রঞ্জিত হালদার ও হিন্দোল দে, দক্ষিণ ২৪ পরগনা: এবার নরেন্দ্রপুরে পুলিশ হেফাজতে এক ব্যক্তিকে পিটিয়ে মারার অভিযোগ উঠল। এমনকী পুলিশের বিরুদ্ধে ঘুষ চাওয়ারও অভিযোগ তুলেছে পরিবার। পুলিশ সুপারের কাছে নরেন্দ্রপুর থানার তদন্তকারী অফিসার অর্ণব চক্রবর্তীর বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেছে পরিবার। পুলিশ সূত্রে খবর, টাকা নেওয়া ও পিটিয়ে মারার অভিযোগের ভিত্তিতে বিভাগীয় তদন্ত করা হবে।
গল্ফগ্রিনের পর এবার নরেন্দ্রপুর। ফের পুলিশি হেফাজতে থাকাকালীন বন্দির মৃত্যু! পুলিশি অত্যাচারের অভিযোগ মৃতের পরিবারের। পুলিশের বিরুদ্ধে ঘুষ চাওয়ারও অভিযোগ তুলেছেন তাঁরা। মৃতের নাম সুরজিৎ সর্দার(৩২)। বাড়ি গড়িয়ায়।
পরিবারের দাবি, সুরজিতকে ১৩ এপ্রিল দুপুরে বাড়ির সামনে থেকে তুলে নিয়ে যায় পুলিশ। অভিযোগ, তাঁর মুক্তির জন্য তাঁদের কাছে টাকা চাওয়া হয়। পরিবারের দাবি, ২ দফায় ২০ হাজার টাকা দেওয়ার পরও আরও টাকা দাবি করা হয়। দাবি মতো টাকা দিতে না পারার ফলেই সুরজিৎতে মিটিয়ে মারা হয় বলে অভিযোগ।
মৃতের দাদা সুব্রত সর্দারের কথায়, টাকা চাওয়া হয় ৷ দু দফায় মোট ২০ হাজার টাকা দিয়েছি ৷ আরও টাকা চাওয়া হয়েছিল ।না দিলে ব্যবস্থা করা হবে। পিটিয়ে মেরে ফেলা হয়েছে ভাইকে।অভিযোগ অস্বীকার করে পুলিশ সূত্রে খবর, সুরজিতের বিরুদ্ধে সম্প্রতি চুরির মামলা দায়ের হয়। সেই অভিযোগেই তাঁকে গ্রেফতার করা হয়। আগেও একাধিক অভিযোগে গ্রেফতার করা হয় তাঁকে।২০ এপ্রিল থানা লকআপে অসুস্থ বোধ করেন সুরজিৎ। প্রথমে সোনারপুর হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়।
অবস্থার অবনতি হওয়ায় তাঁকে এমআর বাঙুর হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়। সেখানেই শুক্রবার মৃত্যু হয়। যদিও পুলিশের এই দাবি মানতে নারাজ মৃতের পরিবার। ঘটনায় পুলিশ সুপারের কাছে নরেন্দ্রপুর থানার তদন্তকারী অফিসারের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেছে পরিবার।
মৃতের পরিবারের পাশে দাঁড়িয়েছে কংগ্রেস। সিবিআই তদন্তের দাবিও জানিয়েছে তারা। প্রদেশ কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক আশুতোষ চট্টোপাধ্যায় বলছেন, নরেন্দ্রপুর থানা অন্যায়ের প্রাতিষ্ঠানিক রূপ ধারণ করেছে ৷ এই ঘটনার ন্যায্য বিচার পেতে প্রয়োজনে তারা উচ্চ আদালতের দারস্থ হবেন ৷ এমনকি সিবিআই তদন্তও চাওয়া হবে।
বারুইপুর পুলিশ জেলা সূত্রে খবর, মৃতের শরীরে আঘাতের চিহ্ন নেই। টাকা নেওয়া ও পিটিয়ে মারার অভিযোগের ভিত্তিতে বিভাগীয় তদন্ত করা হবে। ময়নাতদন্ত রিপোর্ট এলেই মৃত্যুর কারণ স্পষ্ট হবে। গত বছর অগাস্ট মাসে গল্ফগ্রিনে থানায় পুলিশের মারে যুবকের মৃত্যুর অভিযোগ ওঠে। যা নিয়ে তোলপাড় হয় রাজ্য রাজনীতি। সাসপেন্ড করা হয় ২ পুলিশকর্মীকে, এক সিভিক ভলান্টিয়ারকে গ্রেফতার করা হয়। এবার পুলিশ হেফাজতে মৃত্যুর অভিযোগ উঠল নরেন্দ্রপুরে।