সমীরণ পাল, গাইঘাটা(উত্তর ২৪ পরগনা) : ২০০ বছরের ইতিহাসের সাক্ষী বহন করে আজও উত্তর ২৪ পরগনার গাজিপুর গ্রামের ঘাট বাড়িতে পালিত হচ্ছে জন্মাষ্টমী উৎসব। এই বাড়ির জন্মাষ্টমীর পুজো ঘিরে রয়েছে জনশ্রুতি। এখানে কৃষ্ণ গোপীনাথ রূপে পূজিত হয়ে থাকেন।


উত্তর ২৪ পরগনার গাইঘাটার গাজিপুর গ্রামের সম্ভ্রান্ত কৃষক ছিলেন প্রতাপ মণ্ডল। কথিত আছে, ২০০ বছর আগে তিনি গোপীনাথ মন্দির প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। সেখানে কুঁড়েঘরের মন্দিরে গোপীনাথের মূর্তি প্রতিষ্ঠা হয়। বৈষ্ণব মতে পুজো হওয়ায় নবদ্বীপের বৈষ্ণব সেবাইত পুজোর আয়োজন ও ভোগ তৈরি করতেন। নিত্য পুজো হত সেই সময়। ৩০ বছর এই ভাবে চলার পর এক সেবাইত গোপীনাথের বিগ্রহ চুরি করে পালিয়ে যান বলে শোনা যায়। এর পর থেকে মন্দিরে নিত্য পুজো বন্ধ হয়ে যায়। বিগ্রহের হদিশ পাওয়া যায় নদিয়ার শান্তিপুরে। 


কিন্তু প্রতাপ মণ্ডল নিজে নারাজ ছিলেন সেই বিগ্রহ পুনঃপ্রতিষ্ঠা করতে। তখন তিনি কৃষ্ণের স্বপ্নাদেশ পান, বিগ্রহ না গোপীনাথের ছবিতেই পুজো করা যাবে। সেই থেকে ছবিতেই নিত্য পুজো এবং জন্মাষ্টমীর অনুষ্ঠান হচ্ছে এই মন্দিরে। এটা প্রতাপ মণ্ডলের পঞ্চম প্রজন্ম যারা জন্মাষ্টমীর অনুষ্ঠান করছে। এখানে তিনদিন ধরে জন্মাষ্টমী উৎসব হয়। প্রথম দিন অধিবাস। তার পর হয় অষ্টম প্রহর কীর্তন। শেষদিনে মালশা ভোগ দেওয়া হয়। 


প্রসঙ্গত, আজ জন্মাষ্টমী (Janmashtami)। গোটা দেশে প্রত্যেক বছর ধুমধাম করে পালিত হয় এই দিনটি। পুরাণ অনুযায়ী, এই দিনে দুষ্টের দমন এবং শিষ্টের পালনের জন্যই ভগবান শ্রী বিষ্ণুর মানুষরূপে মর্ত্যলোকে আবির্ভাব হয়। এদিন জন্মষ্টমী উপলক্ষে কলকাতার একাধিক পুজো মণ্ডপে খুঁটিপুজো হয়েছে। আজ খুঁটিপুজো করে একডালিয়া এভারগ্রিন। সন্তোষ মিত্র স্কোয়ারের পুজোর এবার ৮৬ বছর। জন্মাষ্টমীর দিন এখানেও খুঁটিপুজো হয়। উত্তর কলকাতার সিমলা বিবেকানন্দ স্পোর্টিং ক্লাবেও এদিন খুঁটিপুজো হয়। এছাড়াও অন্যান্য বিভিন্ন জায়গায় খুঁটিপুজো হয়েছে।