সমীরণ পাল, হাবরা (উত্তর ২৪ পরগনা) : যাদবপুরে ছাত্রমৃত্যুর (Jadavpur Student Death) ঘটনার রেশ এখনও কাটেনি। কসবার স্কুলে ছাত্রের মৃত্য়ুর কারণ ঘিরে এখনও ধোঁয়াশা। এরই মধ্যে এবার সুরেন্দ্রনাথ কলেজের প্রথম বর্ষের ছাত্রের মৃত্যু ঘিরে রহস্য দানা বেঁধেছে। উত্তর ২৪ পরগনা জেলার হাবরা (Habra) থানার উত্তর হাবরা এলাকার বাসিন্দা স্বাগত বণিকের ক্ষতবিক্ষত মৃতদেহ উদ্ধার হল পূর্ব মেদিনীপুরের ক্ষীরাইয়ে রেললাইনের পাশ থেকে। আর তার পর থেকেই উঠছে একাধিক প্রশ্ন। মঙ্গলবার রাতে মৃতদেহ ছাত্রের বাড়িতে আসতেই কান্নায় ভেঙে পড়েন আত্মীয় পরিজনেরা।


পরিবার সূত্রের খবর, হাবরা থেকে শিয়ালদার কলেজে প্রোজেক্ট আনতে যাওয়ার পর আর বাড়ি না ফেরায় খোঁজাখুঁজি শুরু হয় স্বাগতর। অবশেষে পুলিশ খবর দেয় পূর্ব মেদিনীপুরের ক্ষীরাইয়ে রেল লাইনের পাশ থেকে ক্ষতবিক্ষত মৃতদেহ উদ্ধার হয়েছে তাঁর। এই পরিস্থিতিতে পরিবারের লোকেরা মৃত্যুর সঠিক তদন্তের দাবি জানিয়েছেন।


এলাকায় মেধাবী ছাত্র বলে পরিচিত এই স্বাগত বণিক। তাঁর মৃত্যু ঘিরে উঠছে একাধিক প্রশ্ন। বাড়ি থেকে প্রায় ১১৮ কিলোমিটার দূরে তাঁর মৃতদেহ উদ্ধার ঘিরে পরিবার ও প্রতিবেশীরা তুলছেন একাধিক প্রশ্ন । 


কসবায় ছাত্র-মৃত্যু


এদিকে কসবার স্কুলে ছাত্রের মৃত্য়ুর কারণ ঘিরে এখনও ধোঁয়াশা রয়েছে। শেখ শানের মৃত্য়ু কীভাবে হয়েছে? উত্তর হাতড়াচ্ছে পুলিশ। এই ঘটনা ঘিরে মঙ্গলবার রাতে রণক্ষেত্রের চেহারা নেয় কসবা। ছাত্রমৃত্য়ুর প্রতিবাদে এবং অভিযুক্তদের গ্রেফতারির দাবিতে স্থানীয়দের বিক্ষোভের ঢেউ আছড়ে পড়ে রাস্তায়। পাঁচিল টপকে থানায় ঢুকে পড়েন বিক্ষোভকারীরা। দেহ নিয়ে আত্মীয় ও স্থানীয় বাসিন্দাদের বিক্ষোভ চলাকালীন পুলিশের সঙ্গেও তাদের ধস্তাধস্তি বাধে। রেলিং টপকে কসবা থানার মধ্যে ঢুকে পড়েন বিক্ষোভকারীরা।


লালবাজার সূত্রে খবর, শেখ শান আত্মঘাতী হয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে মনে করছেন ফরেন্সিক বিশেষজ্ঞরা। এনিয়েই মৃত ছাত্রের পরিবার ও  স্কুল কর্তৃপক্ষের মধ্যে চলছে বাগবিতণ্ডা। মৃতের পরিবারের দাবি, সোমবার প্রথমে স্কুল কর্তৃপক্ষের তরফে বাড়িতে ফোন করে জানানো হয়, সিঁড়ি থেকে পড়ে গিয়েছে শান ।


পরিবারের দাবি, পড়ে স্কুল কর্তৃপক্ষ জানায় ওপর থেকে ঝাঁপ দিয়েছে দশম শ্রেণির পড়ুয়া। মৃতের পরিবারের আরও দাবি, প্রোজেক্ট জমা দিতে না পারায় সহপাঠীদের সামনে কান ধরে দাঁড় করিয়ে দেওয়া হয় শেখ শানকে। অন্য আরেকজন পড়ুয়ার সঙ্গে তাঁকে ৫ তলায় নিয়ে যান শিক্ষিকারা। সহপাঠীকে নেমে যেতে বলা হলেও নামতে দেওয়া হয়নি শানকে। সূত্রের খবর, পুলিশকে ইমেল করে স্কুল কর্তৃপক্ষ দাবি করেছেন, শেখ শানকে অঙ্কের প্রোজেক্ট জমা দিতে বলা হয়। তার জন্য মৃত ছাত্র খারাপ ব্য়বহার করে। এরপর তাকে স্টাফরুমে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে ২ মিনিট দাঁড় করিয়ে রাখার পর ক্লাসে যেতে বলা হলেও সে যায়নি। একইসঙ্গে স্কুল কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে মৃত ছাত্রের বাবা চাঞ্চল্য়কর অভিযোগও এনেছেন।


সূত্রের খবর, ওপর থেকে পড়ে মৃত্য়ু হলেও ওই ছাত্রের শরীরের হাড় ভাঙেনি। তা কী করে সম্ভব? শুধু কান দিয়ে রক্ত বেরোল কেন? স্কুল থেকে ওই ছাত্রের বাড়ি ১ কিলোমিটার দূরে। সেখানে খবর দিতে স্কুলের ২ ঘণ্টা সময় লাগল কেন? স্কুলের কাছে একাধিক হাসপাতাল থাকা সত্ত্বেও ওই ছাত্রকে মুকুন্দপুরে নিয়ে যাওয়া হল কেন?


এই পরিস্থিতিতে মঙ্গলবার ঘটনার পুনর্নির্মাণ করা হয়।