সুজিত মণ্ডল, শান্তিপুর: ফুল চুরির অভিযোগে কান ধরে ওঠবোস করানো হল মহিলাকে। সেই অপমান সইতে না পেরে আত্মহত্যা করলেন এক মহিলা। প্রতিবেশীই ওই মহিলাকে ফুল চুরির অপবাদ দেন এবং তার জেরে চরম হেনস্থা করেন বলে অভিযোগ। শেষে বাড়ি থেকে ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার হয় মহিলার। অপমানে তিনি আত্মঘাতী হয়েছেন বলে দাবি পরিবারের। শান্তিপুর থানায় এ নিয়ে অভিযোগ দায়ের হয়েছে। (Shantipur News) 

শান্তিপুরের হরিপুরে এই ঘটনা ঘটেছে। গোটা ঘটনায় স্তম্ভিত মহিলার পরিবার। অভিযুক্ত প্রতিবেশীর কঠোর শাস্তির দাবি তুলেছেন তাঁরা। মৃতদেহ আঁকড়ে পড়ে মহিলার মেয়ে কাঁদতে কাঁদতেই বলেন, "আমি চাই এর বিচার হোক। কেন করল? দু'টো ফুলের জন্য কেন করল এমন? দু'টো ফুলের জন্য? আমি বলব, আমার মায়ের সঙ্গে কী করেছে।" (Shantipur Flower Theft)

নির্যাতিতার পরিবারের দাবি, না বলে অন্যের গাছ থেকে ফুল তুলেছিলেন মহিলা। তার জন্য়ই কান ধরে ওঠবোস করানো হয় সকলের সামনে। চরম হেনস্থা করা হয় মহিলাকে। অপমান সহ্য করতে না পেরেই তিনি গলায় দড়ি দেন বলে অভিযোগ তাঁদের। ফুল তুলতে গেলে ওই মহিলাকে 'চোর', 'চোর' বলে ধাওয়া করা হয়। কোনও রকমে অন্য একটি বাড়িতে আশ্রয় নেন। কিন্তু সেখান থেকে ধরে নিয়ে গিয়ে আটকে রাখা হয় তাঁকে। শেষ পর্যন্ত কান ধরে ওঠবোস করিয়ে বাড়ি যেতে দেওয়া হয়। শুক্রবার এই ঘটনা ঘটে। শনিবার সকালে মহিলার ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার হয় বাড়ির বারান্দা থেকে।

অভিযুক্ত প্রতিবেশী মহিলা যদিও দাবি করেছেন, তিনি তেমন কিছুই বলেননি। ওই মহিলার বক্তব্য, "আমাদের বাড়িতে এসেছিল। ৪টের সময় দরজা খুলে দেখি ফুল তুলছিল। কোনও দিন কিছুই বলিনি। ওখানে সবাই ছিল। ওখানে সবাই ছিল। এক-একজন এক-এক কথা বলছিল যে, 'কী করছো? এমন করবে না, এত রাতে তুলবে না'। আমি গিয়ে জিজ্ঞেস করলাম, চলে গিয়েছে? বলল, হ্যাঁ চলে গিয়েছে, কান ধরে চলে গিয়েছে। আমি জিজ্ঞেস করলাম, ও নিজে থেকে কান ধরেছে? বলল, হ্যাঁ, নিজে থেকেই কান ধরে চলে গিয়েছে।"

আত্মঘাতী মহিলার পরিবার যে অভিযোগ তুলছেন, তা নিয়ে প্রতিবেশী মহিলা বলেন, "আরও পাঁচটা লোক আছে। সবার কাছে নিয়ে যেতে পারি আপনাদের।" তাহলে কি তাঁরা কান ধরাননি? ওই মহিলা বলেন, "না, না, না।" কিন্তু মৃত মহিলার পরিবার যে কান ধরে ওঠবোস করানোর কথা বলছেন? প্রতিবেশী মহিলার দাবি, "একদম মিথ্যে কথা।" এই ঘটনায় পুলিশ জানিয়েছে, তদন্ত শুরু হয়েছে। লিখিত অভিযোগ দায়ের হয়েছে থানায়। ওই গ্রামেও গিয়েছিলেন পুলিশের আধিকারিকরা।