সমীরণ পাল, ব্যারাকপুর : যত কাণ্ড যেন পঞ্চায়েতে বোর্ড গঠন ঘিরে ! এবার তৃণমূলের গোষ্ঠী কোন্দলে ভেস্তে গেল ব্যারাকপুর ব্লক-২ এর শিউলি গ্রাম পঞ্চায়েতের বোর্ড গঠন। এলেনই না তৃণমূলের ১৯ জন সদস্য। এই ঘটনায় যারপরনাই ক্ষুব্ধ দলীয় নেতৃত্ব। তাঁদের উপস্থিত না থাকার কারণ জানতে চেয়েছেন দলীয় নেতা তথা সেচমন্ত্রী পার্থ ভৌমিক।


শিউলি গ্রাম পঞ্চায়েতে ৩০টি আসন। এর মধ্যে ২৯ টি আসনে ভোট গ্রহণ হয়। একটি আসনে প্রার্থী মারা যাওয়ায় তাতে ভোট হয়নি। এর মধ্যে ২৪টি আসনে তৃণমূল, সিপিএমের ২ জন এবং বিজেপির ৩ জন জয়লাভ করেন। আজ বিজেপির প্রার্থীরা এলেও, তৃণমূলের ১৯ জন না আসায় কোরাম পাশ হয়নি। ফলে, ভেস্তে যায় শিউলি পঞ্চায়েতের নতুন বোর্ড গঠন। 


তৃণমূলের মনোনীত প্রধান সঞ্জীব ঘোষ জানান, দল তাঁকে ঠিক করেছে। তিনি প্রধান হবেন। কিন্তু, প্রাক্তন প্রধান অরুণ ঘোষ ১৯ জন নির্বাচিত সদস্যকে নিয়ে উধাও হয়ে গেছেন। তাঁকে দুপুর থেকে আর পাওয়া যাচ্ছে না !


এদিকে খবর পেয়ে ছুটে আসেন সেচমন্ত্রী পার্থ ভৌমিক। তিনি জানান, যাঁরা আসেননি তাঁদের কাছে না আসার কারণ জানতে চাওয়া হয়েছে। কেন তাঁরা আজ শপথ গ্রহণে আসেননি ? এরপর আলোচনা করে ঠিক হবে আবার কবে প্রধান এবং শপথ গ্রহণ হবে।


তবে BJP-র পঞ্চায়েত সদস্য পার্থ দ্বিবেদী জানান, আমরা তিন জন এসেই শপথ নিলাম। কিন্তু তৃণমূলের কাউকে দেখা যায়নি।


বোর্ড গঠনে শাসক-কোন্দল-


এদিকে উপপ্রধান কে হবেন ? তা নিয়ে গতকালই তৃণমূলের অন্দরে কোন্দল প্রকাশ্য়ে চলে আসে। রাজারহাটের বিষ্ণুপুর ২নম্বর গ্রাম পঞ্চায়েতে বোর্ড গঠন ঘিরে তৃণমূলের দু'পক্ষের মধ্যে হাতাহাতি পর্যন্ত হয়। বিক্ষোভকারীদের দাবি, একই এলাকা থেকে পঞ্চায়েতে প্রধান উপপ্রধান করা যাবে না। যদিও, তৃণমূল নেতৃত্ব সাফ জানিয়েছে, দলের সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত।


তৃণমূলের ২ পক্ষের সংঘর্ষ, ধাক্কাধাক্কি, হাতাহাতি, চেয়ার ভাঙচুর। বোর্ড গঠন ঘিরে, এভাবেই তুলকালাম বাধল রাজারহাটের বিষ্ণুপুর ২নম্বর গ্রাম পঞ্চায়েতে। এখানে ২৪টি আসনের মধ্যে তৃণমূল জিতেছে ১৭ টিতে। ৩টিতে জয়ী সিপিএম, বিজেপি পেয়েছে ২টি আসন, আইএসএফ জিতেছে ২টিতে। 


শুক্রবার এই পঞ্চায়েতে বোর্ড গঠনের কথা ছিল। কিন্তু, শীর্ষ নেতৃত্ব তৃণমূলের প্রধান হিসেবে অভিজিৎ নস্কর ও উপপ্রধান হিসেবে রূপা নস্করের নাম ঘোষণা করতেই বেঁকে বসে দলের অন্য ১৩ জন জয়ী প্রার্থী! তাঁদের দাবি, একই এলাকা থেকে প্রধান ও উপপ্রধান করা যাবে না। অন্য এলাকা থেকে কাউকে উপপ্রধান করা হোক। এই নিয়ে পঞ্চায়েত অফিসের শুরু হয় বিক্ষোভ। সেখানে তৃণমূলের আরেক পক্ষ পৌঁছতেই শুরু হয়ে যায় বচসা, হাতাহাতি।