বিটন চক্রবর্তী, নন্দীগ্রাম: তৃণমূল ছাত্র পরিষদের ( TMCP ) আহ্বায়ক হিসেবে নাম নন্দীগ্রাম ( Nandigram ) থানার সিভিক ভলান্টিয়ারের! তালিকা প্রকাশ্যে আসতেই ফের বিতর্ক! উনি চাকরি ছেড়ে দিয়েছেন, সাফাই টিএমসিপি-র জেলা সভাপতির। যদিও চাকরি ছাড়া নিয়ে কোনও তথ্য দিতে পারেনি নন্দীগ্রাম থানা!
সিভিক ভলান্টিয়ার কীভাবে একটি রাজনৈতিক দলের ছাত্র সংগঠনের আহ্বায়ক ?
এ যেন একই অঙ্গে বহু রূপ। একাধারে তিনি নন্দীগ্রাম থানার সিভিক ভলান্টিয়ার! আবার তিনিই তৃণমূল ছাত্র পরিষদের আহ্বায়ক! শাসকদলের ছাত্র সংগঠনের পদে সিভিক ভলান্টিয়ারের থাকা নিয়ে ফের শুরু হল বিতর্ক! ২৮ জুলাই, প্রতিষ্ঠা দিবস উপলক্ষ্যে একটি নির্দেশিকা জারি করেছে TMCP। তাতে জেলার বেশ কয়েকটি ব্লক ও টাউনে আহ্বায়ক বা কনভেনারের নাম ঘোষণা করা হয়েছে। সেখানে নন্দীগ্রাম এক নম্বর ব্লকে আহ্বায়ক হিসেবে দু'জনের নাম রয়েছে।
শেখ আসিফ ইকবাল কাজি এবং মোশারফ হোসেন। এই শেখ আসিফ ইকবাল কাজিই হলেন নন্দীগ্রাম থানার সিভিক ভলান্টিয়ার। কিন্তু, একজন সিভিক ভলান্টিয়ার কীভাবে একটি রাজনৈতিক দলের ছাত্র সংগঠনের আহ্বায়ক হতে পারেন? এই প্রশ্নে কোনও প্রতিক্রিয়া দিতে চাননি আসিফ ইকবাল কাজি।
এবিভিপি, নন্দীগ্রাম নগর ইউনিটের সভাপতি সায়ন পণ্ডা বললেন, ' 'যে সিভিক ভলান্টিয়ার প্রশাসনিক কাজের সঙ্গে যুক্ত, সেই হয়েছে তৃণমূল ছাত্র পরিষদের কনভেনার। ওদের যে সভাপতি আছে ৪০-৪৫ বছর বয়সের উপরে। এদের কোনওকিছুই নেই। ন্যয়, নীতি আদর্শ সব ধূলিস্যাৎ হয়ে গেছে। মানুষ ওদের থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে'
কী বলছে TMC ?
এই তরজার মধ্যেই বিতর্ক তৈরি হয়েছে তৃণমূল ছাত্রপরিষদের জেলা সভাপতির মন্তব্য নিয়ে! তাঁর দাবি, একসময় নন্দীগ্রাম থানার সিভিক ভলান্টিয়ার পদে থাকলেও, বর্তমানে চাকরি ছেড়ে দিয়েছেন আসিফ ইকবাল কাজি।
কিন্তু, নন্দীগ্রাম থানা সূত্রে খবর, আসিফ চাকরি ছেড়ে দিয়েছে, এমন তথ্য তাঁদের কাছে নেই।
TMCP, তমলুক সাংগঠনিক জেলার সভাপতি, প্রসেনজিৎ দে বলেন, ' সিভিক ভলান্টিয়ারের কাজ করত। কিন্তু চাকরি ছেড়ে দিয়েছে। চাকরি ছেড়ে দিয়ে কেউ যদি দল করতে আসে, তাঁকে দলে সুযোগ দিতেই হবে। সে চাকরি করত, চাকরি ছেড়ে দিয়েছে। বিরোধীদের কাছে নিশ্চয়ই সেরকম তথ্য নেই যে, সে চাকরিটা ছেড়ে দিয়েছে। তাহলে রিজাইন লেটারটা যেটা অ্যাকসেপ্ট করেছে, সেটা দেখিয়ে দিলেই হয়। সে লেটার সবই আমার কাছে আছে।'
চাকরি ছাড়ার প্রামাণ্য নথিও দেখাতে পারেননি তৃণমূল ছাত্র পরিষদের জেলা সভাপতি। এর আগে এই ঘটনা ঘটেছিল পূর্ব বর্ধমানের। যেখানে জেলার যুব তৃণমূলের সম্পাদক হিসেবে নাম ছিল কালনা থানায় কর্মরত গ্রামীণ পুলিশকর্মী সৌভিক ঘোষের। সিভিক ভলান্টিয়ার সঞ্জয় ঘোষের নাম ছিল বৈদ্যপুরের যুব তৃণমূল সভাপতি হিসেবে। এবার তারই কার্যত পুনরাবৃত্তি ঘটল পূর্ব মেদিনীপুরেও!