আশাবুল হোসেন, উজ্জ্বল মুখোপাধ্যায়, দীপক ঘোষ, কলকাতা : কারাগারে বন্দিদের দৈনিক খাবারের জন্য় কত টাকা বরাদ্দ? এছাড়া তাঁদের থাকা ও চিকিৎসার জন্য় কত টাকা বরাদ্দ করে রাজ্য় সরকার? এই নিয়েই বিধানসভায় তুঙ্গে উঠল তরজা। সম্মুখ সমরে কারামন্ত্রী ও একদা জেলবন্দি বিধায়ক। জেলের খাবারের মান নিয়ে, বিধানসভায় তরজায় জড়ালেন কারামন্ত্রী অখিল গিরি ( Akhil Giri )ও ISF বিধায়ক নৌশাদ সিদ্দিকি  (Nawsad Siddique Explosive Statement )। কত পরিমান এবং কী খাবার দেওয়া হয়, সেই তথ্য দিয়ে জেলের খাবারের মান ভাল এই দাবি করেন অখিল গিরি। যদিও, সেই দাবি নস্যাৎ করেছেন নৌশাদ সিদ্দিকি। আইএসএফ বিধায়কের দাবি, ডাল এত পাতলা ডালের দানা খুঁজতে গামছা পরে ডালের দানা খুঁজতে গামছা পরে নামতে হবে ডালের বাটিতে ! 


 জেলের খাবার কেমন হয়, তা নিয়েই মঙ্গলবার বিধানসভায় বাঁধল তুমুল তরজা।  বিধানসভা অধিবেশনের দ্বিতীয় দিনে, জেলের খাবারের মান নিয়ে প্রশ্ন তোলেন ISF বিধায়ক নৌশাদ সিদ্দিকি। তিনি জানতে চান, কারাগারে বন্দিদের দৈনিক খাবারের জন্য় কত টাকা বরাদ্দ? এছাড়া তাঁদের থাকা ও চিকিৎসার জন্য় কত টাকা বরাদ্দ করে রাজ্য় সরকার?


উত্তরে কারামন্ত্রী অখিল গিরি জানান,  বন্দি পিছু প্রতিদিনের খাওয়া বাবদ বরাদ্দ ৫২ টাকা ৫৪ পয়সা। এক-একজনের খাদ্য তালিকায় প্রতিদিন ২৫০ গ্রাম চাল, ১০০ গ্রাম ডাল, ৩০০ গ্রাম সবজি, তার সঙ্গে ১০০ গ্রাম আলু যুক্ত থাকে। সপ্তাহে একদিন করে ৭৫ গ্রাম মাছ, ৭৫ গ্রাম মাংস, সপ্তাহে ১দিন ডিম, ২৫ গ্রাম সয়াবিন দেওয়া হয়। বিকেলে ৪টি বিসকুট ও চা দেওয়া হয়। এছাড়া, টিফিনে মুড়ির সাথে বাদাম ও ডাল ভাজা দেওয়া হয়। রামিষভোজী বন্দি পিছু জন্য বরাদ্দ রয়েছে ২৫০ মিলিলিটার দুধ। 


কিন্তু একসময় জেলবন্দি থাকা নৌশাদ দাবি করেন,' জেলের খাবার মুখে দেওয়া যায় না। সকালে একটু মুড়ি গুড় দেওয়া হতো। বলা হচ্ছে, আড়াইশো গ্রাম চালের ভাত দেওয়া হয়। কেউ আড়াইশো গ্রাম চালের ভাত পাননা। সবজিও খুবই নিম্নমানের। মন্ত্রীর দাবি ৭৫ গ্রাম মাছের পিস দেওয়া হয়। আসলে এত পাতলা মাছের পিস যে আমি ভাবতাম যে মাছ কাটছে তাঁর হাত কেটে যায় না ! 


গতবছরই ৪২ দিন জেলে বন্দি ছিলেন ভাঙড়ের বিধায়ক নৌশাদ সিদ্দিকি। তাই জেলের খাবার সম্পর্কে তাঁর সম্য়ক ধারণা আছে। তাই তিনি প্রশ্ন তুললেন, মাংসের পিস এত ছোট খুঁজে পাওয়া যায় না। ডাল এত পাতলা ডালের দানা খুঁজতে গামছা পরে ডালের দানা খুঁজতে গামছা পরে নামতে হবে ডালের বাটিতে। 


এই প্রসঙ্গে এবিপি আনন্দর তরফে অখিল গিরিকে ফোনে ধরা হলে কারামন্ত্রী বলেন, 'উনি ভাত-সবজি সব কিছু নিয়ে অভিযোগ করেননি। উনি মাছের সাইজ ও ডাল নিয়ে অভিযোগ করেছেন। ওঁর অভিযোগ খতিয়ে দেখা হবে' 


বিধানসভায় প্রসঙ্গ ওঠার পর, জেলের ভাতের মান পাল্টায় কি না, সেটাই আসল বিষয়।