ্রস্থ। এই কমপ্লেন বক্স আসলে মানুষের চোখে ধুলো দেওয়ার জন্য। এর আগেও রাজ্য সরকার 'দিদিকে বলো' কর্মসূচী নিয়েছিল। সেখানে অনেক সাধারণ মানুষ তৃণমূলের নেতাদের সম্পর্কে অভিযোগ জানিয়েছিলেন। পরে দেখা গিয়েছিল, যাঁরা অভিযোগ জানিয়েছিলেন, তাঁদের একঘরে করে রাখা হয়েছে। এমনকি মারধরও করা হয়েছে। এই কমপ্লেন বক্স আসলে মানুষকে ধোঁকা দেওয়া জন্য।'


জেলা সভাপতির এই পদক্ষেপে খুশি নিচুতলার কর্মীরা। তৃণমূলের এক সাধারণ কর্মী জানান, 'আমরা নিচুতলার কর্মীরা দীর্ঘদিন ধরে দলটা করি। কিন্তু অনেক সময়ই দেখা গিয়েছে উঁচুতলার কর্মীদের আমাদের অভাব অভিযোগ জানানোর কোনও ব্যবস্থা নেই। বর্তমান সভাপতি যে ব্যবস্থা গ্রহণ করেছেন, তাতে আমরা খুশি। এই পদক্ষেপকে আমরা সাধুবাদ জানাচ্ছি।'