বারাসাত : বারাসাতের কাজিপাড়ায় নাবালককে খুনের ঘটনায় নতুন তথ্য । 'ভাইপোকে খুনের পর নজর ঘোরাতে ছেলেধরা গুজব রটায় জেঠু। পুলিশকে বিভ্রান্ত করতে পরিকল্পনামাফিক ছেলেধরা গুজব ছড়ায় অভিযুক্ত।' এমনই দাবি করছে পুলিশ। পুলিশের আরও দাবি, পারিবারিক বিবাদের জেরে নাবালক ভাইপোকে খুন করার কথা জেরায় স্বীকার করেছে ধৃত ব্যক্তি।


বারাসাত পুলিশ জেলার পুলিশ সুপার প্রতীক্ষা ঝারখারিয়া বলেন, 'এদের পৈতৃক সম্পত্তির ওপর একটি গাছ আছে। তার সুপারি কে বিক্রি করবে, কে টাকা রাখবে তা নিয়ে এদের ঝগড়া হয়েছিল। সেই সময় এদের যে ছোট ছেলে ছিল সে একে মারতে যায়। সেটা ওর খুব গায়ে লাগে। মৃতের দেহ একটা কাপড় দিয়ে ঝোলানো ছিল। সেটা আগেই ৮ তারিখ থেকে এর ব্যাগে রাখা ছিল। ৯ তারিখে অন্ধকার একটা জায়গায় ছেলেটিকে ডেকে চড়ৃথাপ্পড় মারা হয়। গলা টিপে দেয়। এরপর পরিত্যক্ত বাড়িতে ঝুলিয়ে দেওয়া হয় দেহ। সোমবার থেকে অভিযুক্তের একটাই লক্ষ্য ছিল, কীভাবে পুলিশের নজর ঘোরানো যায়। বাচ্চা চুরির কথা অভিযুক্তই প্রথম ছড়িয়ে দেয়। তারপর এনিয়ে অনেক গুজব ছড়ানো হয়েছে।'


গত ১৩ জুন নিখোঁজ এক শিশুর দেহ উদ্ধার ঘিরে রণক্ষেত্রের চেহারা নেয় বারাসাতের কাজিপাড়া। পুলিশ সূত্রে দাবি করা হয়, এরপর থেকেই সোশাল মিডিয়ায় গুজব ছড়ানো হয়। এরমধ্যেই, বুধবার বারাসাতের কামাখ্য়া মন্দিরের কাছে একটি স্কুলের সামনে শিশুচুরির গুজব ওঠে। ছেলেধরা সন্দেহে এক মহিলাকে রাস্তায় ফেলে বেধড়ক মারধর করা হয়।আরও ২ জায়গায় ২ ব্যক্তিকে গণপিটুনি দেয় উত্তেজিত জনতা। 


গণপিটুনির ৩টি মামলায় আগেই ১৭ জনকে গ্রেফতার করে পুলিশ। সূত্রের খবর, জেরায় ধৃতরা জানান, বারাসাতের একটি ফেসবুক গ্রুপ থেকে তথ্য পেয়ে তারা বিভ্রান্ত হয়। তার ভিত্তিতেই গ্রুপের দুই অ্যাডমিনকে গ্রেফতার করে পুলিশ। গুজব ঠেকাতে পুলিশের তরফ থেকে লাগাতার প্রচার চালানো হয়। বৃহস্পতিবার, বারাসাত পুলিশ জেলার এসপি-র উপস্থিতিতে ঘোলা কাছারি রোডে লিফলেট বিলি করা হয়। অভিভাবকদের সঙ্গেও কথা বলেন পুলিশ সুপার। গুজব ঠেকাতে ফেসবুকেও প্রচার শুরু করেছে বারাসাত জেলা পুলিশ। 


যদিও ছেলেধরা সন্দেহে তারপরেও গণপিটুনির ঘটনা ঘটে চলেছে জেলার বিভিন্ন এলাকায়। বারাসাত, অশোকনগর, বনগাঁর পর গাইঘাটায়। ছেলেধরা সন্দেহে উত্তর ২৪ পরগনায় গণপিটুনি চলছেই। 


আপনার পছন্দের খবর আর আপডেট পাবেন আপনার পছন্দের চ্যাটিং প্ল্যাটফর্ম হোয়াটস অ্যাপেও। যুক্ত হোন ABP Ananda হোয়াটস অ্যাপ চ্যানেলে।