কলকাতা: প্রথমে শ্বাসরোধ করে খুন। তারপর মৃতদেহ ফেলে দেওয়া হয় জলে। নদিয়ার তেহট্টে বালক খুনের ঘটনায় ময়নাতদন্তের প্রাথমিক রিপোর্টে এমনই তথ্য উঠে এসেছে বলে পুলিশ সূত্রে খবর। কিন্তু প্রশ্ন হল, কী কারণে খুন? মাত্র ৮ বছরের বালকের ওপর কার এত রোষ?
পরিবারের দাবি, শুক্রবার দুপুরে খেলতে বেরিয়েছিল সে। তারপর থেকে আর কোনও খোঁজ নেই। তেহট্ট থানায় অপহরণের অভিযোগ জানায় স্বর্ণাভর পরিবার। এরই মধ্যে শনিবার ভোরবেলা, বাড়ির পাশের ডোবা থেকে উদ্ধার হয় বালকের ত্রিপল জড়ানো দেহ।
এদিকে এই খুনের ঘটনায় জড়িত সন্দেহে প্রতিবেশি দম্পতিকে পিটিয়ে খুন করেছে গ্রামবাসীরা। ঘটনাস্থলে এখনও পড়ে রয়েছে বাঁশ, লাঠির টুকরো! সূত্রের খবর, উৎপল মণ্ডল নামে ওই ব্যক্তির বিরুদ্ধে আগেও শিশু চুরির অভিযোগ রয়েছে। বালকের হত্যাকারী সন্দেহে শুধু যে দম্পতিকে পিটিয়ে খুন করা হয়েছে, তা-ই নয়... মারধরে গুরুতর অসুস্থ তাঁদের এক আত্মীয়ও। সংজ্ঞাহীন অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন তিনি।
মনোরোগ বিশেষজ্ঞ অমিতকুমার ভট্টাচার্য বলেন, 'এটাকে বলা হয় Mob Psychology। একজনের কথা অনুরণিত হয়ে ধীরে ধীরে তা বহুজনের মনে নেতিবাচকভাবে প্রভাব ফেলছে এমন ঘটনা ঘটছে। এই বিষয়টি এখনই সামাল দিতে না পারলে আগামী দিনে ভয়ঙ্কর হয়ে উঠতে পারে। একটা সময় হাতের বাইরে চলে যেতে পারে।'
পুলিশ সূত্রে খবর, ময়নাতদন্তের প্রাথমিক রিপোর্ট বলছে, খুন করা হয়েছে ছোট্ট স্বর্ণাভকে। গলায় কিছু পেঁচিয়ে শ্বাসরোধ করে খুন করা হয়েছে। খুনের পর ডোবায় ফেলে দেওয়া হয় মৃতদেহ। প্রশ্ন হচ্ছে, কী কারণে এমন নৃশংসভাবে খুন? এইটুকু বালকের ওপর এত আক্রোশ কেন? কে বা কারা এমন মারাত্মকভাবে খুন করল তৃতীয় শ্রেণির ছাত্রকে?
মনোবিদ বহ্নিশিখা ভট্টাচার্য বলেন, 'হিংসা এবং প্রতিহিংসা। এই দুয়ের জন্যই মানুষ এত অসহিষ্ণু হয়ে যাচ্ছে। নিজের স্বার্থপূরণের জন্যই এসব কিছু করে ফেলছে। এতটাই একমুখী ভাবনা যে বয়সটা দেখছে না। আট হোক আশি হোক সকলের প্রতি আক্রোশটা একই হয়ে যাচ্ছে। যেটা চাইছে, না পেলে... না পাওয়াটা তীব্র হয়ে উঠছে।'